দেশের সময়,ঠাকুরনগর: প্রায় ১৬ ঘন্টা পর একপ্রকার জোর করে তুলে দেওয়া হল ঠাকুরনগর রেল স্টেশনের অবরোধ। ভোর থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধ বুধবার সন্ধে ৭ টা নাগাদ পুলিশ এবং স্থানীয়দের একাংশ একপ্রকার জোর করে তুলে দেন বলে জানা গেছে স্থানীয়সূত্রে৷ সারাদিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে সন্ধে সাড়ে সাত টার পর থেকে শিয়ালদা–বনগাঁ শাখায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

করোনা পরিস্থিতিতে ভোরের ট্রেন বাতিল হওয়ায় নিত্যযাত্রীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ল রেল। বুধবার ভোর ৫টা থেকে শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখায় ঠাকুরনগর স্টেশনে রেল অবরোধ শুরু করেন ট্রেনের যাত্রীরা।

বিক্ষোভকারীদের দাবি, দিনের প্রথম এবং দ্বিতীয় ট্রেন বাতিল করা যাবে না। তাতে তাঁদের জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। টান পড়বে ব্যবসায়।

প্রথম এবং দ্বিতীয় ট্রেন চালানোর দাবিতে বুধবার ভোর ৫টা থেকে ঠাকুরনগর স্টেশনে রেল লাইনের উপর বসে পরে অবরোধ শুরু করেন। গোটা দিন অনেক চেষ্টা করেও রেল এবং জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরা এই অবরোধ তুলতে পারেন নি।

রাতভর অবরোধ চালাতে রেললাইনের উপর তাঁবু টানিয়ে খিচুড়ি রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বিক্ষোভকারীদের একাংশ। জানা গিয়েছে, স্থানীয় মানুষ ও রেল পুলিশ এবং জিআরপি বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়। রেল পুলিশের তরফে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রেললাইনে তাবু খাটানো যাবে না। বিক্ষোভকারীরাও পাল্টা জানিয়ে দিয়েছেন, যত ক্ষণ দাবি না মানা হচ্ছে রেলের তরফে, তত ক্ষণ এই আন্দোলন চলবে। এই নিয়ে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।

রাজ্যে বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণের জেরে রাজ্য সরকারের নির্দেশেই ট্রেন চলাচলের সময় বদলানো হয়েছে। নতুন সূচি অনুযায়ী ভোর ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চালু থাকবে রেল পরিষেবা। রাত ১০টার পর আর কোনও প্রান্তিক স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়বে না। শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখায় ভোরের প্রথম দু’টি ট্রেনের সময় ভোর ৫টার আগে। ফলে প্রথম ট্রেনটি বাতিল করা হয়েছিল। দ্বিতীয় ট্রেনটি চালানো হলেও সেটিকে ‘স্টাফ স্পেশ্যাল’ হিসেবে জানিয়ে বুধবার তাতে সাধারণ যাত্রীদের উঠতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এমনকি ট্রেনে উঠলে জরিমানা হবে বলে ভয় দেখানোও হয়। এর পরই ক্ষুব্ধ নিত্যযাত্রীরা বিক্ষোভ দেখান। রেল অবরোধ করেন।

অবরোধকারীদের অধিকাংশ ফুল ব্যবসায়ী। তাঁদের বক্তব্য, ফুলের ব্যবসাই তাঁদের একমাত্র রুজি-রোজগার। ফুল নিয়ে তাঁরা কলকাতায় যান ভোরের প্রথম দু’টি ট্রেনেই। প্রথম ট্রেনটি ছাড়ে ভোর ৩টে ১৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টি ৪টে ৪০ মিনিটে। ফুল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ওই দু’টি ট্রেন না চললে তাঁরা সময়ে কলকাতায় পৌঁছতে পারবেন না। তাঁদের বিক্রিবাটাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অবিলম্বে ট্রেন দু’টি চালু করার দাবিতে বুধবার ঠাকুরনগর স্টেশনে রেল লাইনের উপর ফুলের বোঝা ফেলেই রেল অবরোধ করেন ফুল ব্যবসায়ীরা। জানিয়ে দেন, ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত না হওয়া অবধি তাঁরা অবরোধ তুলবেন না

সারা রাত ধরে অবরোধ চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। এরইমধ্যে বুধবার সন্ধ্যে ৭ টা নাগাদ স্থানীয় কিছু ব্যক্তি এবং রেল পুলিশ যৌথভাবে অবরোধকারীদের রেল লাইন থেকে হটিয়ে দেন। তারপর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here