দেশের সময়: প্রার্থীদের নিয়ে চলছিল ক্ষোভ বিক্ষোভ। কিন্তু আদৌ প্রার্থী বদল করা হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত নেবেকি দল তা নিয়ে কর্মী সমর্থকদের মধ্যেও চলছিল চাপানউতড়। আমডাঙ্গা ও অশোকনগর সহ তৃনমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরেই উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক জায়গায় পাওয়া গিয়েছিল বিক্ষোভের আঁচ। প্রার্থীর নাম ঘোষণার পর বিক্ষোভ চরমে উঠেছিল। আমডাঙ্গা ও অশোকনগর বিধানসভার কেন্দ্রের প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষের আঁচ ভাবাচ্ছিল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকেও। জেলা তৃণমূলের অন্দরে জল্পনা চলছিল, এই দুটি কেন্দ্রে প্রার্থী বদলের বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। মধ্যমগ্রাম জেলা তৃণমূলের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক  জানিয়েছিলেন, ‘দল চাইলে প্রার্থী বদল হবে। হলোও তাই

দলীয় কোন্দলের জেরে উত্তেজনার অশোকনগর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী বদল করল তৃণমূল। এই ঘোষণার পর নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন এলাকার তৃণমূল নেতা, কর্মীরা।

বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক ধীমান রায়কে এবারেও প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। রাজ্য নেতৃত্বের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর থেকেই দলের মধ্যে কোন্দল শুরু হয়। প্রথমে এই বিধানসভার গ্রামাঞ্চলে এই বিক্ষোভ মাথাচাড়া দেয়। এরপর তাঁর আঁচ পরে অশোকনগর পুরসভা এলাকাতেও। গ্রাম অঞ্চলের তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, আমপান থেকে করোনা- কোন সময়েই গ্রামের মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি ধীমান রায়কে। ফলে এমন মানুষকে তারা আর প্রার্থী হিসেবে মেনে নিতে পারছেন না। একই পরিস্থিতি তৈরি হয় অশোকনগর কল্যাণগড় পুর এলাকাতেও।

এখানে দেখা যায় দেওয়ালে তৃণমূলের দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানালেও ঘোষিত প্রার্থীর নাম দেওয়ালে না লিখে সেখানে ফাঁকা রেখে দেওয়া হয়েছে। পুর এলাকার কর্মীদেরও একই বক্তব্য, প্রার্থী বদল চাই। সংবাদমাধ্যমে এই নিয়ে খবর সম্প্রচারিত হতেই নড়েচড়ে বসে তৃণমূল নেতৃত্ব। শেষ পর্যন্ত প্রার্থী বদল করে ধীমান রায়ের জায়গায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নারায়ন গোস্বামীকে প্রার্থী করা হয়েছে অশোকনগর কেন্দ্রে।

পাশাপাশি রাজ্যের আমডাঙ্গা, কল্যানী এবং দুবরাজপুর কেন্দ্রের প্রার্থীও বদল করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। এ ব্যাপারে নারায়ন গোস্বামী বলেন, এটা দলের সিদ্ধান্ত। দল যে দায়িত্ব আমাকে দিয়েছে, তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে নিজের জয় সুনিশ্চিত করব।

উল্লেখ্য,আমডাঙ্গা বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল দু’বারের বিজয়ী প্রার্থী রফিকূর রহমানের বদলে প্রার্থী করা হয় বাম আমলের প্রাক্তন মন্ত্রী চিকিৎসক মোরতাজা হোসেনকে। অন্যদিকে অশোকনগর কেন্দ্রে টিকিট পেয়েছিলেন গত দু’বারে তৃণমূল বিধায়ক ধীমান রায়। এই দুটি কেন্দ্রের প্রার্থী বদল নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে টায়ার জ্বলিয়ে বিক্ষোভ দেখান তৃনমূল কর্মী সমর্থকেরা।

আমাডাঙ্গায় বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল রফিকূর রহমানকেই প্রার্থী করতে হবে। হলোও তাই৷ অন্যদিকে অশোকনগরে ধীমান রায়ের বদলে বৃন্দাবন ঘোষকে প্রার্থী করার জন্য বিক্ষোভে সামিল হয়েছিল তৃনমূল কর্মীদেরই একাংশ। সেখানে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নারায়ন গোস্বামীকে প্রার্থী করা হয়েছে অশোকনগর কেন্দ্রে।

কর্মীদের অভিযোগ ছিল, বছরের অন্যান্য সময় সাধারণ মানুষের পাশে থাকেন না ধীমান রায়। যোগাযোগ রাখেন না কর্মীদের সঙ্গেও । এই কারণগুলিকে সামনে রেখেই তাঁর প্রার্থীপদ বাতিলের দাবিতে সরব হয়েছিলেন তৃণমূল-কর্মীরা। এই নিয়ে বিক্ষোভের পাশাপাশি একাধিক জায়গায় প্রার্থী বদলের পোষ্টারও পড়েছিল অশোকনগরে।

বিক্ষোভের প্রভাব পড়তে পারে ভোটবাক্সে, মনে করছিলেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। এরপরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, তবে কী কর্মী-সমর্থকদের একাংশের দাবি মেনে বদল করা হবে প্রার্থী! এই জল্পনার মধ্যেই তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেছেন, ‘সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে প্রচারে নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা। প্রার্থী বদল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল।’ পাশাপাশি প্রত্যেকটি কেন্দ্রে বুথ ভাগ করে প্রচারে নামতে চলেছে তৃণমূল, জানান জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেন, এবার এই দুই কেন্দ্রে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে দল৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here