দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাঁচার সব রাস্তাই ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ। দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের কাছে ফাঁসি মকুব করে যাবজ্জীবন সাজার আর্জি জানিয়েছে দোষী বিনয় শর্মা। সবকিছু করেও ফাঁসির দিন পিছনোর আর কোনও সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে না। দিল্লি আদালত পষ্টাপষ্টি জানিয়ে দিয়েছে আগামী ২০ মার্চই ফাঁসিতে ঝোলানো হবে নির্ভয়ার চার অপরাধীকে। শেষ চেষ্টা হিসেবে এবার পুলিশের বিরুদ্ধেই অভিযোগ আনল আরও এক দোষী পবন গুপ্ত।
জেলের ভেতরে শারীরিক নির্যাতন এমনকি ধর্ষণের অভিযোগ আগেও এনেছিল নির্ভয়ার দোষীরা। ফের সেই পথেই হেঁটে আসামি পবনের আইনজীবী এপি সিং দিল্লি আদালতে দাবি করলেন, তাঁর মক্কেলকে মারধর করা হয়েছে জেলে। মান্ডোলি জেলের দুই পুলিশকর্মী নাকি পবনের হাত মুচকে দিয়েছেন, জেলের দেওয়ালে তাঁর মাথাও ঠুকে দেওয়া হয়েছে। পবনের মাথায় আঘাত নাকি গুরুতর। ওই দুই পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার আর্জিও জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, সমস্ত রকম আইনি পথ ফের খতিয়ে দেখার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করেছে আসামি মুকেশ সিং। মুকেশের অভিযোগ, তাঁর আইনজীবী নাকি ভুল পথে চালনা করেছিলেন। কাজেই সমস্ত রকম আইনি পথ ফের খতিয়ে দেখা হোক।
মুকেশের আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার ও দিল্লি সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে পিটিশন দাখিল করেছেন আইনজীবী এমএল শর্মা। সিবিআই তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন তিনি। এমএল শর্মার অভিযোগ, মুকেশের প্রাণভিক্ষার আর্জি রাষ্ট্রপতি খারিজ করে দেওয়ার পর তার কিউরেটিভ পিটিশনও খারিজ হয়ে যায়। সেইসময় নাকি রাষ্ট্রপতির দ্বারা মুকেশের আর্জি খারিজের সাত দিনের মধ্যে কিউরেটিভ পিটিশন করতে বাধ্য করেছিলেন তার তৎকালীন আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার।
তিনি নাকি জোর করে মুকেশকে দিয়ে সই করিয়ে নেন। এই ঘটনায় সরকারের চাপ ছিল। সেই আবেদন মুকেশ স্বেচ্ছায় করেনি। তাই তাকে ফের একবার স্বেচ্ছায় আবেদন করতে দেওয়ার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। কিউরেটিভ পিটিশনের জন্য ২০২১ সাল পর্যন্ত সময় চেয়েছেন মুকেশের আইনজীবী। আদালত জানিয়েছে আগামী ১৬ মার্চ এই আবেদনের শুনানি হবে।
গত দু’মাস ধরে বারবার একের পর এক আবেদন করেছে নির্ভয়া মামলায় ফাঁসির সাজা পাওয়া বিনয় শর্মা, মুকেশ সিং, অক্ষয় ঠাকুর ও পবন গুপ্ত। এর ফলে বারবার পিছোতে হয়েছে ফাঁসি। অবশেষে চারজনের সব আবেদন হয়ে যাওয়ার পরে আগামী ২০ মার্চ ভোর সাড়ে ৫টায় ফাঁসির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। একের পর এক আবেদন করছেন তাদের আইনজীবীরা। এই দুই আবেদনের ক্ষেত্রে কী জবাব আসে সেটাই দেখার।