দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সামনেই পুরসভা নির্বাচন। তার আগে বিজেপির তীব্র স্রোতে ভেসে চলে যাচ্ছেন একের পর এক পুরসভার কাউন্সিলর সহ বিধায়ক৷

গত রবিবার সকালেই জানা গিয়েছিল, নোয়াপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক সুনীল সিং দিল্লি চলে গিয়েছেন। অপেক্ষা ছিল বিজেপিতে যোগ দেওয়ার। সোমবার যোগ দিয়েছেন বিজেপি-তে। সঙ্গে গারুলিয়া পুরসভার বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরও। সেদিন রাতেই খবর ছিল, আরও একটা ধাক্কা আসতে চলেছে। দুপুরের পর থেকে ‘নিরুদ্দেশ’ হয়ে যান বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। খবর ছিল, বনগাঁ পুরসভার ১২ জন কাউন্সিলর ও ১৫টি পঞ্চায়েতের সদস্যদের নিয়ে বিশ্বজিৎও নাকি দিল্লি চলে গিয়েছেন। সুনীলদের সঙ্গে তিনিও নাকি দলবল নিয়ে যোগ দেবেন গেরুয়া শিবিরে। সেই খবরই সত্যি হল অবশেষে। সুনীল সিংয়ের সঙ্গে না হলেও মঙ্গলবার বিশ্বজিৎ দাস হাতে তুলে নিলেন বিজেপির ঝান্ডা। নেপথ্যে সেই মুকুল রায়।

লোকসভা ভোটের পর থেকে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসে ভাঙন অব্যাহত। একের পর এক বিধায়ক, কাউন্সিলর, পঞ্চায়েত সদস্যকে ভাঙিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বিজেপি। সোমবারই দিল্লিতে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছেন অর্জুন সিংয়ের ভগ্নিপতি তথা নোয়াপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক সুনীল সিং। সেইসঙ্গে গাড়ুলিয়া পুরসভার ১৬ জন কাউন্সিলর। এবার সেই পথে পা বাড়ালেন বনগাঁ উত্তর বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস ও বনগাঁ পুরসভার ১২ জন কাউন্সিলর।

লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পরে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান শংকর আঢ্যর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে অনাস্থা পেশ করেন। তার পরে আরও তিনজন কাউন্সিলর সেই পথে হাঁটেন। তখন বিক্ষোভের মুখে পড়ে শংকর আঢ্য জানান, কাউন্সিলররা না চাইলে তিনি পদত্যাগ করতে রাজি। বিদ্রোহী ১২ জন কাউন্সিলর নিখোঁজ জানিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন চেয়ারম্যান। তখনই বিদ্রোহীদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা ওঠে। সেই জল্পনাই এবার সত্য হল।

বেশ কিছু দিন ধরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, যাঁরা যাবার তাঁরা চলে যান। মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চ থেকে ফের সেই হুঁশিয়ারি শুনিয়েছেন তিনি। আর মঙ্গলবারই বনগাঁর বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিলেন।

কলকাতা এবং জেলার সব কাউন্সিলারদের নিয়ে রিভিউ মিটিং করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে রাজ্যের সমস্ত পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলরদের বৈঠকে দিদি বলেন, “অর্ধেক লোক সারা বছর কাজ করে না। শুধু বাড়ি আর প্রোমোটিং করে।” একই সঙ্গে মমতা বলেন, “অডিটে ধরা পড়লেই অন্য রাজনৈতিক দলে চলে যাচ্ছে। ভাবছে পার পেয়ে যাবে। ওখানে যাওয়া মানে আরও ফেঁসে গেলেন!” প্রায় প্রতিদিনই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়ার হিড়িক বাড়ছে। ইতিমধ্যেই ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের একাধিক পুরসভা তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। নেত্রী এ দিন বলেন, “যাঁরা যাওয়ার, তাড়াতাড়ি চলে যান। একজন গেলে আমি ৫০০ জন তৈরি করব। তবু চোরেদের দলে রাখব না।”

দলে যে দুর্নীতি ভালই বাসা বেঁধেছে, ‘চোর ছ্যাঁচড়ে’ দল ভরে গিয়েছে, তা প্রকারন্তরে স্বীকার করে নিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তৃণমূলের কোথায় ১৫–২০ জন কাউন্সিলার বিজেপিতে চলে গিয়েছে তাতে কিছু যায় আসে না। আমি নতুন করে সব তৈরি করে দিয়েছি।

প্রত্যেক কাউন্সিলারকে এলাকায় কাজ করতে হবে, জনসংযোগ করতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এরপর পঞ্চায়েত এবং পুরসভা নির্বাচনের টিকিটের ক্ষেত্রে নয়া নিয়ম এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার থেকে জেলার নেতাদের হাতে আর টিকিট দেওয়া হবে না। প্রার্থীদেরই সরাসরি হাতে টিকিট দেওয়া হবে। কারণ জেলার নেতারা অনেকে সেই নাম কেটে দিয়ে অন্যজনকে টিকিট দিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী তাই বলেন, ‘‌কারও কথায় টিকিট নয়। পারফরম্যান্স দেখে টিকিট দেওয়া হবে এবং তা সরাসরি দেওয়া হবে প্রার্থীকেই।’‌
এ দিনের বৈঠকে মমতার বক্তব্য নিয়ে অবশ্য টিপ্পনি কাটতে ছাড়েনি বিজেপি। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “দিদি যদি এখন চোর তাড়াতে শুরু করেন তাহলে গোটা দলটাই উঠে যাবে, কিন্তু কাউন্সিলররা যদি এখন বলেন, আমাদের বলার আগে নিজের পরিবারটা আগে দেখুন! কালীঘাটে যাঁরা সম্পত্তি করেছে তাদে কী হবে? তখন দিদি কোথায় যাবেন?”

এদিকে বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক সহ ১২জন কাউন্সিলর মঙ্গলবার দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা জানতে পেরেই,শহর জুড়ে গেরুয়া আবির ছড়িয়ে, লাড্ডু খাইয়ে আনন্দে মেতেছে কর্মি সমর্থকেরা৷”

ছবি-দেশের সময় এর এ্যালবাম থেকে সংগৃহীত

“উত্তর২৪পরগনা জেলার বিজেপি নেতা “দেবদাস মন্ডল বলেন তৃণমূলের দূর্রনীতির বিরুদ্ধে গর্জে উঠে ছিলেন বনগাঁর উত্তর এর বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস সহ ১২জন কাউন্সিলর,পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যর বিরুদ্ধে তাঁরা এক প্রকার যুদ্ধ ঘোষণা করেই এদিন, বিজেপিতে যোগদান করে প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতকে আরও শক্ত করতে এগিয়ে এলেন৷ বনগাঁর নীরিহ মানুষদের কে যেভাবে নির্যাতন করেছেন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য,মানুষের সামনে মুখ দেখানোর কোন পরিস্থিতি থাকবেনা তার৷ সেই সব সাধারন মানুষের পাশে স্তম্ভের মতো দাঁড়াবে আমাদের কর্মিরা৷ ” যদিও এসব কথার গুরুত্ব দিতে চাননি শঙ্কর আঢ্য,তিনি বলেন বনগাঁর মানুষ শান্তি প্রিয়, কোন অবস্থায় কোন প্ররোচনায় যেন কেউ পা না দেন,কোন ভাবেই যেন বনগাঁ অশান্ত হ’য়ে না যায় সেই দিকে প্রশাসন দৃষ্টি রাখছে৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here