দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কয়লা পাচারকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর মোড় নিল। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করল দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্ট, সংবাদসংস্থা এএনআই (ANI )সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। জানা যাচ্ছে, অভিষেক-পত্নীর বিরুদ্ধে জামিন যোগ্য পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। কয়লা পাচারকাণ্ডের তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজিরা না দেওয়ায় পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
Delhi | Patiala House Court issues bailable warrant against TMC MP Abhishek Banerjee's wife Rujira Banerjee on ED application for allegedly refusing to join the probe in a money laundering case linked to an alleged coal scam in West Bengal. pic.twitter.com/lB0qtlj6Og
— ANI (@ANI) May 7, 2022
অভিষেক একবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নয়াদিল্লিতে ইডি দফতরে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু রুজিরা নোটিস পাওয়া সত্ত্বেও যাননি। সেই কারণেই ইডি পাতিয়ালা হাউজ কোর্টে মামলা করেছে। তার ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেফতারের জন্য অনুমতি দিয়েছে আদালত।
বস্তুত গোড়া থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে ইডি দফতরে হাজিরা দিতে তাঁর বা তাঁর স্ত্রীর কোনও অসুবিধা নেই। একশ বার ডাকলে একশ বারই তাঁরা যাবেন। কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে ইডির দিল্লির দফতরে তাঁদের তলব করা হচ্ছে। কলকাতায় তাঁদের বাসভবনের দশ কিলোমিটারের মধ্যে ইডি দফতর রয়েছে, সেখানে ডাকা যেতেই পারত। তা না করে স্রেফ হেনস্থার জন্য দিল্লি ডাকা হচ্ছে।
অভিষেকের কথায়, তাঁদের দুই সন্তান রয়েছে। ছেলে ছোট, তার বয়স মাত্র ২ বছর। তাকে বাড়িতে ছেড়ে কী করে একজন মায়ের পক্ষে বার বার দিল্লিতে যাওয়া সম্ভব?
ইডি এ ভাবে বারবার দিল্লিতে তলব করায় সেই নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে এর আগে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন অভিষেক ও রুজিরা। কিন্তু দিল্লি হাইকোর্ট তাঁদের আবেদন খারিজ করে দেয়। উত্তরপ্রদেশে ভোটের ফল ঘোষণার পরপরই কাকতালীয়ভাবে সেই রায় ঘোষণা করেছিল দিল্লি হাইকোর্ট। সেই দুই ঘটনার মধ্যে কোনও যোগ রয়েছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছিলেন অভিষেক। পরে এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টেও মামলা করেছেন অভিষেক ও রুজিরা। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে সেই মামলার এখনও কোনও নিষ্পত্তি হয়নি। সর্বোচ্চ আদালত ইডির কাজে কোনও স্থগিতাদেশও দেয়নি।
গত ২১ ও ২২ মার্চ দিল্লির ইডি দফতরে অভিষেক ও তাঁর স্ত্রীকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। অভিষেক সেখানে গিয়েছিলেন। তাঁকে ৮ ঘণ্টা ধরে জেরা করা হয়। কিন্তু রুজিরা যাননি। প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বর মাসেও একবার রুজিরাকে নোটিস পাঠানো হয়েছিল। তখন রুজিরা ইডিকে জানিয়েছিলেন, দিল্লিতে কোভিডের প্রকোপ কমেনি। এই পরিস্থিতিতে দিল্লি গেলে তাঁর জীবন সংশয় হতে পারে, তাই তিনি যাবেন না।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কয়লা পাচারকাণ্ডে অতীতে সংবাদমাধ্যমে অভিষেক বলেছিলেন, ”বাংলায় হেরে গিয়েছে তাই ওদের এত গাত্রদাহ। সেই থেকেই প্রতিহিংসার বশে এই ধরণের রাজনীতি করছে। এর শেষে দেখে ছাড়ব আমি। প্রয়োজন হলে উচ্চ আদালতে যাব। কিন্তু, যারা ক্ষমতায় বসে আছে, তাদের কাছে কিছুতেই মাথা নোয়াব না। একমাত্র মানুষের কাছেই মাথা নিচু করব… ইডি-সিবিআইয়ের ভয় দেখিয়ে যাঁদের কোণঠাসা করে রেখেছে, অভিষেক তাঁদের মতো নয়। আমি আত্মসমর্পণ করব না।”
দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেছিলেন, ”কেউ বলছে ১০০ কোটির স্ক্যাম, কেউ বলছে ১০০০ কোটি। আমি বলছি যদি ১০ পয়সারও দুর্নীতি থাকে প্রমাণ করে দেখান। আমি বলছি আমার পিছনে ইডি-সিবিআই লাগানোর দরকার নেই। সোজা ফাঁসির মঞ্চ গড়ে দিন। আমি মৃত্যুবরণ করব।
তিনি আরও বলেছিলেন, ”যে কোনও সর্বভারতীয় বিজেপি-র নেতা যদি আমার সঙ্গে মিনিট পাঁচেকের জন্যেও বসেন আমি সব তথ্য দেখিয়ে দেব, কেন্দ্রীয় সংস্থা কী ভাবে কাজ করেছে। আমি প্রমাণ করতে না পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেব। যারা টাওয়ালে মুড়ে টাকা নিয়েছেন সবই টিভিতে দেখা গিয়েছে। এদিকে চার্জশিটে তাঁদের নাম থাকে না।”