দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যে ক্রমেই ভয়ংকর চেহারা নিচ্ছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। পরিসংখ্যান বলছে গত চারদিনে তিন-তিন বার ভারতে একলক্ষের গণ্ডি পেরিয়েছে কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা।
এই পরিস্থিতিতে আবারও দেশের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং বললেন, “যুদ্ধকালীন তৎপরতায় করোনা রুখতে হবে।” এদিন করোনা প্রতিরোধে কার্যত যুদ্ধই ঘোষণা করেন তিনি।
এর আগের বৈঠকেও টেস্টিং, ট্রেসিং ও ট্রিটমেন্ট-সহ পাঁচ স্ট্র্যাটেজি নেওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি। এবারও বললেন, একজন আক্রান্তের সংস্পর্শে এসেছে এমন অন্তত ৩০ জনকে খুঁজে বের করতে হবে। আর তা করতে পারলে সেকেন্ড ওয়েভের চেন ভাঙা সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।
এসবের পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ ঠেকানো প্রসঙ্গে মোদী বলেন, ”করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউয়ের একটা বড় কারণ দেশবাসীদের গা-ছাড়া মনোভাব। অনেক ক্ষেত্রে রাজ্য প্রশাসনের পদক্ষেপেও এই গয়ংগচ্ছ বিষয়টি লক্ষ্যনীয়। এই মনোভাব নিয়ে চললে করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউকে ঠেকানো যাবে না।”
তবে পুরোপুরি লকডাউনের কথা এখনই বলছেন না প্রধানমন্ত্রী। তিনি মাইক্রো-কনটেনমেন্ট জোন চিহ্নিত করায় জোর দেন, এবং সে সব জায়গায় অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়ার কথা বলেন। এছাড়া রাত্রি নটা বা দশটা থেকে ভোর পাঁচটা বা ছ’টা পর্যন্ত কার্ফু জারি করা যেতে পারে। তবে তার পোশাকি নাম হবে করোনা কার্ফু।
এসবের পাশাপাশি, গোটা দেশে টিকা উৎসব পালন করার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে নতুন উপায় বের করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশে ৪৫ বছরের উর্ধ্বে সকলের টিকাকরণের জন্য ১১ থেকে ১৪ এপ্রিল গোটা দেশে টিকা উৎসব পালন করার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি।
মোদী বললেন, “রাত্রিকালীন কার্ফুর উপযোগিতা মেনে নিয়েছে গোটা পৃথিবী। কার্ফু থাকলে মনে থাকবে যে আমরা করোনা পরিস্থিতিতে রয়েছি।” দ্বিতীয় দাওয়াইটির জন্য মোদীর সমাধান, আগামী ১১-১৪ এপ্রিল দেশে টিকা উৎসব পালন করার। “যত বেশি সম্ভব টিকা নিন ওই চারদিন”, বললেন মোদী।
ছোট ছোট কনটেনমেন্ট এলাকা তৈরি করে, পরীক্ষার পরিমাণ বাড়িয়ে করোনাকে রুখতে হবে। গা-ছাড়া মনোভাব চলবে না। বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সঙ্গে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিরোধের আরও দুই দাওয়াই দিলেন তিনি। রাত্রিকালীন কার্ফু এবং বিপুল পরিমাণে টিকাকরণ।
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধেয় দেশের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই করোনা সংক্রমণ ঠেকানো প্রসঙ্গে মোদী বলেন, ‘‘করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউয়ের একটা বড় কারণ দেশবাসীদের গা-ছাড়া মনোভাব। অনেক ক্ষেত্রে রাজ্য প্রশাসনের পদক্ষেপেও এই গয়ংগচ্ছ বিষয়টি লক্ষ্যনীয়। এই মনোভাব নিয়ে চললে করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউকে ঠেকানো যাবে না।’’
মোদী বলেন, ‘‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত ছোট ছোট কনটেনমেন্ট জোন।’’ করোনা আক্রান্ত এলাকাগুলিকে ছোট ছোট কনটেনমেন্ট জোনে ভেঙে পরীক্ষার পরিমাণ বাড়ানোর কথা বলেন মোদী। জানান, করোনাকে রোখার উপায় একটাই। তাকে চিহ্নিত করা। সেই নিরিখে মোদীর পরামর্শ, করোনা পরীক্ষা করানোর ক্ষেত্রে অতিসক্রিয় হতে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘যেকোনও মূল্যে সংক্রমণের হার ৫ শতাংশে নিয়ে আসতে হবে আমাদের। আরটি-পিসিআর পরীক্ষার পরিমাণ বাড়িয়ে অন্তত ৭০ শতাংশে নিয়ে যেতে হবে।’’
টিকা উৎসব প্রসঙ্গে মোদীর পরামর্শ, ‘‘আমাদের হাতে করোনাকে রুখে দেওয়ার অনেক অস্ত্র মজুত এখন। টিকাকরণে পিছিয়ে থাকলে চলবে না। বয়সসীমা মেনে যত বেশি সম্ভব টিকাকরণ করুন। আগামী ১১ থেকে ১৪ এপ্রিল টিকা উৎসব পালন করুন। এতে কিছুটা হলেও সংক্রমণ ঠেকানো যাবে।