মেরুজ্যোতির ব্যাপারে প্রথম জেনেছিলাম ছোটবেলায় মায়ের কাছ থেকে। পরে ভূগোল বইয়েও পড়েছি। তখন থেকেই অরোরা দেখার ইচ্ছে ছিল। গত শুক্রবার সেই ইচ্ছেটা পূরণ হল। প্রায় দু বছর হল পদার্থবিদ্যায় পিএইচডি (Physics) সম্পূর্ণ করতে ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ে (Southampton University ) পড়ছি এবং সেই সুবাদে ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন শহরে রয়েছি । গত শুক্রবার নিজের চোখে অরোরা দেখার সুযোগ পেলাম এবং ছবি তুলে খুবই আনন্দ পেলাম ।
ভারতের সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি এই বিরল দৃশ্য লাদাখের আকাশেও দেখা গেছে ।
ফের পৃথিবীর বুকে আঘাত হানল সৌরঝড়। আর তাতেই রঙিন হয়ে উঠল রাতের আকাশ। লাল, নীল, গোলাপি, বেগুনি আভায় উজ্জ্বল হয়ে উঠল চারিদিক।
শুধু বিদেশেই নয়, দেশের মাটিতে দাঁড়িয়েও দেখা গেল সেই দৃশ্য। ভারতের লাদাখের আকাশে দেখা গেল মেরুজ্যোতির আশ্চর্য রূপ, যা ক্যামেরাবন্দি করেছেন কেউ কেউ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সেই সব ছবি এবং ভিডিও। (Ladakh Aurora Spectacle)
মেরুজ্যোতি আসলে বিরল মহাজাগতিক ঘটনা। সূর্য থেকে নির্গত অভিযুক্ত কণা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সংস্পর্শে এলে মেরুজ্যোতি বা Aurora-র সৃষ্টি।সাধারণত সৌরঝড় থেকে নির্গত ইলেকট্রন এবং প্রোটন পৃথিবীর চৌম্বকীয় ক্ষেত্র এবং বায়ুমণ্ডলের সংস্পর্শে এলে, বায়ুমণ্ডলের উপরিস্তরের গ্যাসের সঙ্গে ঘর্ষণ হয়, তা থেকেই আগুনের ফুলকির মতো আলোর ছটা তৈরি হয়। একই সময়ে এমন লক্ষ লক্ষ ফুলকি তৈরি হলে, তা মেরুজ্যোতির আকার ধারণ করে। মেরুপ্রদেশ এবং পৃথিবীর উঁচু জায়গা থেকে এই মেরুজ্যোতি দেখা যায়। (Aurora in Ladakh Sky)
শুক্রবার আবারও পৃথিবীতে আঘাত হানে সৌরঝড়। আর তার ফলেই গভীর রাতে উত্তর গোলার্ধের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের আকাশে মেরুজ্যোতির আশ্চর্য রূপ চোখে পড়ে। সৌরঝড়ের প্রভাবে পৃথিবীর বুকে বিদ্যুৎ সংযোগ এবং টেলি কমিউনিকেশনে প্রভাব পড়তে পারে বলে সতর্কতা জারি হয়েছিল আগেই। তবে ততটাও তীব্র হয়ে নেমে আসেনি এই সৌরঝড়। ফলে কোনও বিঘ্ন ঘটেনি।
Aurora lights witnessed in India 🇮🇳
— News IADN (@NewsIADN) May 11, 2024
Aurora lights were seen in Hanle, Ladakh, providing insight on incredible geomagnetic storm
Stable Auroral Red Arcs (SAR arcs) captured from Hanle Dark Sky Reserve, UT Ladakh, on 11.05.24 at 0100 hrs. It is a very rare phenomenon.#IADN pic.twitter.com/ZfYvw22OaV
ওই সৌরঝড় থেকেই রাতের আকাশে মেরুজ্যোতির রূপ চোখে পড়ে। রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানির মতো দেশের মানুষও এই মরুজ্যোতি দেখতে পান। ভারতের লাদাখের হানলের আকাশে রক্তিমবর্ণ মেরুজ্যোতি দেখা যায়। গভীর রাতে পৃথিবীর আকাশে দুই রকমের মেরুজ্যোতি চোখে পড়ে, মেরুজ্যোতি বোরিয়ালিস এবং মেরুজ্যোতি অস্ট্রেলিস। মেরুজ্যোতি বোরিয়ালিস দেখা যায় উত্তর মেরুতে। মেরুজ্যোতি অস্ট্রেলিস দক্ষিণ মেরু থেকে দেখা যায়।
অস্ট্রেলিয়ার আকাশে যে মেরুজ্যোতি দেখা গিয়েছে, তার রং ছিল উজ্জ্বল লাল এবং বেগুনি। তাসমানিয়ায় নৃত্যরত মেরুজ্যোতি চোখে পড়েছে। সপ্তাহান্তে আবারও মেরুজ্যোতি দেখা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সূর্যের বুকে AR3664 নামের একটি গর্তের বিস্তার ক্রমশ বাড়ছে, তার জেরেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অভিযুক্ত সৌরকণা আছড়ে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে।