দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ শহিদ মিনারের মঞ্চ থেকেই গতকাল তাঁকে বড় স্বীকৃতি দিয়েছেন অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা সর্বভারতীয় বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি জনসভাতেই বলেছেন, মুকুল রায় এমন নেতা যিনি লোকসভা ভোটের সময়ে দলের আহ্বায়ক পদে থাকায় বাংলায় ১৮ টি আসন জিতেছে দল।

রবিবার গভীর রাতেই দিল্লি ফিরে গিয়েছেন অমিত। কিন্তু তার পর থেকেই রাজ্য বিজেপিতে জোর আলোচনা যে এ বার সংগঠনে বড় পদ পেতে পারেন মুকুলবাবু। তবে রাজ্যে নেতাদের কাছে এটুকু পরিষ্কার যে বাংলা বিজেপিতে নয়, মুকুলবাবু পদ পেতে পারেন সর্বভারতীয় সংগঠনে।

তৃণমূল ছেড়ে মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন আড়াই বছর আগে। তার পর জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য করা ছাড়া সংগঠনে কোনও পদ পাননি তিনি। লোকসভা ভোটের সময়ে তাঁকে যে আহ্বায়ক করা হয়েছিল, সেটিও তথাকথিত সাংগঠনিক পদ বলা যায় না। সম্প্রতি পুরভোট পরিচালনার জন্য বাংলায় বিজেপি যে কমিটি গড়েছে তার মাথায় দিলীপ ঘোষ থাকলেও আহ্বায়ক করা হয়েছে মুকুল রায়কে। এতটা গুরুত্ব দেওয়া হলেও সেটাও অবশ্য কোনও সাংগঠনিক পদ নয়। ঘটনা হল, মুকুলবাবু বিজেপিতে কোনও পদ না পাওয়ায় যেমন তৃণমূলের একাংশের মধ্যে বিজাতীয় আনন্দ রয়েছে, আবার বিজেপিতে রক্ষণশীলদের কেউ কেউ তাতে খুশি।
কিন্তু সূত্রের মতে, বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বের কিন্তু মুকুলবাবু সম্পর্কে ধারণা ভিন্ন। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কলকাতা সফরে আসার সময়ে দেখা গিয়েছে বিমানবন্দরে মুকুল রায়কে ডেকে আলাদা করে কথা বলছেন। অমিত শাহর সঙ্গেও মুকুলবাবুর নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনেকেই আন্দাজ করেন, বাংলায় নিচুতলার রাজনৈতিক কর্মীদের সঙ্গে মুকুলবাবুর যে যোগাযোগ ও ধারনা রয়েছে তা দলে আর কারও নেই।
বিজেপি সূত্রে খবর, রবিবার রাতে নিউটাউনের এক অভিজাত হোটেলে বসে অমিত শাহ, বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয় প্রমুখ নেতারা দীর্ঘ আলোচনা করেন। সেখানেও ঠিক হয়, একুশের ভোট পর্যন্ত দলের কৌশল নির্ধারণে মুকুলবাবুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে। বস্তুত মুকুলবাবুর পদ পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে তার পরই বিজেপিতে জল্পনা ছড়িয়েছে।

এখন প্রশ্ন হল, কী ধরনের পদ পেতে পারেন মুকুলবাবু।

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মুকুল রায়। রাজ্যসভার দুই মেয়াদের সাংসদ ও স্বল্প সময়ের জন্য হলেও প্রথমে কেন্দ্রে জাহাজ প্রতিমন্ত্রী ও পরে রেলমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ফলে সর্বভারতীয় সংগঠনে তাঁকে সম্পাদক করা হলে অমর্যাদা হতে পারে। সেক্ষেত্রে তাঁকে সহ সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক করা হতে পারে বলে অনেকের মত।

এ ব্যাপারে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “দলের নতুন রাজ্য কমিটির ব্যাপারে শুধু জানি। খুব শিগগির দিল্লি থেকে তা ঘোষণা করা হবে। কেন্দ্রীয় সংগঠনের ব্যাপারে সর্বভারতীয় স্তরের নেতারা বলতে পারবেন”।
মুকুলবাবু এ দিন দলীয় কাজে সিউড়ি গিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “কাকে কী পদ দেওয়া হবে সেটা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অগ্রাধিকারের বিষয়। সুতরাং, এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা আমার এক্তিয়ার বহির্ভূত”।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here