দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ চুরি হয়ে গলে সাহিত্যিক বিনয় মজুমদারের সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারের স্মারক। বিনয় মজুমদার স্মৃতিরক্ষা কমিটি পাঠাগারে একটি আলমারিতে স্মারক ও শংসাপত্র রাখা ছিল। সোমবার সন্ধ্যায় পাঠাগারের দরজা খুলতে গিয়ে দেখা যায়, দরজার হুড়কো ভাঙা। ভিতরে ঢুকে দেখা যায় যে আলমারিতে স্মারকটি রাখা ছিল তার পাল্লা খোলা। নেই স্মারকটি।
প্রথমে মনে হয়েছিল বিনয় মজুমদারের সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারের স্মারকটিই শুধু নিয়ে গেছে দুষ্কৃতীরা। পরে দেখা যায় যে পাঠাগার থেকে বেশ কিছু নথিও চুরি গেছে। এব্যাপারে গাইঘাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
সাহিত্যিক বিনয় মজুমদারের অন্যতম বিখ্যাত গ্রন্থ হল ‘ফিরে এসো চাকা’। ২০০৫ সালে তিনি সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পান কবিতাগুচ্ছের জন্য। ২০০৬ সালের ১১ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় বিনয় মজুমদারের। মৃত্যুর পরে তাঁর ব্যবহৃত জিনিসপত্র, তাঁর পাওয়া পুরস্কারের স্মারক ও শংসাপত্র এই পাঠাগারকে দিয়ে দেয় তাঁর পরিবার, জনসমক্ষে সেগুলি রাখার ব্যবস্থা করা হয়। অনেকটা জাদুঘরের আদলে সেগুলি সাজিয়ে রাখা হয়েছিল এই পাঠাগারে। অভিযোগ, কবির স্মৃতিবিজড়িত অমূল্য জিনিস রাখা থাকলেও কোনও রকম নিরাপত্তার বন্দোবস্ত ছিল না এই পাঠাগারে।
ঠাকুরনগর স্টেশন লাগোয়া বিনয় মজুমদারের বসতবাড়ির উল্টোদিকেই বিনয় মজুমদারের স্মৃতি রক্ষা কমিটির লাইব্রেরি। বিনয় মজুমদারের জন্ম ১৯৩৪ সালে তৎকালীন বর্মায়। কবির শৈশবেই তাঁর সপরিবার ঠাকুরনগরে চলে আসেন। এখানেই পাকাপাকি ভাবে বসবাস করতে শুরু করেন। পড়াশোনাও এখানে। ছোট থেকে লেখালেখি শুরু করেন। সাহিত্যে অবদানের জন্য পেয়েছেন রবীন্দ্র পুরস্কারও।
বিনয় মজুমদার লিখেছিলেন,
“আমি মুগ্ধ; উড়ে গেছ; ফিরে এস, ফিরে এস চাকা
রথ হয়ে, জয় হয়ে, চিরন্তন কাব্য হয়ে এসো।”
– চাকা ফিরে না এলেও তাঁর সেই পদক কি ফিরে আসবে? সে উত্তর সময় দেবে।
স্মারক চুরি যাওয়া অবশ্য নতুন কিছু নয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পদকও চুরি গেছে, সিআইডি থেকে সিবিআই – বহু তদন্ত হয়েছে কিন্তু আজও তার কোনও কিনারা হয়নি।