দেশেরসময়:–২০১১ তারপর ২০১৪ এমনকী ২০১৬তেও তিনি ছিলেন মমতার নির্বাচনী কৌশলের প্রধান কারিগড় হয়ে।তিনি মুকুল রায়,এ রাজ্যের নির্বাচনী কৌশলে যিনি সবচেয়ে ধুরন্দর বলে বিবেচিত হন।২০১৯ এ মমতা যখন লোকসভা নির্বাচনে তাঁর দলকে প্রতিদ্বন্দিতা করতে নামাবেন,তখন সেই মুকুল রায় যিনি কিনা একসময় মমতার প্রধান ভরসা ছিলেন তিনি মমতারই প্রতিপক্ষ হিসেবে থাকবেন।১৯ এর লোকসভা ভোটের জন্য মমতাকে তাই তাঁর নির্বাচনী সেনাপতি নতুন করে ঠিক করতে হবে।আর সেই কাজটা তৃণমূল সুপ্রিমো ইতিমধ্যেই ঠিক করে ফেলেছেন।১৯ এ মমতার নির্বাচনী সেনাপতি হতে চলেছেন তমলুকের দাপুটে নেতা ও রাজ্যের পরিবহণ দপ্তরের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।সূত্রের খবর এই মূহুর্তে অভিষেকের পর মমতা যাকে সবচেয়ে বেশী ভরসা করেন তাঁর নাম শুভেন্দু অধিকারী।মাঝে সম্পর্কে কিছুটা শিথিলতা এলেও এখন মমতার প্রধান ভরসা শুভেন্দু।মুকুল না থাকায় এবার ভোট যুদ্ধের সেতাপতি শুভেন্দুই।অন্য অনেকের চেয়ে মমতার ভরসা শুভেন্দুর উপরই বেশী কারণ শুভেন্দু শুধুমাত্র মমতা ভজনায় ভরসা করে রাজনীতি করেন না।তৃণমূল নেতাদের মধ্যে একমাত্র শুভেন্দুরই নিজস্ব সংগঠন তৈরির ক্ষমতা ও ক্যারিসমা আছে।শুভেন্দুই একমাত্র নেতা যিনি মমতার ছবি না টাঙিয়েও ভোটে জিতে আসতে পারেন।অনেকে এমনটাও বলেন যে শুভেন্দুর এই গুণ থাকার কারণেই মমতা একসময় তাঁকে কোণঠাসা করতে চেয়েছিলেন।মমতা একসময় শুভেন্দুকে নিজের প্রতিস্পর্ধি শক্তি হিসেবে বিবেচনা করতেন।এখন মমতার ধারণা অনেকটা বদলেছে।বিষেশ করে মুকুল রায় না থাকায় নির্বাচনী ফাঁকফোকর ঢাকার কাজে তিনি শুভেন্দুকেই বেছে নিয়েছেন।শুধু তাই নয় অন্যদল ভেঙে তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে,ও কংগ্রেস, সিপিএমের সংগঠনকে ভেঙে দিতে শুভেন্দুকেই বার বার ব্যবহার করা হয়েছে।কংগ্রেসের গড় বলে পরিচিত এবং অধীর চৌধুরির খাস তালুক মুর্শিদাবাদে যে ভাবে শুভেন্দু একের পর এক কংগ্রেস বিধায়কদের তৃণমূলে টেনে নিয়ে কংগ্রেস ও অধীর চৌধুরীকে একেবারে শক্তিহীন করে দিয়েছেন তাতে মমতা বড়ই খুশি হয়েছেন শুভেন্দুর উপর।গোটা মেদিনীপুর জেলায় সংগঠন দেখার পাশাপাশি শুভেন্দু যে ভাবে ভোটেও তৃণমূলকে সাফল্য এনে দিয়েছেন তাতে মমতার প্রধান সেনাপতি হিসেবে শুভেন্দুকে বেছে নিতে কোন অসুবিধা হয় নি।শুভেন্দুর সাংগঠনিক দক্ষতা ও নির্বাচনী কৌশল দেখে মমতা বিশ্বাস করছেন মুকুল রায়ের পর তিনিই হতে পারেন তৃণমূলের যথার্থ কান্ডারি।শোনা যাচ্ছে দলের একান্ত বৈঠকে দলনেত্রী ইতিমধ্যেই এই বার্তা দিয়ে দিয়েছেন যে আগামী নির্বাচনে যাবতীয় কৌশল নির্ধারণের ক্ষেত্রে সকলে শুভেন্দুকে মেনে চলবেন।দলনেত্রীর ভরসার কথা জেনে শুভেন্দুও ইতিমধ্যেই তাঁর কৌশল সাজানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন।তিনি এবার সর্বত্র বলে বেড়াচ্ছেন এবার ৪২ এ ৪২টাই চাই।এই লক্ষ্যে শোনা যাচ্ছে শুভেন্দু জেলায় ইতিমধ্যেই একাধিক বৈঠক সেরে ফেলেছেন।ছোট ছোট কোর কমিটি করে তাদের উপর নির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয়ে গেছে।শুভেন্দু সময় সময় সেই রিপোর্ট নিয়ে পর্যালোচনায় বসবেন বলে খবর।এর পরেও শুভেন্দু এবার পাখির চোখ করছেন অধীর চৌধুরির আসনটা ছিনিয়ে নিতে।এর জন্য পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলেছেন শুভেন্দু।অধীর গত লোকসভায় তাঁর আসনে রেকর্ড ভোটে হারিয়ে দিয়েছিলেন মমতার প্রিয় পাত্র গায়ক ইন্দ্রনীল সেনকে।শুভেন্দু এবার সেখানেই অধীরকে হারাতে বদ্ধপরিকর।নানা কৌশল সাজাচ্ছেন শুভেন্দু সে দিকে লক্ষ্য রেখে।শোনা যাচ্ছে দলনেত্রীকে শুভেন্দু আশ্বস্ত করেছেন এবার ৪২ এ ৪২ ই হয়ে যাবে।শুভেন্দুর কৌশল সার্থক হলে মমতা যে তাঁকে আর বড় দায়িত্ব দেবে তা বোঝাই যাচ্ছে।তবে কেউ কেউ কিন্তু এই আশঙ্কাও করছে শুভেন্দুর সাফল্যই শুভেন্দু বিপদ হয়ে যাবে না তো?কারণ শুভেন্দুই তো তৃণমূলে একমাত্র নেতা যিনি নিজের পায়ের তলার মাটি নিজেই তৈরি করে নিতে পারেন,একটা নির্দিষ্ট এলাকায় তাঁর জনপ্রিয়তা মমতার চেয়ে কম নয়,তৃণমূলে এমন নেতা কিন্তু একটাও নেই যিনি মমতার আশির্বাদ বা অনুপ্রেরণা ছাড়াও নিজের রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিঁকিয়ে রাখতে পারেন।তাই শুভেন্দুর অভাবনীয় সাফল্য তাঁর বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে শুভেন্দুর একান্ত শুভানুধ্যায়ীদেরও আশঙ্কা।তবে তৃণমূলের সেনাপতি এখন সেসব নিয়ে ভাবছেন না তাঁর এখন একটাই টার্গেট লোকসভায় এ রাজ্যের ৪২টা আসন।সে দিকে তাকিয়েই ঘোড়া ছুটিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের নতুন সেনাপতি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here