দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন ঘটেছে তৃণমূলের। তার পর শনিবার বিধানসভার প্রথম অধিবেশনই থাকল বিরোধীশূন্য। ৫২ সালের পর থেকে এই প্রথমে অধিবেশনে কোনও বাম বা কংগ্রেস বিধায়ক নেই। বিরোধী বলতে ৭৭ জন বিজেপি বিধায়ক। যাঁরা চলতি হিংসার ঘটনার প্রতিবাদে সভা বয়কট করেছিলেন। সেই আবহেও এদিন থেকেই বিধানসভায় আগাগোড়া আগ্রাসী ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে আনুষ্ঠানিক ভাবে সভার স্পিকার নির্বাচিত করার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এদের মানুষ বয়কট করেছে। এরা আবার কিনা বিধানসভা বয়কট করছে! তাঁর কথায়, “নির্বাচন কমিশনের সাহায্যে কোথাও কোথাও রিগিং হয়েছে। নইলে এরা ৩০ টা আসনেও জিততে পারত না। আজও যাঁরা অহঙ্কারী, তাঁদের পতন অনিবার্য”।

মমতার কথায়, ‘‘বাংলার মানুষ প্রমাণ করেছেন, তাঁদের মেরুদন্ড আছে। বাংলার মেরুদন্ড আছে। তাঁরা বলেছেন, চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির।’’

মমতা বলেন, ‘‘এ এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। ইতিহাস। মিরাক্‌ল! আমি বাংলার নারীশক্তির কাছে মাথা নত করছি। পাশাপাশি, তরুণ প্রজন্মের ভোটও আমার পেয়েছি। অনেকের কোভিড হওয়া সত্ত্বেও তাঁরাদীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছেন। কৃতজ্ঞতায় আমার মাথা নত হয়ে আসছে।’’ মমতার আরও বক্তব্য, ‘‘নির্বাচন কমিশনের প্রত্যক্ষ সহযেোগিতায় কোথাও কোথাও রিগিং হয়েছে। আমরা সব জানি। সব বুঝতে পেরেছি। আমরা আবার বলছি, নির্বাচন কমিশনের সংস্কার হওয়ার প্রয়োজন আছে। কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত অফিসার একটা চিরকুট লিখে লোককে বদলি করে দিচ্ছেন!’’ 

বিজেপি-র শীর্ষনেতৃত্বকে একহাত নিয়ে মমতা বলেছেন, ‘‘কত কোটি টাকা খরচ করেছে, তার কোনও বিসেব নেই। হোসপাইপে করে জল ঢালার মতো টাকা খরচ করেছে। ওই টাকাটা খরচ করে যদি সকলকে টিকা দেওয়া যেত, তা হলে এতদিনে সকলের টিকা পাওয়া হয়ে যেত। সার্বিক টিকাকরণ হত।’’

রাজ্যে চলতি রাজনৈতিক হিংসার জন্যও মুখ্যমন্ত্রী এদিন বিজেপিকেই দায়ী করেছেন। তাঁর কথায়, ভোটের সময়ে লক্ষ লক্ষ কেন্দ্রীয় বাহিনী বাংলায় ঢুকিয়েছে। কোনও টেস্ট করেনি। তাতে কোভিড ছেয়ে গেছে বাংলায়। ভোটে হেরে যাওয়ার পরেও এরা মানুষের রায় মেনে নিচ্ছে না। এখন দাঙ্গা লাগাতে চাইছে। আমি বিধায়কদের বলব, সবাই সতর্ক থাকবেন। কেউ দাঙ্গা লাগাতে চাইলে বা সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট করতে চাইলে তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করতে হবে। বাংলায় অশান্তি বাঁধানোর চক্রান্ত আটকাতে হবে। বাংলা একমাত্র জায়গা যেখানে হিন্দু, মুসলমান, শিখ, খ্রিষ্টান পারস্পরিক সদ্ভাব নিয়ে বাস করে। সেই পরিবেশ নষ্ট করতে দেওয়া যাবে না।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নাম না করে কটাক্ষও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, এঁরা লেবু কচলাতে কচলাতে তেতো করেছে। বলেছিলেন, ডবল ইঞ্জিন সরকার হবে। তৃণমূল ডবল সেঞ্চুরি করে দেখিয়েছে। তবে আমি বলব সবাইকে বিনয়ী হতে হবে। মানুষের সঙ্গে জুড়ে থাকতে হবে। মন দিয়ে বিধানসভা করতে হবে। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ বিল, অর্থ বিল পাশের দিন বিধানসভায় থাকতে হবে। আর যদি কেউ কোনও কারণে না আসতে পারেন, তা হলে আগাম জানাতে হবে পরিষদীয় দলকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here