দেশের সময়ঃ খোদ উত্তর ২৪ পরগণার জেলাশাসক দু’বার চিঠি দিয়ে এ ব্যাপারে প্রশাসন ও স্বাস্থ্যভবনকে জানিয়েছিলেন ,উত্তর ২৪ পরগণায় ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ডেঙ্গি।
অবশেষে ডেঙ্গি প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিল স্বাস্থ্যভবন। এই জেলায় ডেঙ্গি প্রতিরোধে প্রায় ৭৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে স্বাস্থ্যভবন। সেই সঙ্গে ৪৫০ কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
প্রায় মাসখানেক ধরেই ডেঙ্গি ছড়িয়ে পড়ছে উত্তর ২৪ পরগণার হাবড়া, অশোকনগর, গাইঘাটা, ব্যারাকপুর, বারাসাত প্রভৃতি এলাকায়। জেলাশাসক গত ২৯ জুলাই ও ৩ অগস্ট এই বিষয়ে দুটি চিঠি দিয়েছিলেন প্রশাসন ও স্বাস্থ্যভবনকে। বেসরকারি মতে এই অঞ্চলে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৩০০০-এর বেশি। ইতিমধ্যেই ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
যদিও সরকারি মতে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ২০০০ এবং মৃতের সংখ্যা ৩। ক’দিন আগে সীমান্তবর্তী হাবড়া, গাইঘাটা ও ব্যারাকপুর ২ নম্বর ব্লকে ডেঙ্গির প্রকোপ নিয়ে খোদ মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অবশেষে ব্যবস্থা নিয়েছে স্বাস্থ্যভবন। স্বাস্থ্যভবন স্বীকার করেছে ওই এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েছে। ফলে তা প্রতিরোধে নির্দেশিকাও জারি করেছে তারা।
৭ অগস্ট স্বাস্থ্যভবনে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। স্বাস্থ্যভবনের তরফে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ডেঙ্গি প্রতিরোধে উত্তর ২৪ পরগণার হাবড়া ১, হাবড়া ২, গাইঘাটা ও ব্যারাকপুর ২ অঞ্চলের জন্য আগামী তিন মাসে ৭৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই টাকা মূলত, এলাকায় ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো, জঙ্গল সাফ করা, মশা মারার স্প্রে দেওয়া, রোগীদের চিকিৎসা প্রভৃতি খাতে খরচ করা হবে।
এ ছাড়াও এই কাজে ৪৫০ কর্মী নিয়োগেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্যভবন। এই কর্মীরা ওই এলাকায় গিয়ে চিকিৎসার কাজে সাহায্য করবেন। স্থানীয় হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের উপর থেকে চাপ কমাতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যভবন। উত্তর ২৪ পরগণা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে প্রশাসনের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, “হাবড়া, গাইঘাটা, অশোকনগর, ব্যারাকপুর ও বারাসাত এই পাঁচ জায়গায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ২০০০ ছাড়িয়েছে। হাবড়া ও অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের চাপ সামলানোর জন্য অন্য হাসপাতাল থেকে ভাইরোলজিস্ট, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও নার্স পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন থেকেও বিশেষজ্ঞদের হাবড়া যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্যভবন। এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গিতে সরকারিভাবে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই সংখ্যা যাতে আর না বাড়ে, সে ব্যাপারে তৎপর প্রশাসন।”