দেশের সময় পেট্রাপোল: লকডাউনের ফলে দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ ছিল ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাব মতো দুই দেশের বাণিজ্য আবার চালু করার প্রস্তাবে সায় দিয়েছে পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং সংগঠন। প্রস্তাব অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব বাজায় রেখে ৩৭ দিন পর খুলে দেওয়া হল ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। পেট্রাপোলের জিরো পয়েন্টে পণ্য খালির কাজ ফের চালু হল বৃহস্পতিবার।

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়।

কয়েক দিন আগেই বাংলাদেশ,নেপাল, ভুটান, সীমান্তের সমস্ত বাণিজ্য করিডর দিয়ে অত্যাবশ্যক পণ্য চলাচল শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তার প্রেক্ষিতে

পেট্রাপোল স্থল বন্দর দিয়ে অত্যাবশ্যক পণ্য রফতানির কাজ শুরু করার উদ্দেশ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন । গত মঙ্গলবার পেট্রাপোলে বৈঠক করলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী, বনগাঁর পুলিশ সুপার তরুণ হালদার, রাজ্য সরকার নিযুক্ত উত্তর ২৪ পরগনা জেলার নোডাল অফিসার সঞ্জয়কুমার থাড়ে, বনগাঁর মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায়। ছিলেন শুল্ক দফতর ও বিএসএফের কর্তারা। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ক্লিয়ারিং এজেন্ট সংগঠনের প্রতিনিধি এবং পণ্য রফতানি ও আমদানিকারী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও।

পেট্রাপোল জিরো পয়েন্টে চলছে ভারতের ট্রাক থেকে পণ্য খালি করার কাজ-দেশের সময়৷

উল্লেখ্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাব মতো দুই দেশের বাণিজ্য আবার চালু করার প্রস্তাবে সায় দিয়েছে পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং সংগঠন। প্রস্তাব অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব বাজায় রেখে ৩৭ দিন পর খুলে দেওয়া হল ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। পেট্রাপোলের জিরো পয়েন্টে পণ্য খালির কাজ ফের চালু হল শুরুবার।

প্রশাসন সূত্রের খবর, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের উচ্চপদস্থ কর্তারা এ ব্যাপারে বৈঠক করেছেন। পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং ও ব্যবসায়ী সমিতিগুলিকে বৈঠকের পরে জানানো হয় যে তাঁরা চাইলে পেট্রাপোল ও বেনাপোলের জিরো পয়েন্টে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আমদানি ও রফতানি চালু করতে পারে। সেই মতো গত মঙ্গলবার সকালে বেনাপোলের ক্লিয়ারিং ব্যবসায়ী ও কাউন্টার সমিতির সঙ্গে বৈঠক করেন পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং ও ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিরা। সেখানে ভারতের পক্ষ থেকে জিরো পয়েন্টে পণ্য খালি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তারপর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বুধবার ইতিবাচক উত্তর আসে সেই মতো আজ বৃহস্পতিবার

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ফের চালু হল। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাব মতো দুই দেশের বাণিজ্য আবার চালু করার প্রস্তাবে সায় দিয়েছে পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং সংগঠন। প্রস্তাব অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব বাজায় রেখে ৩৭ দিন পর খুলে দেওয়া হল ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। পেট্রাপোলের জিরো পয়েন্টে পণ্য খালির কাজ ফের শুরু হল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে৷

পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, ‘‘সীমান্তে আটকে থাকা ট্রাকগুলির মধ্যে প্রায় ৪০০টি ট্রাকে অত্যাবশ্যক পণ্য রয়েছে বলে কেন্দ্রের দেওয়া তালিকা থেকে জানা গেছে। আজ ১টি ভুট্টা ও ১টি পাট বীজ বোঝাই ট্রাক খালি করা সম্ভব হয়েছে কোন রকমে, কারণ বাংলাদেশের গুটি কয়েক শ্রমিক এদিন পণ্য খালিকরার কাজ করেছেন,ফলে প্রায় ২৫০০ পণ্য বোঝাই ট্রাক খালি করতে কতদিন লাগবে এখনই সে কথা বলা সম্ভব নয়৷ সবচেয়ে বড় সমস্যা রয়েছে ভারতের কোন শ্রমিক করোনার আতঙ্কে কাজ করতে চাইছেনা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে৷তাই এখন কাজটা কোন মতে শুরু হল বলা যেতে পারে৷

প্রসঙ্গত গত মঙ্গল বার প্রশাসনের বৈঠকে ‘জিরো পয়েন্টে’ এর পরামর্শ দিয়েছিলেন পেট্রাপোল এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পরিতোষ বিশ্বাস। তাঁর কথায় , ‘‘বৈঠকে বলেছিলাম, সীমান্তের জিরো পয়েন্টে এ দেশের ট্রাক থেকে বাংলাদেশের ট্রাকে পণ্য তুলে নেওয়া হোক।’’ যদিও জিরো পয়েন্টে পণ্য ওঠানো-নামানো কাজের পরিকাঠামো কতটা রয়েছে, তা নিয়ে যথেষ্ঠ সংশয় প্রকাশ করেছিল সংশ্লিষ্ট মহল।  সীমান্তের স্থানীয় মানুষও বিশেষ ভাবে চিন্তিত,যে যদি এখন সীমান্ত খুলে দেওয়া হয় ওদেশের মানুষ এদেশে প্রবেশ করবে আর তাতেই বিপদ বাড়বে, কারণ সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারছেন সে দেশের করোনা পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ, তাই তাঁরা চাননা কোন ভাবে ওপারের শ্রমিকরা এ পারের শ্রমিকদের সঙ্গে এই মুহুর্তে কাজ করুক। তবু দেশের বাণ্যিজ্যের স্বার্থে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশের শ্রমিকরা কাজ শুরু করার জন্য বেনাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট সংগঠন কে পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট সংগঠনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বার্তা জানানো হয়েছে৷ পাশাপাশি দু’দেশের সরকারের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি সংগঠনের পক্ষ থেকে, পেট্রাপোল বন্দরের শ্রমিক,সহ ট্রাক চালক ও খালাসি এবং সমস্ত কর্মীদের স্থাস্থ্য পরীক্ষার ব্যাবস্থা করার জন্য ।বিশেষ ভাবে করোনা সংক্রান্ত বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখলে এশিয়ার বৃহত্তম এই স্থল বন্দর ফের অর্থনৈতিক ভাবে দেশকে সমৃদ্ধ করবে।

প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, এই সমস্ত বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত বিষয়টিও এ ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’’ 

এক রফতানিকারী জানান,অত্যাবশ্যক পণ্য রফতানির দাবির পাশাপাশি,আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তাঁরা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন,  আটকে থাকা ট্রাকের মধ্যে মালপত্র নষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘদিন ট্রাক আটকে থাকায় ট্রাকগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এখনই ট্রাকগুলি বেনাপোলে পাঠাতে না পারলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা পরবর্তী সময়ে তা নিতে অস্বীকার করতে পারেন।  তা ছাড়া, পার্কিংয়ে ট্রাক থাকায় রোজ ট্রাক প্রতি ফি বাবদ ১৪০০-১৫০০ টাকা করে রফতানিকারীদের দিতে হবে। এই পার্কিং ফি যদি কিছুটা কমানো যেত তাহলে একটু হলেও আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কম হতো বলে মনে করছেন তাঁরা৷

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য ৩৭ দিন পর খুলে দেওয়া হল ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। পেট্রাপোল খুলে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আশঙ্কায় আছেন, এর ফলে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাঁর আশঙ্কার কথা যদিও বনগাঁ সীমান্তের প্রায় প্রতিটি মানুষের মুখেও শোনা যাচ্ছে৷ বনগাঁর প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল শেঠ বলেন এখনও পর্যন্ত করোনা সংক্রমণের কোন খবর বনগাঁয় নেই তবে সীমান্ত খুলে যাওয়ায় চিন্তা বাড়ল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here