দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গণধর্ষণের পর নির্যাতিতা এবং তাঁর ৫ বছরের সন্তানকে ছুড়ে ফেলা হয়েছে খরস্রোতা নদীতে। এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে বিহারে। জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা প্রাণে বেঁচে গেলেও তাঁর সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে এই ঘটনা ঘটেছে বিহারের বক্সার জেলার ওঝা বারাওঁ গ্রামে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন সন্তানকে নিয়ে ব্যাঙ্কে যাচ্ছিলেন ওই মহিলা। রাস্তাতেই তাদের বাধা দেয় একদল দুষ্কৃতী। জোর করে ভয় দেখিয়ে অপহরণ করে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় একটি নির্জন জায়গায়। সেখানেই গণধর্ষণের শিকান হন মহিলা। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে জ্ঞান হারান তিনি। তখন প্রমাণ লোপাটের জন্য নির্যাতিতা ও তাঁর সন্তানকে একসঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে নদীতে ফেলে দেয় দুষ্কৃতীরা।
জলে পড়ার পর জ্ঞান ফেরে মহিলার। বাঁচার তাগিদে কোনও রকমে চিৎকার করেন তিনি। মহিলার আর্তনাদ শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। তাঁরাই ওই মহিলা ও তাঁর সন্তানকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। স্থানীয় বাসিন্দারাই পুলিশ এবং মহিলার পরিবারকে খবর দেন।
এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। নির্যাতিতা তাঁর বয়ানে পুলিশকে জানিয়েছেন, সন্তানকে নিয়ে ব্যাঙ্কে যাওয়ার সময় আচমকাই তাদের পথ আটকায় একদল অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী। তারা তাদের অপহরণ করে রাস্তার পাশে একটি নির্জন এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে ধর্ষণ করে দুষ্কৃতীরা। তারপর অচৈতন্য অবস্থায় সন্তানের সঙ্গে বেঁধে তাদের জলের ফেলে দেয়। তাঁর চিৎকার শুনে স্থানীয়রাই ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করেন। তবে শেষরক্ষা হয়নি। নিজে প্রাণে বাঁচলেও সন্তানকে বাঁচাতে পারেননি ওই মহিলা।
সূত্রের খবর, নির্যাতিতার স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জেরা করে বাকি দুষ্কৃতীদের খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। নির্যাতিতা অভিযুক্তদের কাউকে চেনেন কিনা, তাদের কারও সঙ্গে এই মহিলার কোনও শত্রুতা ছিল কিনা তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। নির্যাতিতার ও তাঁর স্বামীর সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ। যাঁরা ওই মহিলা ও তাঁর সন্তানকে উদ্ধার করেছিলেন তাঁদের সঙ্গে প্রয়োজনে কথা বলা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। আপাতত অভিযুক্তদের শনাক্তকরণের চেষ্টা চলছে। নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী পুলিশের স্কেচ আর্টিস্ট দিয়ে অভিযুক্তদের চেহারার সম্ভাব্য আদল বানানো হচ্ছে। এরপর স্থানীয় থানা ও এলাকায় তা ছড়িয়ে দিয়ে অভিযুক্তদের খুঁজে বের করার পরিকল্পনা করছেন তদন্তকারীরা।