দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রোদ্দুর রায়কে গ্রেফতার করা হল। গোয়ায় ছিলেন তিনি। সেখান থেকেই তাঁর হাতে এদিন হাতকড়া পরিয়েছে পুলিশ।
গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে রোদ্দূরকে গোয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, এর পর ট্রানজিট রিমান্ডে গোয়ায় তোলা হবে। তার পর তাঁকে নিয়ে আসা হবে কলকাতায়।
রোদ্দুর রায়ের বিরুদ্ধে একাধিক এফআইআর দায়ের হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে অশ্লীল ইঙ্গিত করেছেন তিনি। অশ্লীলভাষায় আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। এই অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে রোদ্দুর রায়ের বিরুদ্ধে। তারপর পদক্ষেপ করল পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গায়ক রূপঙ্কর এবং অকালপ্রয়াত কেকে-কে নিয়ে রোদ্দূর (তিনি নিজের নামের এই বানানই লেখেন। ‘রোদ্দূর’। ‘রোদ্দুর’ নয়) সম্প্রতি একটি ফেসবুক লাইভ করেন। সেখানে তিনি রূপঙ্করের পাশাপাশিই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করেন। কটূক্তি করেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম-সহ কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন সম্পর্কেও। ওই ফেসবুক লাইভের বক্তব্য নিয়েই তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয় গত শনিবার।
রোদ্দুর রায় একজন ভ্লগার। সোশ্যাল মিডিয়ায় বরাবরই তিনি ঠোঁটকাটা। অশ্লীল কথাবার্তাও বলেই থাকেন। তাঁকে যাঁরা ফলো করেন তাঁরা জানেন রোদ্দুর রায়ের মুখে কোনও লাগাম নেই। বিতর্কের সূত্রপাত কিছুদিন আগে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন তাঁর সাহিত্য সাধনার জন্য বাংলা আকাদেমি সম্মান লাভ করেছিলেন, তখন অনেকের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করেছিলেন রোদ্দুর রায়ও। কিন্তু তা করতে গিয়ে শালীনতার মাত্রা অতিক্রম করেন। নাম না করেই এমন কুরুচিকর ভাষায় তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছিলেন যে তার নিন্দা করেছিলেন অনেকেই।
এরপর রোদ্দুর রায়ের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেন তৃণমূল কর্মীরা। তাতেও না দমে কুরুচিকর আক্রমণ চালিয়েই যাচ্ছিলেন রোদ্দুর রায়। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি তাঁর নিশানায় চলে আসেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁকে উদ্দেশ্য করেও একইরকম মন্তব্য করেন তিনি। আবার এফআইআর হয়।
পুলিশের কাছে তৃণমূলের মুখপাত্র ঋজুর দায়ের-করা অভিযোগে বলা হয়েছে, রোদ্দূর সাম্প্রতিককালে নেটমাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ও অভিষেক সম্পর্কে কুরুচিকর ভাষা ব্যবহার করেছেন। পাশাপাশি, আপত্তিকর ভাষায় আক্রমণ করেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ, কলকাতার পুলিশ কমিশনার-সহ কলকাতা ও রাজ্যের পুলিশ এবং প্রশাসনকেও।
যে বিষয়টি নিয়ে রোদ্দূরের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিকতম অভিযোগ, সেটি তিনি করেছিলেন একটি ফেসবুক লাইভে। গায়ক রূপঙ্কর বাগচি এবং অকালপ্রয়াত গায়ক কেকে সংক্রান্ত বিতর্ক এবং বিতন্ডার প্রেক্ষিতে। কয়েক মিনিটের ওই ফেসবুক লাইভে রোদ্দূর মুখ্যমন্ত্রী মমতা সম্পর্কে কিছু অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করেছিলেন বলে অভিযোগ।
তৃণমূল মুখপাত্র ঋজুর অভিযোগে দাবি করা হয়েছে, রোদ্দূর নিয়মিত ভাবে এই কাজ করে থাকেন। আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করে তিনি রাজ্যকেও অপমান করেন। নেটমাধ্যমে ঘৃণা ছড়ানোর দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ চেয়ে পুলিশের কাছে আর্জি জানিয়েছেন অভিযোগকারী।
এর আগেও রোদ্দূরের বিরুদ্ধে লালবাজার-সহ বিভিন্ন থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। সে বারও তাঁর বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে কুরুচিকর ভাষা প্রয়োগের অভিযোগ ছিল। শনিবার আবার একই অভিযোগে নতুন করে পুলিশের কাছে এফআইআর হয় রোদ্দূরের বিরুদ্ধে।