দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রাজনীতিতে তিনি কী পা রাখবেন, নাকি অন্য কোনওভাবে তাঁর উদয় হবে? সেই নিয়ে সমানে জল্পনা চলছিল, কিন্তু রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সেই প্রশ্নে জবাবও দিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি প্রায় দেড় ঘণ্টা রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক শেষে জানালেন, ‘‘উনি রাজ্যপাল হয়ে আসার পরে সাক্ষাৎ হয়নি, তাই প্রথম রাজভবনে এসেছিলাম দেখা করতে। আসলে উনি কোনওদিন ইডেনে যাননি। ওনাকে ইডেন দেখাতে আজই নিয়ে যেতাম, কিন্তু এদিন প্র্যাকটিস হচ্ছিল বলে সম্ভব হয়নি। সামনের সপ্তাহেই ওঁকে আমি ইডেন দেখাব।’’
তারপরেই মিডিয়ার প্রশ্ন ছিল, এটা কী নেহাতই সৌজন্য সাক্ষাৎপর্ব? এককথায় নিজেই প্রশ্নটিকে টেনে নিয়ে মহারাজ জবাবও দিয়ে দিয়েছেন। তিনি তারপরে হেসেই সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘একেবারেই তাই, এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ, কোনও স্পেকুলেশন (জল্পনা) করবেন না বাবা!’’

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সমাবেশে এসে বলে গিয়েছিলেন, বাংলার কোনও ভূমিপুত্রই বিজেপি-তে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হবেন। সেই কথা বলার কয়েকদিনের মধ্যেই রাজভবনে সৌরভের যাত্রা নিয়ে অনেকেই নানা জল্পনার রং মেশাচ্ছিলেন। কিন্তু তিনি যেভাবে ‘বাপি বাড়ি যা..’ ঢঙে ওই প্রসঙ্গটি ওড়ালেন, তাতেও একটি প্রশ্ন উঠছে।
সৌরভ রবিবার ছুটির দিনে বিকাল ৪-৪০ মিনিটে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যান। তাঁদের মধ্যে সাক্ষাৎপর্বের সময় ছিল আধ ঘন্টা। কিন্তু দেড় ঘন্টা ধরে কী কথা হল, তা নিয়ে কৌতূহল ছিল বিস্তর। অনেকে এও বলছেন, এত দীর্ঘক্ষণ সময় ধরে নিশ্চয় ক্রিকেটের কথা হয়নি! আর কী কথা হয়েছে, সেই নিয়ে দুইপক্ষই কিছু জানাননি। যদিও সৌরভের সঙ্গে সাক্ষাৎপর্ব শেষে রাজ্যপালও নিজেই টুইট করে ইডেন গার্ডেন্স দেখতে যাওয়ার কথা লেখেন।
সৌরভ অবশ্য এদিন পৌনে সাতটার পরে রাজভবন থেকে বেরিয়ে ক্রিকেট নিয়েই কথা বলতে শুরু করেন। তিনি জানান, ‘‘ভারতীয় দল ৮২ রানে লিড নিয়েছে মেলবোর্ন টেস্টে, তাই জয়ের সুযোগ রয়েছে এই টেস্টে।’’ এমনকি দলের অধিনায়ক রাহানের সেঞ্চুরি নিয়েও বোর্ড সভাপতিকে বেশ তৃপ্ত দেখিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘রাহানের প্রশংসা তো সবাই করছে, আমারও ভাল লেগেছে ওর ব্যাটিং।’’

উল্লেখ্য, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে জল্পনা নতুন নয়। এমনকী এমনও শোনা গিয়েছিল, বিজেপির এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মুখ হবেন সৌরভই। যদিও এ নিয়ে প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেলেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বারবার তিনি বলে যাচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী হবেন এ রাজ্যেরই কোনও বঙ্গ সন্তান। আর এমন এক পরিস্থিতিতে সৌরভের রাজভবনে যাওয়া বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

অপরদিকে, সৌরভের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কও যথেষ্ট ভালো। কিন্তু রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত প্রায় প্রতিদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেখানে রাজ্যপালের সঙ্গে সৌরভের এই সাক্ষাৎ শাসক দলকে চিন্তায় ফেলতে পারে নিঃসন্দেহে। এদিন বিকেলে চারটে চল্লিশে রাজভবনে ঢোকার পর প্রায় দু’ঘণ্টা ছিলেন সৌরভ। এই দু’ঘণ্টা কি শুধুই ইডেন গার্ডেন্স নিয়ে আলোচনা আর সৌজন্যতার মোড়কে আলোচনা? উত্তর খুঁজছে বাংলার রাজনৈতিক মহল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here