দেশের সময় , গোবরডাঙা: বিশ্বব্যাপী অতিমারীর কারনে আতঙ্ক আর অনেক স্বপ্নভঙ্গের শেষে দীর্ঘ ব্যবধানে এক ব্যতিক্রমী স্বপ্নপূরণের সন্ধ্যা উপহার দিল উদীচী গোবরডাঙা। সংস্থার উদ্যোগে সম্প্রতি আয়োজিত হয় ষষ্ঠ গোবরডাঙা থিয়েটার কার্নিভাল ২০২১ এর প্রথম পর্যায়ের ধ্রুপদী সঙ্গীতের অনন্য সন্ধ্যা।

নব নির্মিত গোবরডাঙা প্রমথনাথ বসু স্মৃতি টাউন হলে আয়োজিত সেই সন্ধ্যা সঙ্গীত পিপাসু শ্রোতা, দর্শক আর সঙ্গীত সাধকের মুখোমুখি আলাপচারিতায় সার্থক হয়ে ওঠে। বলাবাহুল্য, মার্গ সঙ্গীতের এমন বৃহৎ আয়োজন গোটা জেলায় বিরল। কার্নিভালের সূচনা করেন ড. হৈমন্তী চট্টোপাধ্যায় (পশ্চিমবঙ্গ সঙ্গীত, নাটক, নৃত্য একাডেমী), আশিস চট্টোপাধ্যায় (নাটককার ও নির্দেশক), কাজল ব্যানার্জী (অফিসার ইনচার্জ, গোবরডাঙা থানা), শংকর দত্ত ( সভাপতি, গোবরডাঙা পৌর উন্নয়ন কমিটি)। প্রত্যেকেই এই আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

অনুষ্ঠান শুরু হয় প্রখ্যাত তবলা বাদক উজ্জ্বল ভারতীর তিন তালের তবলা বাদনের মধ্যে দিয়ে।‌ হারমোনিয়ামে সহযোগিতা করেন হিরন্ময় মিত্র। দেবাদৃতা মুখার্জির সরস্বতী বন্দনা, রাগাশ্রয়ী গান ও ভজন এদিন সন্ধ্যার ব্যতিক্রমী নিবেদন ছিল, যা শ্রোতাদের মুগ্ধ করে। তবলা সহযোগিতায় অরুণাভ মুখোপাধ্যায় ও হারমোনিয়ামে সুব্রত ভট্টাচার্য দেবাদৃতার গানে অনন্য মাত্রা যোগ করে। এর পর ছিল সন্তুর। পরিবেশন করেন পন্ডিত সন্দীপ চ্যাটার্জী। তাঁর বাদনশৈলীতে দুর্গা রাগটি শ্রোতাদের আবিষ্ট করে রাখে। তবলায় সার্থক সঙ্গত করেন কৌশিক বন্দোপাধ্যায়।

এদিনের আয়োজন শেষ হয় স্বনামধন্য সেতার বাদক জয়ন্ত ব্যানার্জীর রাগ – মালগুন্জীর মধ্যে দিয়ে। দর্শকভরা প্রেক্ষাগৃহে শিল্পীরা তাঁদের বাদনে সংগীতের প্রতি ভালোবাসার সাক্ষী রইল সেদিনের সন্ধ্যা।

করোনা ত্রাসে সব আয়োজন যখন ক্রম সংকোচিত, সেই সময় এত বৃহৎ আয়োজন সংস্কৃতির শহর গোবরডাঙায় সৃষ্টিসুখকে আরও খানিকটা উদ্ভাসিত করে তোলে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন তাপস হালদার। কার্নিভাল আয়োজন প্রসঙ্গে উদীচীর কর্ণধার জয়দীপ বিশ্বাস বর্তমান সময়ে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত আয়োজনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। শীতের রাতে এত মানুষের ঢল আবারও প্রমাণ করলো ঐতিহ্যের শহর গোবরডাঙা এখনও আছে গোবরডাঙাতেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here