দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভারতে ক্রমশ ভয়াবহ চেহারা নিচ্ছে করোনা পরিস্থিতি। দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। দেশে করোনায় দৈনিক সংক্রমণ ফের চার লাখের গণ্ডি পার করল। বগ্লাহীন ভাবে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট বলছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে ৪ লাখ ১২ হাজার। একদিনে ফের সর্বাধিক মৃত্যুর রেকর্ড তৈরি হয়েছে দেশে। ভাইরাস সংক্রমণে দৈনিক মৃত্যু চার হাজারের গণ্ডি ছুঁতে চলেছে। একদিনে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৯৮০ জনের। একদিনে ভাইরাসকে হারিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ২৯ হাজার ১১৩ জন। মহারাষ্ট্র, গুজরাট, কর্নাটক, কেরল সহ ১২ রাজ্যে সংক্রমণের ভয়ঙ্কর ঢেউ আছড়ে পড়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ কোটি ১০ লাখ ৭৭ হাজার ৪১০। মোট সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ৭২ লাখ ৮০ হাজার ৮৪৪ জন। মোট মৃতের সংখ্যা ২৩ লাখ ১ হাডার ৬৮। এই মুহূর্তে দেশে অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ৩৫ লাখ ৬৬ হাজার ৩৯৮।

স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানাচ্ছে, অসম, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডে দৈনিক সংক্রমণের হার বেশ। এই রাজ্যগুলিতে করোনায় মৃত্যুহারও বাড়ছে। অন্যদিকে, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, কর্নাটক, কেরল, উত্তরপ্রদেশে ভাইরাস সক্রিয় রোগীর সংখ্যা লাগামহীন ভাবে বেড়ে চলেছে। মহারাষ্ট্রে এখনই ভাইরাস সক্রিয় রোগী সাড়ে ৬ লাখের বেশি। এদিকে দেশে ভাইরাস সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩৬ লাখ ৬৬ হাজার। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত দু’সপ্তাহে মহারাষ্ট্রের ১৫টি জেলা, কেরলের ১০টি জেলা, অন্ধ্রপ্রদেশের ৭টি ও কর্নাটকের ৩টি জেলায় কোভিড পজিটিভ রোগীর সংখ্যা হু হু করে বেড়েছে। কোভিড পজিটিভিটি রেটও এই জেলাগুলিতে বেশি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বলছে, বিশ্বের মোট কোভিড আক্রান্তের ৪৬ শতাংশই ভারতে। মৃত্যুর ২৫ শতাংশ হয়েছে ভারত থেকে। আমেরিকা ও ব্রাজিলের দৈনিক সংক্রামিতের সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে ভারত। আমেরিকায় ১ লাখ বা তার কম নতুন সংক্রমণ ধরা পড়ছে রোজ, কিন্তু ভারতে প্রতিদিনই ৪ লাখের বেশি নতুন সংক্রমণ ধরা পড়ছে।

করোনার তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কেন্দ্রের বিজ্ঞান উপদেষ্টা ডক্টর কে বিজয়রাঘবন বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছেন, কোভিড সংক্রমণ যে গতিতে বেড়ে চলেছে তাতে ‘থার্ড ওয়েভ’ অনিবার্য। তবে কখন এবং কোন সময়ে এই তৃতীয় ঢেউ ধাক্কা দেবে সেটা এখনই বলা মুশকিল।কিন্তু, এটা স্পষ্ট নয়, কবে তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়বে। আমার মনে হয়, এজন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। ভ্যাকসিন আপগ্রেড করা দরকার।

একই দাবি করেছেন দিল্লি এইমসের প্রধান রণদীপ গুলেরিয়াও। তিনি বলেছেন, সংক্রমণের গতি থামাতে হলে কড়া লকডাউন দরকার। নাইট কার্ফু বা সপ্তাহ শেষের লকডাউন করে আখেরে কোনও লাভ হবে না। সাধারণ মানুষের সুযোগ সুবিধার দিকে খেয়াল রেখেই কড়া হতে হবে সরকারকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here