দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গতকাল নবান্ন থেকে বেরনোর সময় বলেছিলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রাথমিক প্রভাব কেটে গিয়েছে। কিন্তু পুরোপুরি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বাড়ির বাইরে যেন কেউ না বেরায়। এবার বুলবুল-দুর্গত এলাকায় যাওয়ার জন্য আগামী সপ্তাহের নিজের উত্তরবঙ্গ সফল বাতিল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোম ও মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড় প্রভাবিত এলাকায় যাবেন মমতা।
রবিবার সকালে টুইট করে একথা জানান মমতা। টুইটে তিনি লেখেন, “ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের দাপটে আগামী সপ্তাহে আমার উত্তরবঙ্গ ( দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ ও মুর্শিদাবাদে যাওয়ার কথা ছিল মমতার ) সফর বাতিল করেছি। তার বদলে সোমবার আমি হেলিকপ্টারে করে নামখানা ও বকখালি যাব। সেখানকার পরিস্থিতি তদারক করে দেখব।” আরেকটি টুইটে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “তারপর আমি কাকদ্বীপে একটি প্রশাসনিক বৈঠক করব। সাইক্লোন প্রভাবিত এলাকায় কী ধরণের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজ চলছে সে ব্যাপারে আলোচনা করব। বুলবুল-দুর্গত এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলব। মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে যাওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে আমার।” সোমবার নবান্ন সভাঘরের বৈঠকও বাতিল করা হয়েছে।
Due to the severe cyclonic storm ‘Bulbul’, I have decided to postpone my North Bengal visit in the coming week. Instead, tomorrow I would take an aerial survey of the affected areas around Namkhana and Bakkhali.(1/2)
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) November 10, 2019
রবিবার ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ ৯টি জেলার জেলাশাসকদের কাছ থেকে প্রাথমিক রিপোর্ট এসে পৌঁছয় নবান্নে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৯ জেলায় ৩ লক্ষের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭ হাজারের বেশি বাড়ি। গাছ উপড়েছে ৯ হাজার। মোবাইল টাওয়ার ভেঙে পড়েছে ৯৫০টি। ফলে বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
শুক্রবার থেকেই রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের মোকাবিলায় নবান্নের কন্ট্রোল রুমকে ২৪ ঘণ্টা তৎপর থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। সেইসঙ্গে শনিবার ও সোমবার ছুটি দেওয়া হয় উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া ও কলকাতার সব সরকারি স্কুল। এই সাত জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখেন তিনি। খোঁজ-খবর নেন।
তৈরি থাকতে বলা হয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকেও। ঘূর্ণিঝড় প্রভাবিত জেলাগুলোতে খোলা হয় ত্রাণশিবির। বুলবুল স্থলভাগে আছড়ে পড়ার আগেই উপকূলবর্তী এলাকা থেকে ১ লক্ষ ৬৪ হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়। শনিবার বিকেল থেকেই নবান্নের কন্ট্রোল রুমে ছিলেন মমতা। নিজেই পুরোটা দেখভাল করছিলেন। রাতের দিকে তিনি জানান, মূল অভিঘাত কেটে গেছে। তবে যতক্ষণ না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, কেউ অপ্রয়োজনে বাইরে বেরোবেন না।” একথা বলে নবান্ন থেকে বেরান তিনি।