দেশের সময়: সম্প্রতি অসম রাজ্যে যে ভাবে পাঁচজন বাঙালিকে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে.তাতে গোটা দেশ জুড়ে আলোড়ন শুরু হয়ে গেছে।ধিক্কার ও প্রতিবাদের গর্জন ধ্বনিত হচ্ছে সর্বত্র।হবারই কথা মানুষকে যারা এভাবে প্রকাশ্যে হত্যা করতে পারে তারা যে সভ্যতার পক্ষে ভয়াবহ বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারে তাতে কারোর কোন সন্দেহ থাকার কথা নয়।যারা খুন হয়েছেন তাদের বাঙালি পরিচয়টা বড় কথা নয়,তারা মানুষ,নিরপরাধ মানুষ সেটাই বড় কথা।আসলে এই বাঙালি হত্যার মধ্য দিয়ে একধরনের বিভাজনকে উসকে দেওয়ার প্রবনতা আছে,যা খুবই মারাত্মক ও যা এইসময়ের রাজনীতিতে এক অশনি সংকেতও বটে।অসম জুড়ে বাঙালি বিদ্বেষের একটা আবহ বজায় রাখার চেষ্টা,সেখানকার রাজনৈতিক দলগুলো বরাবর করে আসে,রাজনৈতিক ফায়দার কথা মাথায় রেখে।অসম রাজ্যে অসমিয়াদের নিয়ন্ত্রণ হারানোর ভয় ছড়িয়ে দিয়ে অসমিয়াদের ভোট নিজেদের অনুকূলে আনার চেষ্টায় সকলেই বিভাজনের রাজনীতিতে শান দিয়ে চলে।আর তারই ফলশ্রুতিতে অসমের ভূমিপুত্রদের মধ্যে ঢুকে যায় বাঙালি বিদ্বেষের বিষ।বাঙালিকে ঘৃণা করা শুরু করে কেউ কেউ,আর সেই ঘৃণারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে এরকম ভয়াবহ হত্যা কান্ডের মধ্য দিয়ে।আমাদের মনে রাখতে হবে এই মর্মান্তিক হত্যা কান্ড এক সুচতুর রাজনৈতিক কৌশলেরই পরিণতি।যে রাজনৈতিক কৌশল গোটা দেশ জুড়ে সর্বত্রই বিভাজনের খেলা খেলতে চাইছে।ভেঙে দিতে চাইছে মানুষে মানুষে ঐক্যের দেওয়ালকে।অসমে বাঙালি হত্যার প্রতিক্রিয়ায় কোন কোন জায়গা থেকে উসকানি দেওয়া শুরু হবে,বাঙালিরাও এ রাজ্যে অবাঙালিদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করুক,রাজ্য ছাড়া করতে ব্যস্ত হয়ে উঠুক সব অবাঙালিদের।অসমে বাঙালি হত্যার প্রতিশোধ নিতে তৈরি হয়ে উঠুক এ রাজ্যের বাঙালিরাও।এই জিগির আসলে বিভাজনের জিগির,এই জিগির আসলে পারস্পরিক বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা আমাদের সামাজিক স্থিতাবস্থাকে ভেঙে দেওয়ার জিগির।অসমে বাঙালি হত্যা করেছে অসমিয়ারা,তাই সেই যুক্তি দিয়ে,এ রাজ্যেও বাঙালিকে অবাঙালি হত্যায় প্ররোচিত করা হবে,রাজ্য জুড়ে একটা অস্থিরতার বাতাবরণ তৈরি করা হবে।