দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ হরিয়ানা- তো অনেক দূর। মহারাষ্ট্র আরও দূরে। সেই দু’হাজার কিলোমিটার দূরের রাজ্য থেকে অক্সিজেন পেল তৃণমূল কংগ্রেস। মহারাষ্ট্রে তো বটেই হরিয়ানাতেও শেষ পর্যন্ত হয়তো সরকার গড়বে বিজেপি। কিন্তু শক্তি কমার কাঁটা থেকে যাবে পদ্ম বাহিনীতে। আর সেটাই নতুন করে বাড়তি শক্তি বাড়াতে পারে বাংলার শাসক দলকে।

মোদীই বিজেপির মুখ। গোটা দেশের সঙ্গে সঙ্গে এই রাজ্যেও এটাই সত্য। রাজ্যের নেতারা যাই করুন না কেন গেরুয়া বাহিনীর শেষ কথা মোদী-শাহ জুটি। আর সেটা যে দলের জন্য চিরকাল ভাল ফল দিয়ে যাবে না, সেটা দেখিয়ে দিল হরিয়ানা, দেখিয়ে দিল মহারাষ্ট্র।

ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলতে শুরু করেছেন, প্রদেশ নেতৃত্বের কোনও মুখকে সামনে না রাখাটা কাজের কাজ হয়নি। ফল পোহাতে হচ্ছে বিজেপি নেতৃত্বকে। কয়েক মাস আগে বিপুল শক্তি নিয়ে কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসা দলের এমন ফল নিশ্চয়ই আশা করেনি বিজেপি। কিন্তু সেটাই হল।

এটাই এই রাজ্যে বড় স্বস্তির হয়ে উঠতে পারে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে। রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল করেছে বিজেপি। ১৮টি আসন জিতেছে। বিধানসভায়তেও শক্তি বাড়িয়ে চলেছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু এখনও পর্যন্ত দলের কোনও জনপ্রিয় মুখ তৈরি হয়নি।

রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিধায়ক থেকে সাংসদ হয়েছেন কিন্তু তাঁকে সামনে রেখে নির্বাচন লড়ার কোনও ইঙ্গিত পর্যন্ত নেই বিজেপির পক্ষে। বরং, এখনও পর্যন্ত যা দেখা যাচ্ছে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখেই লড়াইয়ে নামতে চায় বিজেপি।

ক’দিন আগেই সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেন, এই রাজ্যে বিজেপি কোনও মুখকে সামনে না রেখে সংগঠনের জোরে জয় হাসিল করবে। কিন্তু এটা ঠিক যে সেই সংগঠন এখনও পর্যন্ত আদৌ হাসিল করতে পারেনি বিজেপি।

বরাবরই তৃণমূল কংগ্রেস প্রচারে এই প্রসঙ্গে তুলে থাকে। ঘাসফুলের প্রধান শক্তিই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ। রাজ্যে তিন দশকের বাম সরকারকে পরাস্ত করার লড়াইয়ে এটা ঠিক ছিল যে কেন হবেন পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বিজেপির কোনও মুখ নেই। ক্ষমতায় এলে কে পদ্ম শিবিরের মুখ্যমন্ত্রী হবেন তার জবাবও নেই বিজেপির কাছে। দুই রাজ্যের নির্বাচনে ‘মোদী মুখ’ ধাক্কা খেয়েছে ধরলে এই রাজ্যের লড়াইয়ে তা নিঃসন্দেহে বড় অক্সিজেন তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে।


শুধু এটাই নয়, আঞ্চলিক দলের নেত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই ছোট দলের জোটের কথা বলে এসেছেন। এবার দুই রাজ্যের ফলেই ছোট দলের উত্থান দেখা গিয়েছে। মহারাষ্ট্রে বিজেপির জোটসঙ্গী শিবসেনাও আঞ্চলিক দল। অন্য দিকে, হরিয়ানায় দুষ্মন্ত চৌটালার দল জনতা পার্টি উল্লেখযোগ্য ফল করেছে। এটাও এই রাজ্যের ক্ষেত্রে বিজেপির কাছে চাপের হয়ে উঠতে পারে। রাজ্য স্তরের নির্বাচনে আঞ্চলিক দলের গুরুত্ববৃদ্ধি স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে বড় অক্সিজেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here