দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: প্রায় একবছর ধরে তাঁর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার লেনদেন নজরে এসেছিল অর্থমন্ত্রকের। বিদেশ থেকে আসা এই বিপুল অর্থের উৎস খুঁজতে যোগাযোগ করা হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সঙ্গে। শুরু হয় নজরদাবি। ধীরে ধীরে জাল গুটিয়ে এনে লস্কর-ই-তৈবার লিঙ্কম্যান সন্দেহে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হল বসিরহাটের তরুণী তানিয়া পারভিনকে।

এ দিন সকালে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্কফোর্সের গোয়েন্দারা বাদুরিয়ার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে ২১ বছরের ওই তরুণীকে। গোয়েন্দাদের দাবি, প্রায় দু’বছর ধরে লস্কর-ই তৈবার সঙ্গে তানিয়ার যোগ। বাদুরিয়ার বাড়িতে বসে ধর্মীয় উন্মাদনা ছড়িয়ে এলাকার মুসলিম যুবক যুবতীদের জঙ্গি কার্যকলাপে উদ্বুদ্ধ করত সে। এই কাজের জন্য বেশ কয়েকবার কাশ্মীর ও দিল্লিতেও গেছে এই তরুণী। বার কয়েক গেছে মুম্বইতেও। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এই পুরো তথ্য পাওয়ার পরেই যোগাযোগ করে কলকাতা পুলিশের এসটিএফের সঙ্গে। তারপরেই বাদুরিয়ায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে এসটিএফ।

এসটিএফ সূত্রে খবর, কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ওই তরুণীর কাছ থেকে একটি ডায়েরি উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দেরা। তাতে পাকিস্তানের লস্কর-তৈবার বেশ কয়েকজন সদস্যের মোবাইল ফোনের নম্বর পাওয়া গেছে। বেশ কয়েকজন জঙ্গির ছবি ও ধর্মীয় কিছু বইও মিলেছে ওই তরুণীর কাছ থেকে। তাঁর মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে পাকিস্তান-সহ আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগের কথা জানতে পারেন গোয়েন্দারা।

তানিয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতা ও ধর্মীয় উস্কানির বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ ধৃতকে বসিরহাট আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে ট্রানজিট রিমান্ডে তাকে কলকাতায় নিয়ে যায় এসটিএফ।
বসিহাট মহকুমা আদালতের সরকারি আইনজীবী অরুণকুমার পাল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে পাকিস্তান সব বেশ কিছু দেশের সঙ্গে ওই তরুণীর যোগাযোগের কথা জানতে পারে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ১২১এ, ১২৪এ ১২০বি, ৪১০/৪২০ সহ কয়টি ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহিতা, ষড়যন্ত্র, অসামাজিক কাজকর্মের মামলা রুজু করা হয়েছে। হেফাজতে নিয়ে জেরা করে এ সম্পর্কে আরও তথ্য জানবে পুলিশ।
পাড়ার সাদামাটা ছাত্রীটির এমন জঙ্গিযোগ কল্পনাও করতে পারেননি বাদুরিয়ায় তানিয়ার পড়শিরা। তাই সকালবেলা এসটিএফের গোয়েন্দারা তার বাড়িতে হানা দেওয়ার পরেই চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় গোটা এলাকায়। কীভাবে এই ছাত্রী জড়িয়ে পড়ল এমন ভয়ানক একটা চক্রের সঙ্গে, তারই উত্তর খুঁজছেন তাঁরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here