দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আগের ভূমিকম্পের রেশ কাটেনি। এক সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই ফের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল তুরস্ক। জানা গিয়েছে, রবিবার তুরস্কে ফের ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪.৭। ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল তুরস্কের দক্ষিণে অবস্থিত কাহরামানমারাস শহরে। গত সোমবারের ভয়াবহ ভূমিকম্পে যে শহরগুলি সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তার মধ্যে অন্যতম ছিল এই শহর। রবিবার ফের নতুন করে ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ওই শহর ও আশেপাশের এলাকা। গত সপ্তাহের ভূমিকম্পে এমনিতেই বিধ্বস্ত তুরস্ক ও পার্শ্ববর্তী দেশ সিরিয়া। দুই দেশের অধিকাংশ এলাকাই কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে ভূমিকম্পের জেরে ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে কি না, তা এখনও জানা যায়নি।
আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভের তরফে জানানো হয়েছে, রবিবার রাত ১২টা ৩ মিনিট নাগাদ তুরস্কের কাহরামানমারাস শহর থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪.৭। ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৫.৭ কিলোমিটার গভীরে এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল।
ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত তুরস্ক এবং সিরিয়ার পাশে এবার দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করল কাতার। মাস দুয়েক আগেই ২০২২ সালের ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল কাতারে। সিরিয়া এবং তুরস্কের ঘরছাড়া মানুষের জন্য এবার বিশ্বকাপের জন্য তৈরি ১০ হাজার কেবিন এবং ক্যারাভ্যান পাঠানোর কথা ঘোষণা করল কাতার ।
গত সোমবার ভোররাতে সিরিয়া সীমান্তবর্তী তুরস্কে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। বিধ্বংসী সেই ভূমিকম্পে দুটি দেশ মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ৩৩ হাজার মানুষের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ধূলিসাৎ হয়ে গেছে বাড়িঘর, অফিস, স্কুল-কলেজ হাসপাতাল। এক মুহূর্তে গৃহহীন হয়ে পড়েছেন দুই পড়শি দেশের হাজার হাজার মানুষ।
ইতিমধ্যেই ভারত সহ একাধিক দেশ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে তুরস্ক এবং সিরিয়ার দিকে। সেই পরিস্থিতিতে এবার বিপর্যস্ত দুটি দেশের পাশে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করল ২০২২ সালের বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ কাতার। রবিবার দেশটির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, সেখানকার ঘরছাড়া মানুষের জন্য বিশ্বকাপের সময় ব্যবহৃত চলমান কেবিন এবং ক্যারাভ্যানগুলি শিগগিরই দেশদুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
সোমবার দোহা বন্দর থেকে তুরস্কের উদ্দেশে রওনা হবে বেশ কিছু চলমান কেবিন এবং ক্যারাভ্যান। আগামী দিনে ধাপে ধাপে তুরস্ক এবং সিরিয়ায় আরও ত্রাণসামগ্রী এবং কেবিন পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন এক আধিকারিক।
এর আগে কাতারের তরফে ১৩০ জনের একটি উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছিল ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্কে। ১০০ টন ত্রাণসামগ্রীও পাঠিয়েছিল কাতার।
রবিবার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে তুরস্কে গেছেন কাতারের এমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি। গত সপ্তাহের ভূমিকম্পের পর এই প্রথম কোনও বিদেশি আধিকারিক দেশটিতে গিয়ে পৌঁছেছেন।
রবিবার দিনভর উদ্ধারকাজ চালিয়ে শতাধিক মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে তুরস্ক ও সিরিয়া মিলিয়ে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৩৪ হাজার পার করেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। ১৯৩৯ সালের পর তুরস্কে এটাই সবথেকে বড় ভূমিকম্প বলে মনে করা হচ্ছে।