দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ হাওড়ার করোনা সংক্রমণ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার নবান্ন থেকে রাজ্যের জেলাগুলির প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, “হাওড়ার পরিস্থিতি খুব স্পর্শকাতর।”
হাওড়ার জেলাশাসক ও পুলিশ কমিশনারের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কঠোর পদক্ষেপ করুন। মেলামেশা, রাস্তায় বেরোনো সব বন্ধ করে দিন। দরকার হলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ খাবার দেবে। না হলে হাওড়াকে আটকাতে পারব না।”
এখানেই থামেননি মুখ্যমন্ত্রী। আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “দেখবেন পারিবারিক হতে হতে সংক্রমণ গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে।” অর্থাৎ গোষ্ঠী সংক্রমণের পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সে ব্যাপারে প্রশাসনকে সতর্ক করেছেন যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলেছেন মুথ্যমন্ত্রী। পুলিশের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, “দরকার হলে বাজারগুলোয় সশস্ত্র পুলিশ নামানো হোক। কিন্তু কোনও ভাবেই যেন বাজারে একজায়গায় পাঁচ জনের বেশি না দাঁড়ায়”।
কেন্দ্রীয় সরকার দেশের যে ১৭০টি জেলাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করেছে তার মধ্যে হাওড়া-সহ বাংলার চারটি জেলা রয়েছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “হাওড়া এখন রেড স্টার জোন হয়ে গেছে। অর্থাৎ পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। আমি দেখতে চাই ১৪ দিনে হাওড়া রেড জোন থেকে অরেঞ্জ জোনে চলে এসেছে। আর যেন কেউ নতুন করে সেখানে আক্রান্ত না হন।”
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য শুনে সরকারের উদ্দেশে পাল্টা সওয়াল করেছেন বিরোধীরা। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “সংক্রমণ ছড়িয়ে যাওয়ার পর টনক নড়ল কেন মুখ্যমন্ত্রীর সেটাই আশ্চর্যের! কী চাপা দিতে চাইছিলেন তিনি! হাওড়া সহ রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় যে লকডাউন ঠিকমতো মানা হচ্ছিল না তা খালি চোখেই দেখা যাচ্ছিল। মহাকরণ থেকে হাওড়ায় সচিবালয় নিয়ে গিয়েও সেটা বুঝতে পারল না সরকার”!
এ দিন সকালে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম হাওড়ার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন হাওড়ার জেলাশাসক, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, পুর এবং পুলিশ কমিশনার এবং ওই বিভাগের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির সঙ্গে। বৈঠকে করোনা রুখতে কলকাতা মডেলকেই হাওড়ায় অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন পুরমন্ত্রী। ওই বৈঠকে করোনা হটস্পটগুলিতে নজরদারি আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে স্থির হয়েছে, রাস্তায় লোকজনের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বস্তি এলাকাগুলোতে সিভিক ভলেন্টিয়ার এর মাধ্যমে নজরদারি বাড়ানো হবে।