সম্পাদকীয়- দেশজুড়ে সাধারণ নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে,রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয়তা তত বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।রাজনৈতিক চাপানউতোরও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।সব দলই শাসক হতে চায়।সবাই সবার দোষ খুঁজে বার করতে ব্যস্ত।সম্প্রতি ব্রিগেডে এ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের উদ্যোগে দেশের প্রায় সবকটি বিজেপি বিরোধী দলের সভা হয়ে গেল।তারা সকলেই বিজেপি সরকার কত খারাপ তার ফিরিস্তি শুনিয়েছেন।তারা ক্ষমতায় এলে কত কত ভাল হবে তারও স্বপ্ন দেখানো হয়েছে।এই সভাকে কটাক্ষ করে বিজেপির পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে এরা সকলেই ক্ষমতার লোভে একত্রিত হয়েছে,এরা লোভি,দূর্নীতিপরায়ণ,অযোগ্য সব নেতা।আমাদের দেশের নেতাদের রাজনৈতিক চাপানউতোরে পারস্পরিক সম্মানবোধ বা শালীনতার লেশমাত্র থাকে না,একে অপরের দিকে কাঁদা ছোড়াছুড়ি করার সময় এঁদের মনে থাকে না,সাধারণ মানুষ সব দেখছেন।এরা মনে করেন মানুষ কিছু বোঝেন না,মানুষ খুব বোকা।আসলে মানুষ সব বোঝে,তাই নেতাদের কাউকে মানুষ বিশ্বাস করে না।হয়তো বাস্তবিক কিছু সমস্যার কারণে,কিংবা রাজনৈতিক নেতাদের রক্ত চক্ষুর শাসনের কাছে সাধারণ মানুষ মুখ ফুটে কিছু বলতে পারেন না,কিন্তু মনে মনে তারা সবাই ঠিকই জানেন এদেশের অধিকাংশ নেতা-নেত্রীরাই ভন্ড ও মাথ্যাচারী,এরা কেউই দেশের কথা,মানুষের কথা ভাবে না।এরা সবাই নিজেদের আঁখের গোছায় রাজনীতির নামে।রাজনীতিটা এদের কাছে ব্যবসা।সাধারণ মানুষের জীবন যন্ত্রণা নিয়েও এরা ব্যবসা করতে এতটুকু কুন্ঠিত হয় না।এদেশের সাধারণ মানুষের কাছে তাই নেতা-নেত্রীরা কোনভাবেই শ্রদ্ধার পাত্র নন,বরং মনে মনে অধিকাংশ নেতা নেত্রীকেই সাধারণ মানুষ ঘৃণাই করেন।তাই আবার যখন দেশজুড়ে লোকসভা নির্বাচনের দামামা বেঝে উঠেছে তখন সাধারণ মানুষ মাত্রই বুঝে গেছেন আবার সেই একরাশ মিথ্যের ভানুস তাদের সামনে রাখা হবে,আবার রক্ত ও জীবন ঝড়বে ভোটের নামে।নেতারা বড় বড় ভাষণ দিয়ে রাজ ক্ষমতা ভোগের চিন্তা করবে আর অশান্তি ও ঝামেলার প্রহর গুনবে সাধারণ আম জনতা।এভাবে চলে আসছে দিনের পর দিন,হয়তো এভাবেই চলবে আর অনেক দিন।তবু এখন বোধহয় ভাবার সময় এসে গেছে আমাদের মানে সাধারণ মানুষের,এভাবে চলতে দেওয়া যায় না,চলতে দেওয়া উচিত নয়।এভাবে দেশের ক্ষতি হয়,সাধারণ মানুষকে তাই সাহস সঞ্চয় করতে হবে,নেতা-নেত্রীদের সামনে তুলে ধরতে হবে সংসদীয় নির্বাচন ব্যবস্থার প্রকৃত অর্থকে।বলতে হবে ভোটে জেতা মানে শাসক হওয়া নয়,জনপ্রতিনিধি হওয়া।সোচ্চারে সকলে বলুন শাসককে নির্বাচিত করে না কেউ,নির্বাচিত করে নিজেদের প্রতিনিধিকে,নিজেদের সেবককে,সেটাই প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের মূল কথা।আসুন সেই মূল কথাটা আমরা আমাদের রাজনীতিকদের মনে করিয়ে দিই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here