সিমলা টু মানালী

0
764

ট্রাভেলগ: (পর্ব-৩)

লিখছেন~দেবন্বিতা চক্রবর্তী,

সোলাং ভ্যালি থেকে যখন মানালি ফিরছি তখন খেয়াল করলাম আমরা তো মানালির এই দিকের আসল আকর্ষণ টাই মিস করে যাচ্ছিলাম ৷বশিষ্ট মুনি টেম্পেল , যা বিয়াস এর পাশেই একটু ঊঁচুতে অবস্থিত । এখানে এসে প্রবেশ করলাম আরও এক নতুন ইতিহাসের গন্ডির মধ্যে ৷ পুরাণ বলে বশিষ্ট মুনি ও অরুন্ধতির পুত্র কল্মাষপদের রাক্ষসের হাতে মৃত্যুর পর বশিষ্ট বাঁচার আশা হারিয়ে ফেলেন ও আত্মহত্যার জন্য নদীর জলে পাহাড় থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েন , কিন্তু মৃত্যু না হওয়ায় নিজে রজ্জুতে পাশ বদ্ধ করে পুনরায় নদীতে ঝাঁপ দেন ৷

নদীও তাঁকে পাশ অর্থাৎ বন্ধন মুক্ত করায় সেই নদীর নামকরন করলেন বিপাশা ৷এই রোমাঞ্চকর ঘটনা শোনা অবধি মন্দির টা দেখার লোভ সামলানো যায় না , গিয়ে যখন পৌঁছালাম সেখানে দেখলাম পুরো মন্দিরে কাঠের অসাধারন কারুকার্যে পরিপূর্ন , পাহাড়ের কোলে এই অসধারন মন্দির ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ আবিষ্কার করলাম মহিলা ও পুরুষদের জন্য আলাদা ভাবে স্নানের ব্যবস্থা আছে , ব্যপার সরজোমিন করতে গিয়ে আরও এক চমক ছিল ৷ মহিলাদের স্নানের জায়গায় ঢুকে দেখলাম তুর্কিদের হামাম এর ঢঙের তৈরী গরল জলের কুন্ড ঘিরে সকলে স্নান করছে , যে কুন্ড নাকি স্বয়ং লক্ষ্মণের ছোঁড়া তীরের আঘাতে তৈরী হয় ৷ অদূরেরই রয়েছে রামের মন্দির ,সেই মন্দিরের কারুকার্যেও চোখ ধাঁধিয়ে যায় ৷
মন্দির ভ্রমন তো হল এবার স্থানীয়দের কিছু কাযকর্মের দিকে চোখ পড়ল , কাঠের পাটার উপর রং এর কারসাজিতে নিজেদের শিল্পত্ব নিয়ে মহিলারা ফুটিয়ে তুলছেন পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গার দৃশ্য ৷ এছাড়াও কেউ বিক্রি করছেন ড্রায় ফ্রুট্স , উলের তৈরী টুপি ,মোজা, স্কার্ফ আর তারা পর্যটকের জন্য মানালি স্পেশাল হিসাবে রেখেছিল পশুর লোম থেকে তৈরী পারো নামে মহিলাদের এক বিশেষ পোশাক ৷
এবার মানালি ফিরব পেটে আগুন জলছে ৷ ঘুরলেই তো হবে না পেট পুজোও জরুরি , তাই মানালির ম্যালে পৌঁছে আমরা ঢুকে পড়লাম একটি পাঞ্জাবী ধাবায় ৷

ধাবায় ঢুকে জানলাম মানালীর সৌন্দর্য ও বাংলার বুদ্ধি দিয়ে ধাবার বাড়বাড়ন্ত হয়েছে অর্থাৎ ভালবাসার টানে বাংলা থেকে ছুটে যাওয়া যুবকের প্রেমের টানে সাড়া দিয়ে মানালীর মহিলা একসাথে জীবন শুরু করার সাথে সাথেই শুরু হল ব্যবসা ও ৷ চারিদিকে যেন প্রেমের উপযুক্ত স্থান হয়ে উঠল নিমেষে ,আলাপ ও হয়ে গেল ই সহজেই ৷
এর পরই হুড়মুড়িয়ে মানালীর ম্যালে শপিং শুরু হয়ে গেল ৷কি নেই সেই ম্যালে ! সন্ধ্যে হয়ে গেলেই আর কোনো স্পট্ ঘোরা সম্ভব নয় তাই ম্যালে ঘোরাঘুরি চলল রাত অবধি , ঠান্ডা ওয়েদারে ঘুড়ে বেড়াতে কারুরই কোনো ক্লান্তি নেই ৷ –বিজ্ঞাপণ

Previous articleসেক্টর ফাইভের এসডি এফ বিল্ডিংয়ে আগুন
Next articleশাসক নয় চাই মানুষের প্রতিনিধি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here