দেশের সময় : সকাল হতেই ভিড় বাড়ছে বনগাঁ শহরের রাখির দোকান গুলোতে। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর দাম বেড়েছে রাখির। তবে ক্রেতাকে হাত ছাড়া করতে নারাজ ব্যবসায়ীরা। প্রয়োজনে লাভের অংশ একটু কমাতে হচ্ছেই। তবে মোটের ওপর ভালোই বিক্রি রাখির। বাঙালি-অবাঙালি দুইয়ের ভিড় চোখে পড়ার মতো যশোর রোডের দু’পাশে বাটা. মোড় এলাকায়।
অন্যান্য বাজারের মতো সেইভাবে প্রভাব ফেলেনি এবারে রাখির বাজারে। সীমান্ত শহর বনগাঁ থেকে কলকাতার এসপ্ল্যানেড, বড়বাজার, শিয়ালদা, শ্যামবাজার, মানিকতলা, রবিবারের রাখি উৎসব নিয়ে সব বাজারেই ক্রেতা থেকে বিক্রেতা খুশি বিক্রি বাটা নিয়ে।
এবছর লক্ষ্যনীয় হল, রাখির বাজারেও কলকাতার বোনেরা ‘বাংলার মেয়ে’কেই বেছে নিচ্ছে।শনিবার সকালে বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, দিনভর লড়াইয়ে মমতা বন্দ্যোাধ্যায়ের জোড়াফুল থেকে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে নরেন্দ্র মোদীর পদ্ম ফুল।
ইদানিং প্রায় সব ধর্মীয় অনুষ্ঠানেই রাজনৈতিক দ্বৈরথ লক্ষ করা যাচ্ছে। এবার রাখীকেও রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ার মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চলেছে যুযুধান দুই দল দল। তাই বাজারে পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে সবুজ আর গেরুয়া রঙের রাখি। সবুজ প্যাকেটে লেখা ‘মা-মাটি-মানুষ’। আর গেরুয়া প্যাকেটের গায়ে লেখা ‘জয় শ্রীরাম’।
বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া সবুজ সুতোর রাখির চাহিদা তুলনায় বেশি। পাশাপাশি ঢালাও বিক্রি হচ্ছে তৃণমূলের প্রতীক জোড়াফুল দেওয়া রাখিও।
সেখানে পদ্মফুলের ছবি দেওয়া ‘জয় শ্রীরাম’ রাখি একেবারে যে কেউ নিচ্ছে না, তা নয়। তবে তার চাহিদা সবুজের চেয়ে অনেক কম। তবে বাজার তন্নতন্ন করে খুঁজেও কাস্তে-হাতুড়ি শোভিত লাল সুতোর রাখীর সন্ধান মেলেনি এদিন।
যশোররোডের দু’ধারে প্রচুর রাখির দোকান পসরা সাজিয়ে বসে প্রতিবছর। এদিন সেখানে গিয়ে দেখা গেল, তৃণমূলের প্রতীক ঘাসফুল ও বিজেপির পদ্মফুলের ছবি দেওয়া রাখি বিক্রি হচ্ছে। সেইসঙ্গে মিলছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ বসানো রাখী। দাম একই। ছ’টি রাখির এক প্যাকেটের দাম ১৫ টাকা। একটু বড় আকারের ১টি রাখির দাম ১০টাকা৷
বনগাঁ টাউন কালীবাড়ির সামনে প্রতাপ দত্ত নামে নামে এক রাখি বিক্রেতা বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে বাজার একটু মন্দা। তবে রাজনীতির দড়ি টানাটানি সেই খামতি কিছুটা পুষিয়ে দিচ্ছে। মমতা-মোদীর মুখ বসানো গুচ্ছ গুচ্ছ রাখী কিনে নিয়ে যাচ্ছেন দুই দলের ছোট-মাঝারি নেতারা। পদ্মফুলের থেকে বিক্রি বেশি ঘাসফুল ও মমতা রাখির।
শিমুলতলার কাছে হ্যান্ডমেড রাখির পসরা নিয়ে বসেছিলেন আরোতী দাস তিনি বললেন, ‘করোনার জন্য বাজার খারাপ। লোকাল ট্রেনও চলছে না। তাই এবছর বিক্রি কম।’
ত্রিকোণ পার্কে ব্যাবসায়ী অমল সরকার(কালু) জানালেন, ‘আগে রাস্তায় বহু সংগঠনের তরফে রাখিবন্ধন হত। দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে এবছর তা প্রায় বন্ধ। তাই বিক্রি কিছুটা কম।’ তবে মোদী দাদা -মমতা দিদির রাখি বিক্রিতে কোন ঘাটতি নেই৷