দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ক্যানসারের লাস্ট স্টেজে লড়াই করছিলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই। অবেশেষে লড়াই ফুরোল। অবশেষে অবসান সব যন্ত্রণার। চলে গেলেন বাংলাদেশের ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ অ্যান্ড্রু কিশোর।

গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন অ্যান্ড্রু। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে তাঁর শরীরে নন-হজকিন লিম্ফোমা নামের এক জটিল প্রকৃতির ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের তাঁর চিকিৎসাও শুরু হয়েছিল। কয়েক মাস ধরে সেখানেই ছিলেন ডক্টর লিম সুন থাইয়ের অধীনে।

গত ১১ জুন রাতে সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরেন অ্যান্ড্রু কিশোর। ফিরেই রাজধানীর মিরপুরের বাসায় কয়েকদিন থাকার পরে নিরিবিলিতে সময় কাটানোর জন্য গ্রামের বাড়ি রাজশাহীতে চলে যান তিনি। সে সময়ে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, তিন মাস পর আবারও তাঁকে সিঙ্গাপুরে চেক আপের জন্য যেতে বলেছেন ডাক্তাররা।

কিন্তু সেই যাওয়া আর হল না। রাজশাহীর বাড়িতেই দিনকেদিন শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে তাঁর। ভর্তি করতে হয় হাসপাতালে। অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছিল তাঁকে। সোমবার সন্ধেয় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ৮ বার জাতীয় পুরস্কার বিজেতা গায়ক। ৮০ দশক থেকে শুরু করে টানা এক যুগের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে গানের জগতে দাপিয়ে রাজত্ব করেছেন অ্যান্ড্রু কিশোর।

ঘটনাচক্রে আগের রাতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যান্ড্রুর স্ত্রী ইতি কিশোর একটি পোস্ট করে জানিয়েছিলেন, সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ক্যানসারের ‘লাস্ট স্টেজে’ রয়েছেন অ্যান্ড্রু। খুব বেশিদিন হয়তো ‘দয়ালের ডাক’ উপেক্ষা করে ধরায় থাকতে পারবেন না তিনি। ঠিক তাই হল। যেন দয়ালের কাছেই ফিরে গেলেন অ্যান্ড্রু কিশোর।

ইতি তাঁর দীর্ঘ স্টেটাসে লিখেছিলেন অ্যান্ড্রু সিঙ্গাপুরের হাসপাতাল ছাড়ার আগে তাঁকে কী বলেছিলেন। অ্যান্ড্রু বলেছিলেন স্ত্রীকে, “তুমি আজই আমাকে রিলিজ করো, আমি আমার দেশে মরতে চাই, এখানে না, আমি কাল দেশে ফিরব। আমি তো মেনে নিয়েছি, সব ঈশ্বরের ইচ্ছা, আমি তো কাঁদছি না তুমি কাঁদছো কেন?”

কিশোর খুব স্বাভাবিক ছিল, মানসিক ভাবে আগে থেকে প্রস্তুত ছিল।”– লেখেন ইতি।

অ্যান্ড্রুর বিখ্যাত গান, “আমার সারাদেহ খেও গো মাটি, আমার চোখ দুটো তুমি খেও না, আমি মরে গেলেও তারে দেখার সাধ মিটবে না গো মিটবে না।” অ্যান্ড্রুর মরদেহ বিলীন হবে মাটিতেই। রাজশাহী চার্চের কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হবে আজ, মঙ্গলবার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here