দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ গত বছর জাঁকিয়ে বসা শীতের আমেজ নিয়েই ইংরেজি নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছিল বঙ্গবাসী। এ বার সেই শীত নেই, ডিসেম্বরের প্রথম দিককার শীতল আমেজও উধাও। তাই জাঁকিয়ে শীত উপভোগের আশা সম্বল করে শনিবার নতুন বছরে পা দিয়েছে বাঙালি।

পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাবে রাজ্যের কয়েকটি জেলায় বৃষ্টি হয়েছিল। কলকাতাতেও সামান্য বৃষ্টি হয়েছে। উত্তুরে বাতাস ঢুকতে বাধা পেয়েছিল। তবে এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। 

আবহাওয়া দফতরের আশ্বাস, আগামী সপ্তাহে জাঁকিয়ে পড়তে পারে শীত। কিন্তু সেই শীতের কাঁপুনি কত দিন স্থায়ী হবে, তা নিয়ে রয়েছে ঘোর সংশয়। সত্যিই হাড়কাঁপানো শীতের দেখা মিলবে, না উত্তুরে বাতাসের সঙ্গে শুধুই লুকোচুরি খেলা চলতে থাকবে— তা নিয়ে চর্চা চলছে।

ঝঞ্ঝা চলে গিয়েছে। এখন রাতের তাপমাত্রা একটু একটু করে কমবে। জানাচ্ছে আলিপুর আবহওয়া দফতর।
জাঁকিয়ে শীত না পড়লেও ঠান্ডা বাড়বে। তবে আরও একটি পশ্চিমি ঝঞ্ঝা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে উত্তর-পশ্চিম ভারতে। সেটা জানুয়ারি মাসের ৪ তারিখে। 

ফলে এই যে তাপমাত্রা কমবে, তা বেশিদিন স্থায়ী হবে না। ফলে ৫ তারিখের পর রাতের তাপমাত্রা একটু বাড়বে।
আগামী দিন চারেক রাজ্যের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক। আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, যেমন বলেছিলেন, তেমন বৃষ্টি পেয়েছি। দার্জিলিঙে স্লোফল হয়েছে। ঝঞ্ঝা চলে গিয়েছে। দিন চারেক বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। রাতের তাপমাত্রা একটু একটু করে কমবে।

শুক্রবার, ইংরেজি বছরের শেষ দিনে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার তা একটু কমে ১৫.২ ডিগ্রিতে নেমেছে। যদিও তা স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি বেশি। কলকাতার মতো জেলাগুলিতেও পারদ সে-ভাবে নামেনি।

পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল (১৪.৬ ডিগ্রি) বা পানাগড়েও (১৪ ডিগ্রি) কাঁপন ধরানো ঠান্ডা মেলেনি। হাড় কাঁপানো শীতের জন্য ‘বিখ্যাত’ পুরুলিয়া, বীরভূমের শ্রীনিকেতনেও শুক্রবার রাতের তাপমাত্রা ওই জায়গাগুলির নিরিখে কিছুটা বেশি রয়েছে। তুলনায় মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে (১১ ডিগ্রি) শীত খানিকটা হলেও বেশি ছিল। তবে দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় উত্তরবঙ্গে তরাই-ডুয়ার্সে স্বাভাবিক ভাবেই শীতের দাপট বেশি। শুক্রবার জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি এবং কোচবিহারে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ৯.২, ৮.৬ এবং ৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহবিদেরা জানান, পূর্ব ভারতের শীতের শিকড় আদতে উত্তর-পশ্চিম ভারতে প্রোথিত থাকে। রাজস্থান, পঞ্জাব, হরিয়ানায় প্রবল শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলে কনকনে উত্তুরে হাওয়া বয়ে আসে পূর্ব ভারতে। ঝঞ্ঝা কেটে যাওয়ায় উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে ফের উত্তুরে বাতাসকে বাহন করে শীত আসতে পারে বাংলায়। আগামী মঙ্গল এবং বুধবার নাগাদ কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রির আশপাশে থাকতে পারে।

কনকনে শীত পড়তে পারে জেলাগুলিতেও। কিন্তু এ শীত কত দিন স্থায়ী হবে, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন আবহবিদদের একাংশ। কারণ, মঙ্গলবার নাগাদ আবার একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা কাশ্মীরে ঢুকতে পারে। তার জেরে আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকেই উত্তর-পশ্চিম ভারতে বৃষ্টি এবং তুষারপাতের সম্ভাবনা আছে। তেমন হলে পূর্ব ভারতেও শীতের মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here