দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ নতুন বছরের শুরুতেই রাজ্যে ফিরেছে শীত। জেলাগুলিতেও নেমেছে তাপমাত্রা। দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলি কাঁপছে কনকনে ঠান্ডায়। একইসঙ্গে শীতে কাঁপছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিও।
এদিকে উত্তর-পশ্চিম ভারতে পরপর দুটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। আর তার প্রভাবে এবার বাড়তে চলেছে রাজ্যের তাপমাত্রা। যার জেরে অন্তত সাতদিন উধাও হয়ে যেতে পারে শীত। হাওয়া অফিস বলছে ২৪ ঘণ্টা পর থেকেই শীতের প্রভাব কমতে চলেছে।
জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহেও কলকাতায় শীতের দাপট তেমন নেই। বৃহস্পতিবার শহরে কিছুটা ঠান্ডা অনুভূত হলেও রাত থেকে তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহবিদরা। উত্তর-পশ্চিম ভারতে পর পর দু’টি পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জেরেই রাজ্যে শীতের কনকনে ঠান্ডা অনুভব করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে, আগামী সপ্তাহ থেকে বৃষ্টি হতে পারে বলেও পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের।
আলিপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে খবর, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার ফলে বাধা পাচ্ছে মরসুমি ঠান্ডা। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে কুয়াশায় ঢাকা রয়েছে কলকাতা। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আকাশ পরিষ্কার হতে পারে। শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। যা স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি কম। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি বেশি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৯৯ শতাংশ। ফলে গুমোট ভাব অনুভব করা যাবে বলে জানিয়েছে আলিপুর।
গত ২৪ ঘণ্টায় গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে তাপমাত্রার পারদ সে ভাবে নামেনি। আগামী সপ্তাহের গোড়ায় কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের বেশির ভাগ জেলাতেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশ কিছুটা বেশি থাকতে পারে। ফলে শীতের ভরা মরসুমেও তেমন ঠান্ডার আমেজ পাওয়া যাবে না বলেই মনে করছেন আবহবিদরা।
উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে আগামী ২৪ ঘণ্টায় দার্জিলিং ও কালিম্পং-এ অল্প একটু বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। বাকি জেলাতে আবহাওয়া শুষ্ক ও পরিষ্কার থাকবে। ফের ৯ তারিখ নাগাদ বৃষ্টি হতে পারে দার্জিলিং ও কালিম্পং-এ।
আগামী ৭২ ঘণ্টায় উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির জন্য ঘন কুয়াশার পূর্বাভাস রয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী হাল্কা থেকে মাঝারি কুয়াশা থাকতে পারে হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া জেলায়।
আবহবিদরা জানিয়েছেন, ডিসেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত শীতের আমেজ ক্ষণস্থায়ী। মাত্র এক বারই তাপমাত্রা নেমেছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আরও এক বার ১২-র কোঠায় তা নেমেছিল। কলকাতা শহরে ১০ থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত কিছুটা শীতের আমেজ পাওয়া গেলেও তার পর থেকে তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। আবহবিদদের অনুমান, একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা পূর্ব ভারতের দিকে বয়ে আসতে পারে।
তার ফলে আগামী সপ্তাহে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ওই শক্তিশালী ঝঞ্ঝার জেরে উত্তর-পশ্চিম ভারতের পাহাড়ি এলাকায় প্রবল তুষারপাত হতে পারে। ঝঞ্ঝার প্রভাব কাটলে ফের এক দফা জোরালো শীত পূর্ব ভারতে মিলতে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন।
বুধবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে পারদ পতন হয়েছিল। পানাগড় এবং আসানসোলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে যথাক্রমে ৭.৯ এবং ৮.৮ ডিগ্রিতে। দার্জিলিঙে ৪.৪, কালিম্পঙে ৮ এবং কোচবিহারের তা হয়েছে ৮.৯ ডিগ্রি। পুরুলিয়া এবং শ্রীনিকেতনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সাড়ে ৯ ডিগ্রি। উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর, বসিরহাট, নদিয়ার কৃষ্ণনগর, মুর্শিদাবাদের বহরমপুর, বাঁকুড়া, বর্ধমানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
এই মুহূর্তে রাজ্যের কোথাও তেমন কোনও সতর্কবার্তা নেই কেবল উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ঘন কুয়াশা ছাড়া।