দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ডেডলাইন রাজনীতি নিয়ে বিজেপির মধ্যেই আলোচনার মুখে পড়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ দিলীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠরা এ নিয়ে খোলাখুলিই বলেছেন, এ হল অর্বাচীনের মতো রাজনীতি।
কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ কলকাতা থেকে যেতেই শুভেন্দু ফের দাবি করলেন, ‘টাইম হো গায়া!’। অর্থাৎ সময় এসে গেছে।
শুক্রবার রাতে কলকাতায় এসে পৌঁছন অমিত শাহ। মূলত শনিবার নবান্নে সরকারি বৈঠকের জন্যই কলকাতায় এসেছিলেন তিনি। তার আগে শুক্রবার রাতে তিনি রাজ্য বিজেপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। শনিবার কলকাতা বিমানবন্দর থেকে অমিত শাহর বিমান গুয়াহাটির উদ্দেশে রওনা হতেই ফের ডেডলাইন নিয়ে মুখ খোলেন শুভেন্দু।
কলকাতায় ঝটিকা সফরের মধ্যেও বঙ্গ বিজেপির নেতাদের জন্য সময় বের করে নিয়েছিলেন অমিত শাহ । শুক্রবার রাতেই রাজ্যের প্রথম সারির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন তিনি। বৈঠকে ছিলেন সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষরা। অমিত শাহকে এদিন কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বিদায় জানানোর পর গতরাতের বৈঠক প্রসঙ্গ মুখ খুললেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী গতকালের বৈঠকে উপস্থিতদের মধ্যে কেউ একজন নাকি বলেছেন, ‘টাইম হো গয়া’। এমনই দাবি শুভেন্দু অধিকারীর। যদিও কে এই কথা বলেছেন, সেই বিষয়টি খোলসা করেননি নন্দীগ্রামের বিধায়ক।
এই ‘টাইম হো গয়া’ কথাটির একটি ব্যক্তিগত ব্যাখ্যাও দেন শুভেন্দু অধিকারী। বললেন, “পশ্চিমবঙ্গের বড় বড় ডাকাত, চোর, অত্যাচারীরা, পরিবারবাদ-তোষণবাদের আমদানি করা লোকেরা… তাঁদের বিরুদ্ধে সংবিধান ও আইন মেনে যা যা ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, তা করা হবে। কালকের বৈঠকের পর আমরা এই বিষয়ে উৎসাহিত ও আশ্বস্ত।”
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক অতীতে বার বার রাজ্যের শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে বিজেপি। প্রধান বিরোধী দল বিজেপির হাতে এখন একের পর এক হাতে গরম ইস্যু। বিশেষ করে নিয়োগের ক্ষেত্রে একের পর এক দুর্নীতি ও বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এমন অবস্থায় শুক্রবার রাতের ওই বৈঠকে ‘টাইম হো গয়া’ কথাটি উঠে আসা নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তা যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
যদিও গতরাতের বৈঠকে কে এই কথা বলেছেন, সেই বিষয়টি খোলসা করেননি শুভেন্দু অধিকারী। তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের বৈঠকে এই কথা উঠে এসেছে বলে বিরোধী দলনেতার দাবিতে নতুন করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহলে। শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্য়েই গুঞ্জন ছড়িয়েছে। টাইম হো গয়া বিষয়টি কে বলেছেন, তা নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি কারও কথা বলিনি, ওটা নিশীথ প্রামাণিকও বলতে পারেন।” প্রসঙ্গত, নিশীথ প্রামাণিক বর্তমানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। যদিও নিশীথই যে সেই কথা বলেছেন, এমনটাও বলেননি শুভেন্দু।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ডিসেম্বর মাসের তিনটি তারিখ ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলে দাবি করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু সেই তারিখগুলির প্রথম দুটি দিনে বিশেষ কিছু হয়নি। এমন অবস্থায় শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, ‘১২ ডিসেম্বরটা ১৩ জানুয়ারি হতে পারে।’ শুধু তাই নয়, ‘চূড়ান্ত লড়াই এসে গিয়েছে’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন বিরোধী দলনেতা।
এ ব্যাপারে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এদিন বলেন, এ সব টাইমলাইন হল গাঁজাখুরি গল্প। ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট চিটফান্ড কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। তার পর ষোলো সালে বিধানসভা ভোট, উনিশের লোকসভা আর একুশের বিধানসভা ভোটের প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, টাইম আ গায়া। সেই টাইম আর আসেনি। কারণ, ওদের বোঝাপ়ড়া রয়েছে। এবার বিজেপিরই দিল্লি থেকে যাওয়ার টাইম হয়ে গেছে।