দেশের সময়,পেট্রাপোলঃ বকশিসের নামে বাংলাদেশের বেনাপোলে সেদেশের শ্রমিকদের ভারতীয় ট্রাকগুলির প্রতি অর্থনৈতিক অত্যাচারের প্রতিবাদে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ রাখলেন ভারতের পরিবহন শ্রমিক, মালিকেরা। এর ফলে এদিন সকাল থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ রপ্তানি বাণিজ্যের কোন ট্রাক প্রবেশ করেনি।
প্রাথমিকভাবে কিছু ট্রাক বাংলাদেশ থেকে এদেশে ঢুকলেও পরবর্তীতে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। জানা গেছে, ভারতের দিক থেকে এই সীমান্ত দিয়ে যেসব ট্রাক বাংলাদেশের বেনাপোল এ পণ্য খালাস করতে যায় সেই সব গাড়িগুলির প্রতি অলিখিতভাবে সে দেশের শ্রমিকেরা পণ্য খালাস করার জন্য বকশিশ নেয়। শুরুতে সেটা ১০ টাকা থাকলেও সেই দাবি বাড়তে বাড়তে এখন তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। এমনই অভিযোগ করলেন বনগাঁ মহকুমা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক প্রভাস পাল। তার কথার রেশ ধরে এক ট্রাকচালক উজ্জ্বল দত্ত জানান, শ্রমিকদের দাবি না মেটালে আমাদের কে মারধর খেতে হয়।
এমনকি অশ্লীল ভাষায় গালাগাল শুনতে হয়। ফলে আমরা বাংলাদেশের ভেতরে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি । বনগাঁ মোটর ওনার্স এসোসিয়েশন এর সম্পাদক দিলীপ দাস বলেন, কাগজপত্র অনুযায়ী ভারত থেকে পন্য নিয়ে বেনাপোল সীমান্তে পৌঁছে পণ্য খালাস করা পর্যন্ত দায়িত্ব সে দেশের সরকারের। পণ্য খালাস করার জন্য সরকারিভাবে সে দেশের শ্রমিকেরা টাকা পান। তা সত্ত্বেও দিন দিন তাদের এই বকশিশ এর দাবি মাত্রা ছাড়াচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে আমরা এদিন বনধ ডাকতে বাধ্য হয়েছি।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং ও ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে কয়েক হাজার মানুষ জড়িত। এই বাণিজ্যে বড় ধরনের ক্ষতি হতে চলেছে বাংলাদেশের শ্রমিকদের কারণে। সে দেশের শ্রমিকদের অনৈতিক দাবি মেটানোর জন্য বৈঠক করে নির্দিষ্ট টাকা দেবার কথা ঠিক করা হলেও সেটাকেও এখন ছাড়িয়ে যাচ্ছে তারা।
ফলে আগামী দিনে তার ফল খারাপ হতে চলেছে। এ দেশের শ্রমিক এবং মালিকদের, দাবি, অবিলম্বে বাংলাদেশে হওয়া এই অত্যাচার বন্ধ করতে হবে। এর পরেও সমস্যার সমাধান না হলে লাগাতার বনধ করা হবে। ভারতীয় এক ব্যাবসায়ী প্রদীপ দে জানান ভারতের পেট্রাপোল এর এই বৃহ:তম স্থল বন্দর এর সুনামটাই নষ্ট হতে বসেছে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য জগৎ এ।দু’দেশের বাণিজ্যিক ঐতিহ্য টাই মুছে যাবে যদি দু’দেশের সরকার যৌথ উদ্যোগে এই সব দুর্নীতিকে কঠোর হাতে দীর্ঘ মেয়াদি সমাধান না করে৷