দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ফের একবার দিন বদল হল লকডাউনের। বুধবার নবান্নের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হল, আগামী ২৮ অগস্ট যে লকডাউন ছিল তা বাতিল করা হচ্ছে। অর্থাৎ, চলতি মাসে আর চারদিন রাজ্যজুড়ে লকডাউন থাকবে। সেই দিনগুলি হল ২০, ২১, ২৭ ও ৩১ অগস্ট।

বুধবার নবান্নের তরফে যে বিবৃতি জারি করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, অগস্ট মাসের শেষ দিকে ২৭ ও ২৮ তারিখ, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার লকডাউন রয়েছে। আবার পরের সপ্তাহের শুরুর দিন অর্থাৎ ৩১ অগস্ট সোমবার লকডাউন রয়েছে। মাঝের দু’দিন অর্থাৎ শনি ও রবিবার ব্যাঙ্ক পরিষেবা বন্ধ। 

ফলে ব্যবসার কাজে ও ব্যাঙ্কের কাজে সমস্যা হতে পারে। রাজ্য সরকারের কাছে বারবার একদিন লকডাউন প্রত্যাহারের আবেদন করা হচ্ছিল বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২৮ তারিখের লকডাউন তুলে নেওয়া হল। ফলে বৃহস্পতিবারের পরে আবার পরের সপ্তাহের সোমবার থাকবে লকডাউন। শুক্রবার স্বাভাবিক কাজকর্ম হবে। এই চিঠিতে সই করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা।

চলতি মাসে অবশ্য লকডাউনের দিন এর আগেই তিনবার বদলেছে রাজ্য সরকার। গত ২০ জুলাই প্রথমে নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করে লকডাউনের দিন ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সাংবাদিক বৈঠকে ঘোষণা করা দিনক্ষণ ১ ঘন্টার মধ্যে বদলে দেওয়া হয়। রাতে ফের সেই দিনক্ষণ বদল করে নবান্ন। বলা হয় অগস্ট মাসের ৫, ৮, ১৬, ১৭, ২৩, ২৪

এবং ৩১ তারিখ লকডাউন থাকবে রাজ্যে। তারপরে গত ৩ অগস্ট ফের বদল হয় সেই সূচিতে। বিজ্ঞপ্তি জারি করে নবান্ন জানায়, ৫, ৮ ও ৩১ অগস্ট পূর্ব ঘোষণা মতোই লকডাউন থাকবে। তবে ১৬, ১৭, ২৩, ২৪ তারিখের পরিবর্তে ২০, ২১, ২৭, ২৮ তারিখ লকডাউন থাকবে।

নবান্নের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, লকডাউনের আগের নির্ঘন্ট প্রকাশ করার পর বিভিন্ন মহল থেকে অনেক আবেদন এসেছে। অনেক উৎসব পার্বণের দিন রয়েছে এ মাসে। তা ছাড়া বিভিন্ন জায়গার স্থানীয় মানুষের প্রথা বা অনুষ্ঠানও রয়েছে। সেই কারণেই লকডাউনের দিন বদল করা হল।

গত বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জেলার প্রশাসকদের উদ্দেশে বলেন, “আমরা নির্দিষ্ট কয়েকটা দিন লকডাউন ঘোষণা করেছি। কিন্তু তা ছাড়াও অনেক জেলায় জেলাশাসকরা স্থানীয়ভাবে লকডাউন ঘোষণা করছে। সেটা আমাদের অর্ডার নয়। সেটা কেন্দ্রীয় সরকারের অর্ডার। কোথাও আক্রান্তের খবর পেলে ছোট জায়গা, রাস্তা বা এলাকাকে কন্টেইনমেন্ট করা হচ্ছে। এই কন্টেইনমেন্ট জোন অনুযায়ী লকডাউন হচ্ছে। এর সঙ্গে সম্পূর্ণ লকডাউনের কোনও সম্পর্ক নেই।

সেটা আমাদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু উৎসব, অনুষ্ঠানের দিনগুলো দেখে লকডাউন করতে হবে। ২ দিনের বেশি টানা লকডাউন না করলে ভাল হয়। সবার অসুবিধা যেন না হয়।”
একথা বলার পরেই এই মাসে আরও যে সব উৎসব যেমন জন্মাষ্টমী, মনসা পুজো, পারসি নববর্ষ প্রভৃতির কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায় সায় দিতে দেখা যায় মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকেও।

বারবার রাজ্যের এই লকডাউনের দিন বদল ঘিরে সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএম নেতাদের অভিযোগ, কোনও কিছু না দেখেই দিন ঘোষণা করছে সরকার। ফলে বারবার এভাবে দিন বদল করতে হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষেরই অসুবিধা হচ্ছে। সরকারের উচিত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভালো করে ভেবে চিন্তে তারপর কিছু ঘোষণা করা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here