দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ: চিনকে চাপে ফেলে চার শক্তির অক্ষ তথা কোয়াডের বৈঠক বসবে আর দুদিন পরেই। ভারত-প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের রণকৌশল ঠিক করার পাশাপাশি এই কোয়াড বৈঠকে ভ্যাকসিন নিয়েও জরুরি ঘোষণা হতে পারে। সূত্রের খবর, ভারতের ভ্যাকসিন উৎপাদন ও বিতরণের ক্ষমতা বাড়াতে আর্থিক দিক থেকেও সাহায্য করতে পারে বন্ধু দেশ আমেরিকা, জাপান বা অস্ট্রেলিয়া। এই মুহূর্তে করোনা ভ্যাকসিনের উৎপাদন বাড়াতে ভারতের সঙ্গে আর্থিক চুক্তির ঘোষণা হতে পারে কোয়াড বৈঠকে।
বিশ্বে যতরকম ভ্যাকসিন তৈরি হয় তার প্রায় ৬০ শতাংশই সরবরাহ করে ভারত। এ দেশের ভ্যাকসিন উৎপাদনের পরিকাঠামোর প্রশংসা করে আন্তর্জাতিক মহলও। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া বিশ্বের বাজারে বৃহত্তম ভ্যাকসিন নির্মাতা সংস্থা। আমেরিকার নোভাভ্যাক্স ও জনসন অ্যান্ড জনসনকে ভ্যাকসিন সরবরাহ করার চুক্তিও করেছে ভারতের কয়েকটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি। কাজেই বিশ্ব বাজারে ভারতের তৈরি ভ্যাকসিনের বিপুল চাহিদা রয়েছে।

সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, ভারতের এই ভ্যাকসিন উৎপাদনের পরিকাঠামোকে আরও উন্নত করার জন্যই জরুরি আর্থিক চুক্তি করতে পারে আমেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া।

রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রশাসনের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেছেন, করোনাভাইরাসের মিউটেশন বা জিনগত বদল যত তাড়াতাড়ি থামানো যাবে, ততই দ্রুত বিশ্বজোড়া মহামারীকে রোখা যাবে। এর জন্য টিকার উৎপাদন ও টিকাকরণের প্রক্রিয়া আরও দ্রুত করতে হবে। টিকার বিপুল পরিমাণ উৎপাদনের ক্ষমতা ভারতের আছে, তাই সেদিক থেকে ভারতের ওপর ভরসা করা যায়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশেই ভ্যাকসিন পৌঁছে দিচ্ছে ভারত। আরও বেশি দেশে যাতে তাড়াতাড়ি ভ্যাকসিন পৌঁছে যেতে পারে সে জন্য জরুরি আলোচনা হবে কোয়াড বৈঠকে।

লাদাখের পাশাপাশি দক্ষিণ চিন সাগরে যেভাবে চিনা আগ্রাসন বাড়ছে তাতে কোয়াড বৈঠক খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। ভারত, আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে গঠিত চতুর্দেশীয় অক্ষ বা কোয়াড বর্তমান প্রেক্ষাপটে বেজিংয়ের প্রতি বার্তা বলেই মনে করা হচ্ছে। কোয়াডকে ন্যাটোর ধাঁচে সামরিক চেহারা দেওয়া যায় কিনা সে নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে।


১৯৯২ সাল থেকে আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক মালাবার নৌমহড়া শুরু করেছিল ভারত। পরে ২০১৫ সালে জাপানও যোগ দেয় এই মহড়ায়। ২০১৭ সালে ভারত, জাপান ও আমেরিকা ত্রিপাক্ষিক নৌমহড়া হয় বঙ্গোপসাগরে। এই নৌসেনা মহড়ার পোশাকি নাম ছিল ‘মালাবার ২০১৭।’ সেই ত্রিদেশীয় মহড়ায় পর্যবেক্ষক হিসেবে যোগ দিতে চেয়ে অনুরোধ জানায় অস্ট্রেলিয়া। চিনের বিরুদ্ধে চতুর্দেশীয় অক্ষ তৈরি করে তাকে সামরিক চেহারা দেওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়াকেও সামিল করা হয়। কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সমুদ্রযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়ে আছে। লাদাখ সংঘাতের পরে পরিস্থিতি আরও সঙ্কটময় হয়ে উঠতে পারে। তাই বাণিজ্যিক ও রণকৌশলগতভাবে চিনকে ঠেকাতে এই চারশক্তির অক্ষের বিশেষ গুরুত্ব আছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here