দেশের সময় বনগাঁ: এখন শুধু মাত্র কলকাতা হাইকোর্টের সবুজ সংকেতের অপেক্ষা,আর সেই সংকেত পেলেই সামনের মাসে কলকাতা ও হাওড়া পুরসভায় ভোট। তারপর বাকি সব পুরসভায় । তার আগে পুরসভার কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত কাউন্সিলর সহ নেতা, কর্মীদের জন-সম্পর্ক নিয়ে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার মধ্যমগ্রামের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে কাউন্সিলরদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষ আমাদের হাত উপুড় করে সমর্থন দিয়েছেন। আমাদের কাজ তাদের অভাব অভিযোগ মন দিয়ে শোনা এবং সমাধান করা।

এরপরই মুখ্যমন্ত্রী কাউন্সিলরদের বলেন, প্রত্যেককে অন্তত রাত ১০’ টা পর্যন্ত মানুষের ফোন ধরতেই হবে। কথা শুনতে হবে। আমরা সব দিকে নজর রাখছি।

এরপরদিনই অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বনগাঁ পুরসভায় গিয়ে দেখা গেল দিদির নিদান অনুযায়ী কাজশুরু হয়েছে৷

বনগাঁ পুরসভার ২২টি ওয়ার্ডের মধ্যে বেশির ভাগ ওয়ার্ডের কাউন্সিলরেরা তড়িঘড়ি এদিন সকাল থেকেই যে যার ওয়ার্ডের জমে থাকা কাজ সম্পূর্ণ করার তাগিদে ছুটছেন পাশাপাশি দুয়ারে-দুয়ারে গিয়েও স্থানীয় বাসিন্দাদের সমস্যার কথা শুনছেন৷ আবার অনেকেই দেখাগেল পুর প্রশাসক গোপাল শেঠের সামনে বসে নিজেদের ওয়ার্ডের কাজ কর্মের কথা আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে এলাকার মানুষের কথা শুনছেন মোবাইল ফোনে৷

৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দিলীপ মজুমদারের কথায় দিদির নিদান শুনতেই মনে মনে ঠিক করেনিয়েছিলাম সকাল সকাল ওয়ার্ডের মানুষের কাছে পৌঁছে যাব, এতোদিন যেতাম ঠিকই কিন্তু আজ থেকে মানুষের কাজে কোন রকম ফাঁকি রাখবনা ৷ আজ বহু মানুষের কাছে গিয়ে তাঁদের কথা এবং বিভিন্নরকম সমস্যার কথা শুনে সেইমত পুর প্রশাসককে জানিয়েছি যাতে জমে থাকা কাজগুলো দ্রুত সম্পূর্ণ করা যায়৷

পুর প্রশাসক গোপাল শেঠবলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পুরসভার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাবে উন্নয়নে কোনরকম বাঁধা বা সমস্যা এলে পুলিশ প্রশাসন সে বিষয় কড়াভাবে দেখবেন ৷ বনগাঁ শহরের যানজট মুক্ত করে সীমান্ত বাণিজ্যে গতি আনতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে ৷

স্থানীয় বিজেপি নেতা দেবদাস মন্ডল কটাক্ষ করে বলেন , বাড়ি বসে মোবাইল ফোনে সাধারণ মানুষের সমস্যা মিটবে কীভাবে আমাদের জানা নেই ,তবে ভোটের আগে মানুষকে দেখানোর জন্য এই সব পরিকল্পানা তা বনগাঁর মানুষের বুঝতে অসুবিধা নেই৷

প্রসঙ্গত,পুরসভাগুলি পরিচালনার দায়িত্বে এখন প্রশাসকমন্ডলী। বুধবারের বৈঠকে উপস্থিত পুর সচিব খলিল আহমেদকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আপনি সব পুরসভায় পর্যবেক্ষক নিয়োগ করুন। অবজারভাররা সরকারকে পুরসভার কাজকর্ম নিয়ে রিপোর্ট দেবেন। এক পুর প্রশাসক বলেন, দিদি পুরসভাগুলিতে এবার নবান্নের চোখ কান দিয়ে নজর রাখবেন।

তৃণমূলের পুর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নেতাদের ধারণা, পুরভোটের টিকিট বণ্টনে এই পর্যবেক্ষকের রিপোর্ট পরোক্ষ ভূমিকা নেবে। ভোট পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি পূরসভাগুলির কাজকর্মে নজরদারি চালাবেন।

মুখ্যমন্ত্রী পুরসভা ধরে ধরে কাজকর্ম পর্যালোচনা করেন বুধবার। রাস্তাঘাট, নিকাশি, জল সরবরাহের কাজ ভাল নয় বলে সাফ জানান। বলেন, এসব নিয়ে বিস্তর অভিযোগ আমার কাছে আছে। আমি সব নজর রাখছি।

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা নিয়ে বুধবার বিকেল থেকেই তৃণমূলের অন্দরে জোর জল্পনা শুরু হয়ে গেছে। দলের নেতা কর্মীদের ধারণা, মমতা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কাউন্সিলরদের কাজের বিচারই হবে প্রার্থী হওয়ার মাপকাঠি। তাই বুধবার মধ্যমগ্রামের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে কাজ নিয়েই বারে বারে সতর্ক করে দিয়েছেন। গত রবিবার দলের এক বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে প্রবীণ নেতা সুব্রত বক্সিও একই কথা বলেছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here