দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ২৩মে লোকসভা ভোটের ফল গণনা হবে ৷ অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু মাঝে হুজুগ তুলেছিলেন, ওই দিনই সনিয়া গান্ধীর বাড়িতে বিরোধী নেতা-নেত্রীর বৈঠক হোক। সে জন্য ফোন করেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।
কিন্তু দিদি আপাতত এই ২৩-এর প্ল্যান কাটিয়ে দেওয়ায়, আজ সোমবার নিজেই কলকাতায় আসছেন চন্দ্রবাবু। নবান্ন নয়, দিদির সঙ্গে দেখা করলেন কালীঘাটের বাড়িতে গিয়ে।
কিন্তু কেন? আর কেনই বা আগে তাঁর প্রস্তাব খারিজ করেছিলেন মমতা?
চন্দ্রবাবু চান, বিরোধী দলগুলি ঐক্যবদ্ধ থাকুক। গতকাল রবিবার বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল ঘোষণার আগে থেকেই এ ব্যাপারে সক্রিয় তিনি। এমনকী গতকাল সনিয়া-রাহুলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন চন্দ্রবাবু। পরে শরদ পওয়ারের সঙ্গেও দেখা করেছেন। যাতে দিল্লিতে বিকল্প সরকার তৈরির সমস্ত প্রস্তুতি থাকে।
তবে তৃণমূলের শীর্ষ সূত্রে খবর, আগে থেকে এত লাফ ঝাঁপের পক্ষে নন দিদি। চন্দ্রবাবুকে তিনি আগেই বার্তা পাঠিয়ে দিয়েছিলেন আগে ২৩ মে ফল প্রকাশ হোক। তার পর ফলাফল দেখে না হয় মিটিং মিছিল করা যাবে। কিন্তু তার পরেও নাছোড় বাবু। আর সে কারণেই হয়ত সোমবার কলকাতায় এসেছেন তিনি।
অন্ধ্রপ্রদেশে লোকসভা ভোটের সঙ্গে বিধানসভা ভোটও হয়েছে। কিন্তু এ বার ফলাফল নিয়ে খুব নিশ্চিত নন চন্দ্রবাবু। বুথ ফেরত সমীক্ষাগুলিও কোনও স্পষ্ট দিশা দেখাচ্ছে না। কারও কারও মতে লোকসভা ভোটে ভাল করবেন চন্দ্রবাবু। কেউ আবার বলছেন, বিধানসভা ভোটে অন্ধ্রে সুইপ করতে পারে জগন্মোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, জাতীয় রাজনীতিতে বাবুর উচ্চাকাঙ্খা কোনও কালেই ছিল না। বরাবর অন্ধ্র নিয়েই ব্যস্ত থেকেছেন তিনি। এ বারও তাই। কিন্তু বাবু দেখছেন, এ বার তাঁরা সাঁড়়াশি সংকট। এমনিতে বিজেপি-কে চটিয়ে রেখেছেন তিনি। এর পর যদি কেন্দ্রে বিজেপি-র নেতৃত্বে সরকার তৈরি হয় এবং রাজ্যে জগন্মোহন ক্ষমতায় আসেন, তা হলে অন্ধ্রে তাঁর অস্তিত্ব সংকটের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। আবার তিনি যদি অন্ধ্রে ফের সরকার গঠনের সুযোগ পান এবং কেন্দ্রে বন্ধু সরকার না থাকে তা হলেও বিপদ। কারণ, রাজ্য ভাগের পর অন্ধ্রে নতুন রাজধানী শহর পত্তনের জন্য কেন্দ্র থেকে মোটা অঙ্কের আর্থিক প্যাকেজ না পেলে সরকার চালানোই মুশকিল হবে। এই পরিস্থিতিতেই কেন্দ্রে বিরোধী জোটের সঙ্গে একটা তালমিল চাইছেন বাবু। বুথ ফেরত সমীক্ষা যাই বলুক, তাতে আস্থা না রেখে অনবরত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন যাতে কেন্দ্রে বিকল্প সরকার হয়।
তবে তৃণমূল শীর্ষ নেতারা ঘরোয়া আলোচনায় আজও বলেছেন, ২৩ তারিখ ফলাফল না দেখে দিদি কিছু ঠিক করবেন না। চন্দ্রবাবুর কথা দিদি শুনবেন। কিন্তু ওই পর্যন্তই।
এক্সিট পোল যাই বলুক, মহাজোটের দলগুলি কিন্তু তাদের রণকৌশল ঠিক করতে দফায় দফায় বৈঠক করে চলেছে। সোমবার কালীঘাটে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন চন্দ্রবাবু নাইডু। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চলেছে সেই বৈঠক। কিন্তু কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে কেউই সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেননি।
সূত্রের খবর ৪৫ মিনিটের বৈঠকে মহাজোটের দল গুলির একজোট হয়ে থাকার উপরেই বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। ভোটের ফলাফল প্রকাশের পরে যাতে মহাজোটের কোনও দলকে বিজেপি ভাঙাতে না পারে সেবিষয়ে আলোচনা হয়েছে দুই সুপ্রিমোর মধ্যে।