দেশের সময় , বনগাঁ: বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে ইতিমধ্যে জেলায় জেলায় সভা শুরু করে দিয়েছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। বুধবার বনগাঁর গোপালনগর হাইস্কুলের মাঠে সভা করলেন তিনি। আর সেখানে মমতা বন্দোপাধ্যায় জনগণের কাছে রীতিমতো আর্জি জানালেন, ‘এত প্রতিকূলতার মধ্যেও আমি যা কাজ করেছি, আর কেউ করতে পারবে না। পারলে আমি সরে যাব।’ সেইসঙ্গেই তিনি বলেন, ‘আমাকে দুঃখ দিলে আমি অভিমান করে সরে যেতে পারি।’

কেন্দ্রের মোদী সরকারকেও এদিন একহাত নিতে ছাড়েননি তৃণমূল নেত্রী। বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার এক টাকা দেয় না। বঞ্চনা আর লাঞ্ছনা চলছে। এখনও ৮৫ হাজার কোটি টাকা পায় আমাদের সরকার। জিএসটি-র টাকাটা দিতে বলুন। অনেক কষ্ট করে সরকার চালাতে হচ্ছে। তার মধ্যেও সব চাহিদা মেটাচ্ছি। কিন্তু আমাদেরও তো একটা সীমাবদ্ধতা আছে।’ সেইসঙ্গে নানা আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘পথঘাট আটকে আন্দোলন করতে হবে না। আমার দফতরে চিঠি লিখে জানান, যা করার ঠিক করব।’

উল্লেখ্য, বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রটি বিজেপির দখলে। উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যে বনগাঁ মহকুমাই মতুয়া প্রভাবিত। সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মতুয়া উন্নয়নে বোর্ড গঠন-সহ দশ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করেছেন। গোপালনগরে মমতার সভাকে ঘিরে জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। গত লোকসভা নির্বাচনে উদ্বাস্তু-সহ মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। বনগাঁয় জয়ী হয়েছিলেন বিজেপির শান্তনু ঠাকুর। কিন্তু নাগরিকত্ব আইন পাস হওয়ার পরেও তা কার্যকর করার প্রক্রিয়া এখনও শুরু করতে পারেনি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ খোদ বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনুও৷

এই পরিস্থিতিতে বনগাঁর গোপালনগরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সভা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। রাজ্য সরকারের তরফে মতুয়াদের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে পাশে থাকার বার্তাও দেন তিনি। এদিন তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ করে বলে যাচ্ছি, আমার এই কাজ আর কেউ করতে পারলে একদিনের মধ্যে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেব। একজনও যদি করে দেখাতে পারে! আমাকে দুঃখ দেবেন না। আমাকে দুঃখ দিলে আমি অভিমানের সঙ্গে সরে যেতে পারি। মনে হতে পারে, আমার থাকাই উচিত নয়। কিন্তু মনে রাখবেন, ৮ বছরে যা করেছি পৃথিবীর আর কোথাও কেউ করে দেখাতে পারবেন না।

দলনেত্রীর বক্তব্য এলাকাবাসীর ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে সভাস্থল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূর পর্যন্ত মাইকের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মোট ২৫০টি মাইক লাগানো হয়েছিল। গোপালনগর স্টেশন-সহ একাধিক জায়গায় জায়ান্ট স্ক্রিন বসিয়েছিল তৃণমূল। সভায় এসে কেউ আচমকা অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য এক হাজার স্বেচ্ছসেবকের দল তৈরি করা হয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাকে কেন্দ্র করে দলীয় কর্মীদের মধ্যে উৎসাহও ছিল চরমে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here