দেশের সময় প্রতিবেদনঃ- একটা সময় রাজ্য বিজেপি প্রচার করত তাদের সদস্য সংখ্যা দ্রুত গতিতে বাড়ছে।সদস্য সংখ্যা এই কিছুদিন আগেও বলা হত দু কোটির উপর।এ রাজ্যে নাকি বিজেপির সদস্য তৈরির অভিযান দারুন সফল।তারা যে গতিে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করছে তাতে তাদের বুথ ভিত্তিক কর্মী তিনজন থেকে পাঁচজন হয়ে গেছে বলে একসময় রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল।

শুধু মাত্র মিসড্ কলের মাধ্যমে সদস্য বাড়ানোতে বিজেপি অসামান্য সাফল্য পেয়েছে বলে বিজেপির রাজ্য নেতারা এক সময় দাবি করেছিলেন।তবে সাম্প্রতিক সময় বিজেপির দলিয় এক রিপোর্ট বলছে এ রাজ্যে বিজেপির সদস্য সংখ্যা দ্রুত হারে কমতে শুরু করেছে।

বিজেপির অন্দরমোহলের রিপোর্ট এই মূহুর্তে ভোট হলে বিজেপি রাজ্যের অর্দ্ধেক আসনে কোন বুথে তাদের কর্মী বসাতে পারবে না।বলাই বাহুল্য এই বার্তা বিজেপির নেতাদের মাথায় চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছে।সূত্রের খবর সম্প্রতি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্য বিজেপির কাছে রিপোর্ট চেয়ে জানতে চায় যে দুকোটি সদস্য করা হয়েছে তাদের কার্যকারিতা বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে পর্যালোচনা করে বলতে হবে।

সেই পর্যালোচনা করতে গিয়েই বিজেপির রাজ্য নেতাদের মাথায় বাজ পরার অবস্থা।জানা যাচ্ছে দুকোটির অর্দ্ধেকও কোন সাংগঠনিক কাজে নেই।তাদের কোন ভূমিকাই খুঁজে পায় নি রাজ্য নেতারা।গত লোতসভা নির্বাচনের পর তৃণমূল থেৈকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার যে ঢল দেখা গেছিল তাদের মধ্যে অনেকেই আবার তৃণমূলে ফিরতে শুরু করে দিয়েছে।

বিজেপি দলের ভেতরকার তদন্তে তা ধরা পড়েছে বলে খবর।বিজেপির সদস্য সংখ্যা এখন এ রাজ্যে কত তা বিজেপির রাজ্য নেতারাও জোর দিয়ে বলতে পারছে না।বিজেপির যে রমরমা কিছুদিন আগে দেখা গেছিল এখন তা যে অনেকটাই মলিন হয়ে গেছে তা একান্তে স্বীকার করে নিচ্ছেন বিজেপির রাজ্য নেতাদের এটা বড় অংশই।

কিছুদিন আগেও এ রাজ্যে আগামি বিধানসভাতে বিজেপি জিতে আসবে বলে যারা বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন তাদের অনেকেরই এখন ক্রমশ সেই ভ্রান্তি কেটে যাচ্ছে।বিজেপির পক্ষে এ রাজ্যে ক্ষমতা পাওয়া আর সম্ভব নয়।যে উত্তরবঙ্গে গত লোকসভা ভোটে বিজেপি এ রাজ্যের শাসক দলকে একেবারে ধুয়ে মুছে সাফ করে দিয়েছিল সেই উত্তরবঙ্গেই এবার দ্রুত জমি হারাতে শুরু করেছে বিজেপি।

কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীর গো হারা হেরে যাওয়া তারই ইঙ্গিত বলে মনে করছেন বিজেপির অনেক নেতাই।শুধু উত্তরবঙ্গই নয় বিজেপি শিবিরে ধস নামছে রাজ্যের সর্বত্রই।মুখে এবং প্রকাশ্যে তা মানতে না চাইলেও একান্ত আলাপচারিতায় বিজেপি নেতারা মেনে নিচ্ছেন তারা এখন আর খুব ভাল অবস্থায় নেই।

এখন প্রশ্ন হল বিজেপি এই অবস্থা হল কেন?যে গতিতে তারা এ রাজ্যে এগুচ্ছিলেন তাতে তাদেরতো এখন অনেকটাই এগিয়ে যাওয়ার কথা তবে কেন এমন ছন্দ পতন?

এ প্রশ্নের উত্তরে বিজেপির এক রাজ্য নেতা আক্ষেপ করে বললেন,আসলে এ রাজ্যে বিজেপিকে অনেকগুলো আসন মানুষ তুলে দিয়েছিল,রাজ্য শাসক দলের বিরুদ্ধে বিতশ্রদ্ধ হয়ে।শাসক দলের মস্তানি,নেতাদের কুকথা,স্বজন পোষণ,দুর্মীতি,মুখ্যমন্ত্রীর মিথ্যাচার এসব্র বিরুদ্ধেই গত লোকসভা নির্বাচনে মানুষ রায় দিয়েছিল।

মানুষ কোন বিকল্প না দেখে বিজেপিকেই ভরসা করেছিলেন।তবে বিজেপি সেই ভরসা রাখতে পারেনি।বিজেপি নেতারা গত লোকসভা নির্বাচনের পর একটা আন্দোলন করেনি যা মানুষের দৈনন্দিন সমস্যার সঙ্গে জরিত।রাজ্যজুড়ে চাকরির দুর্নীতি,ঘুষ,মানুষের জীবন দুর্বিসহ হয়েওঠা তা নিয়ে কোন কথা বা কর্মসূচি না নিয়ে শুধু ধর্ম আর এনআরসি সিএএ করে বিজেপি নিজের পায়ে নিজেই কুড়ুল মেরেছে।

রাজ্য জুরে যে জীবনযাপনের অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে বিজেপি নেতারা তা নিয়ে যে কোনদিন বলবেন না মানুষ এতদিনে তা বুঝে গেছেন।দিলীপ ঘোষরা যে ভাষায় কথা বলেন,যে মস্তানি ও কুকথা বলেন তা যেন একেবারে হুবাহু তৃণমূল নেতাদের নকল করা।তাই মানুষ বিজেপির উপর থেকে মুখ সরাতে শুরু করেছে।

সেই নেতাকে বলেছিলাম,তিনি নিজে কেন দল কে এসব বলছেন না?তার জবাব বলে লাভ হবে না।কারণ দল এ পথেই যেতে চাইছে।তার মানে কী এ রাজ্যের সরকারের সঙ্গে গোপন কোন বোঝাপড়া।কোন উত্তর না দিয়ে সেই বিজেপি নেতাটি এবার অর্থপূর্ণ হাসি হেসে চলে গেলেন।

তবে কী গোটাটাই একটা নাটক!! এ বিস্ময়ের ঘোর এখনই দুর হওয়া সম্ভব নয়।তবে এ রাজ্যে বিজেপি যে দ্রুত পিছু হটছে তা চোখকান খোলা রাখলে যে কেউ বুঝতে পারবেন।সেই প্রবনতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এ রাজ্যে বিজেপির সদস্য ও কর্মী সংখ্যা দ্রুত কমছে তা অস্বীকার করতে পারছেন না বিজেপির কোন রাজ্যস্তরের নেতাই।

কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে এখনও শেষ রিপোর্ট জমা দেওয়া হয় নি,তবে জমা দেওয়া হবে বলেই খবর।কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে এই রিপোর্ট জমা দিলেই এ রাজ্যে বিজেপি যে দ্রুত মাটি হারাচ্ছে তার উপর সত্যের শীলমোহর পড়ে যাবে বলে অনেকেই মনে করছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here