দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ নার্সিং হোম এর বদলে সরকারি হাসপাতালে রোগীকে কেন ভর্তি করা হয়েছে এই রাগে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক প্রসূতিকে চিকিৎসা না করে ভর্তির কয়েক ঘন্টার মধ্যে ছুটি দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।

বনগাঁ হাসপাতালের এই ঘটনায় বুধবার অভিযুক্ত চিকিৎসকের চেম্বারে ভাঙচুর চালালেন রোগীর পরিজনেরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়৷পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।অভিযোগ ১৮ মার্চ শিউলি মন্ডল নামে এক প্রসূতি অসুস্থ হয়ে পড়ায় ওই দিন সকাল ১১ টা নাগাদ তাকে বনগাঁ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এর আগে তিনি বনগাঁ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক মহিতোষ মণ্ডলের চেম্বার এ দেখাতেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে তার পরিবারের লোকেরা চিকিৎসকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি নার্সিংহোমে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ওই চিকিৎসক এমনই অভিযোগ পরিবারের। আর সেই কারণে এদিন বিকেলে কোনরকম চিকিতসা না করেই ছুটি লিখে দেন ওই চিকিৎসক।

রাতে হাসপাতালে রাউন্ডে এসে ওই রোগীকে দেখে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। অভিযোগ তিনি নাকি তখন বলেন এখানে পড়ে থাকলেও তার কোন চিকিৎসা তিনি করবেন না। এই অবস্থায় ওই দিন রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ ওই রোগীকে হাসপাতাল থেকে বের করে বনগাঁর একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় সেখানকার চিকিৎসায় একটু একটু করে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি।

এদিকে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকের এরকম ব্যবহারে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন রোগীর পরিজনেরা। বুধবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ তারা ওই চিকিৎসকের চড়কতলা চেম্বারে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন বনগাঁ পুরসভার দুই কাউন্সিলর।

তাদের একজন দিব্যেন্দু বৈরাগী জানান, সরকারি হাসপাতালে থাকা সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সরকারি হাসপাতালের একজন চিকিৎসক কি করে এক রোগীকে বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানোর জন্য জোর করতে পারেন তা আমরা খতিয়ে দেখছি। সত্যি যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে তা তিনি অন্যায় করেছেন।

উল্লেখ্য, সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগীদের বাইরের বেসরকারি নার্সিংহোমে পাঠিয়ে দেয়ার ব্যাপারে একশ্রেণীর চিকিৎসক জোর করেন এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ফলে অনেক সময় চিকিৎসকদের জোড়াজোড়িতে ক্ষমতা না থাকলেও বেসরকারি নার্সিংহোমে রোগীদের নিয়ে যেতে বাধ্য হন তাদের বাড়ির লোকেরা। এ ব্যাপারে সরকারি হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন রোগীর আত্মীয়রা।

এই ঘটনার ব্যাপারে চিকিৎসক মহিতোষ মণ্ডল এর বক্তব্য, ওই প্রসূতির শারীরিক অবস্থা ভালো থাকায় তাকে ছুটি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু তারপরেও রোগীর আত্মীয়রা আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন এবং ওই রাতেই ছুটি দিয়ে দেয়ার জন্য জোর করেন। কিন্তু আমি রাতে রোগীকে ছুটি দিয়ে দেয়ার পক্ষপাতি ছিলাম না। তাই রাতে তারা জোর করে ছুটি নিয়ে চলে যান। তারপরে পরিকল্পিতভাবে এ দিন আমার চেম্বার এবং আমার ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এর বিরুদ্ধে আমি থানায় অভিযোগ জানাচ্ছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here