দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ এক লাফে ১১৯ জন বেড়ে গেল করোনা পজিটিভের সংখ্যা! আজ, শুক্রবার সকালে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এদেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭২৭। তার মধ্যে অবশ্য ৪৭ জন অন্য দেশের নাগরিক। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের। তবে দেশের রোগীদের মধ্যে ৪২ জন সেরেও উঠেছেন। চিকিৎসা পর্ব ও কোয়ারেন্টাইন পর্ব পার করে তাঁদের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ স্টেজ থ্রি-তে এখনও না পৌঁছলেও, তা যে কোনও সময় ঘটতে পারে। অর্থাৎ সামাজিক সংক্রমণ শুরু হয়ে যেতে পারে। এ পর্যন্ত দেশে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকেরই কোনও না কোনও ভাবে বিদেশ-যোগ রয়েছে। হয় তাঁরা সম্প্রতি বিদেশ থেকে ঘুরে এসেছেন, বা বিদেশ থেকে আসা কোনও মানুষের সংস্পর্শে এসেছেন।
কিন্তু এমন কেউ যদি আক্রান্ত হন, যিনি গত কয়েক দিনে কোনওভাবেই কোনও বিদেশি মানুষের সঙ্গে মেশেননি, তাহলে সেটাই সামাজিক সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করার অর্থাৎ স্টেজ থ্রি-র প্রথম ধাপ। এই অবস্থায় সংক্রমণ রুখতে সামাজিক মেলামেশা বন্ধ করা জরুরি। তাই সারা দেশের সবকিছু বন্ধ করে লকডাউন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
২১ দিনের এই লকডাউনের তৃতীয় দিন আজ, শুক্রবার। ইতিমধ্যেই সাধারণ মানুষের জন্য ১.৭ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। খাদ্য সুরক্ষা এবং অত্যাবশ্যকীয় পণ্যসামগ্রী কেনার সুবিধায় এই টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। জানিয়েছে, দেশের এই জরুরি সময়ে কেউ পেটে খিদে নিয়ে থাকবে না।
ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের জন্য উদ্বিগ্ন বাংলা ও বিহার। এই দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অন্য রাজ্যগুলিকে চিঠি দিয়ে শ্রমিকদের সাহায্য করতে বলেছেন। ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকদের জন্য ১০০ কোটি টাকার প্যাকেজও ঘোষণা করেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী।
অন্য দিকে বৃহস্পতিবারই করোনা নিয়ে টেলিকনফারেন্সে বসেছিল জি-২০ দেশগুলি। তারা জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় ৫ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ৩ কোটি ৮২ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা ঢালবে বিশ্ব অর্থনীতিতে। যাতে করোনা ধাক্কা সামলে সবাই ফের মাজা শক্ত করে দাঁড়াতে পারে।
যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অর্থাৎ হু-এর ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রস অ্যাডানম গ্যাব্রিসিয়াস জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসে সংক্রমণ ঠেকাতে শুধু লকডাউনই যথেষ্ঠ নয়, রোগীদের খুঁজে বের করা, আইসোলেশন করা, পরীক্ষা করা, চিকিৎসা করার বিষয়েও সমান জোর দিতে হবে। করোনাভাইরাসকে আঘাত হানতে আরও আগ্রাসী হতে হবে।
তাই লকডাউনের পরে তন্নতন্ন করে খুঁজে বের করতে হবে করোনাভাইরাসের আক্রান্ত কারা। কাদের শরীরে উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। এবং এই প্রক্রিয়ার একমাত্র রাস্তা হল, — টেস্টিং টেস্টিং এবং টেস্টিং। শুধু পরীক্ষা করে যাওয়া। সে জন্য পরিকাঠামো বাড়ানো। আর যাঁদের শরীরেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়বে তাঁদের আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
এমন অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গের একটি ও দেশের অন্যান্য রাজ্যে আরও ৩৪টি ল্যাবকে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য অনুমোদন দিয়েছে আইসিএমআর। এখনও পর্যন্ত যা হিসেব তাতে মহারাষ্ট্র ও কেরলে করোনাভাইরাসে সবথেকে বেশি সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত। সেই কারণে এদিনও মহারাষ্ট্রের এবং তামিলনাড়ুর (কেরল ঘেঁষা) চারটি ল্যাবকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।