দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: গত সোমবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, বুলবল ঘূর্ণিঝড়ে বাংলায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিয়ে উদাসীন কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ক্ষতিপূরণের জন্য এখনও ১ টাকাও দেয়নি।

সেকথা বলার পর চব্বিশ ঘণ্টাও কাটল না, কেন্দ্র জানিয়ে দিল, ক্ষতিপূরণের জন্য ৪১৪.৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বুলবুল ঘূর্ণিঝড়ে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল ওড়িশাতেও। প্রতিবেশি ওই রাজ্যে ক্ষতিপূরণের জন্য ৫৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন নরেন্দ্র মোদী সরকার। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য কেন্দ্রের যে তহবিল রয়েছে তা থেকেই এই টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

বুলবুলের তাণ্ডবের পরদিন সকালেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফোন করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। পরে দিল্লি থেকে একটি টিম এসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছিল দিন পনেরো আগে। তারপরই এই বরাদ্দ ঘোষণা করা হল।

তবে এখনই বলে দেওয়া যায় যে কেন্দ্রের এই অনুদানে কোনও ভাবেই সন্তুষ্ট হবে না বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। কারণ, একে তো রাজ্যের দাবি যে ওড়িশার তুলনায় বাংলায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বেশি। দ্বিতীয়ত, রাজ্যের দাবি ছিল ফসলের যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং দুই ২৪ পরগণা ও পূর্ব মেদিনীপুরে যে সংখ্যা বাড়িঘর ভেঙেছে তাতে ক্ষতিপূরণের জন্য ২৩ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন।

এর আগে বাংলায় আয়লা ঘূর্ণিঝড়ে প্রবল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। তখন রাজ্যে ক্ষমতায় ছিলেন বামেরা। সে সময়ে কেন্দ্রে মনমোহন সিংহ সরকার আয়লার ক্ষতিপূরণের জন্য ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় বাজেট বক্তৃতায় সেই অনুদানের কথা ঘোষণা করেছিলেন।

তবে পর্যবেক্ষকদের অনেকের বক্তব্য, আয়লার তুলনায় বুলবুল ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে। হতে পারে তা বিবেচনা করেই ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ করেছে কেন্দ্র। অন্যদিকে বাংলার বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ আগেই বলেছিলেন, “রাজ্য সরকার ইচ্ছা করে ক্ষতির পরিমাণ বাড়িয়ে দেখিয়েছে। ভোটের আগে ওই টাকা খয়রাতি করবে বলে”। বিজেপি মুখপাত্রের কথায়, সেই ইচ্ছাপূরণ না হওয়ায় তৃণমূল সমালোচনা করতেই পারে। কিন্তু মানুষও তো আর বোকা নয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here