Ration Distribution Case:বালু পাঠিয়েছেন দু’হাজার কোটি! “ডাকু”-র ব্যবসা ছড়িয়ে দুবাইতেও, এবার শঙ্কর পুত্র শুভ আঢ্যের তথ্য – সূত্র জুড়ছে ইডি

0
341

দেশের সময় কলকাতা : গত ৫ জানুয়ারি রেশন মামলার তদন্তের সূত্রে বনগাঁয় তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য ওরফে ডাকু-র বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। প্রায় ১৭ ঘণ্টা তল্লাশির পর শঙ্করকে গ্রেফতার করা হয়। সে সময় বনগাঁয় স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছিল ইডিকে। পরে তারা আদালতে জানায়, ধৃত জ্যোতিপ্রিয়ের কাছ থেকে একটি চিঠি তাদের হাতে এসেছে। তাতে শঙ্করের নাম ছিল। টাকার লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য ওই চিঠিতে লেখা ছিল বলে জানিয়েছে ইডি।

ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে , রেশন ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে ধৃত বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের ব্যবসা রয়েছে দুবাইতেও। ওই ব্যবসার সঙ্গে শুধু শঙ্কর নন, তাঁর পরিবারের সদস্যেরাও যুক্ত রয়েছেন। শঙ্করের পুত্র শুভ আঢ্য দুবাইয়ের ব্যবসায় সক্রিয় বলে জানতে পেরেছে ইডি।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, দুবাইয়ে শঙ্করদের একটি সংস্থা আছে। তবে সেই সংস্থা কী কাজ করে, কী ধরনের ব্যবসা রয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সেই সংক্রান্ত খোঁজখবর নিচ্ছে ইডি। সংস্থাটির লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে কি না, এখনও ওই সংস্থা সক্রিয় কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে।

শঙ্করকে গ্রেফতারির পর আদালতে ইডি জানিয়েছিল, ৯০টির বেশি ফরেক্স বা বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের সংস্থা রয়েছে শঙ্কর এবং তাঁর পরিবারের। ওই সংস্থাগুলির মাধ্যমে ২০ হাজার কোটি টাকা তিনি বিদেশে লেনদেন করেছেন। রেশন ‘দুর্নীতি’র সঙ্গে ওই টাকার সম্পর্ক থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে ইডি। সে বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ জোগাড়ের কাজ চলছে। ইডি আরও জানিয়েছে, ওই ২০ হাজার কোটির মধ্যে অন্তত ৯ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা রেশনকাণ্ডে ধৃত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। জেরার মুখে তিনি তা স্বীকার করেছেন বলেও দাবি ইডির।

ইডি জানতে পেরেছে, দুবাইয়ে জ্যোতিপ্রিয়ের অন্তত দু’হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। ওই পরিমাণ টাকা জ্যোতিপ্রিয় কখনও সরাসরি কখনও বা কোনও বাহকের মাধ্যমে দুবাইতে পাঠিয়েছেন। শঙ্করের সংস্থার সঙ্গে ওই টাকার যোগ আছে কি না, তা দেখা হচ্ছে। এই বিষয়ে আরও তথ্য জোগাড় করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। প্রয়োজনে দুবাইয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে ইডির।

রেশন বন্টন দুর্নীতির মূল অভিযুক্ত বাকিবুর রহমানের হাত ধরেই মধ‌্যপ্রাচ্যে পা রাখা। বিদেশে বাকিবুরের ব‌্যবসায়েও লগ্নি করেছিলেন শংকর আঢ‌্য । এমনই অভিযোগ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের । রেশন বন্টন দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা কীভাবে বাকিবুর ও শংকর আঢ‌্যর সংস্থায় বিনিয়োগ হয়েছিল, সেই তথ‌্য জানার চেষ্টা করছেন ইডির গোয়েন্দারা।

ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে, দুবাই-সহ মধ‌্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন শহরে বাকিবুর রহমানের যোগাযোগ বহুদিনের। সেই যোগাযোগের সূত্র ধরেই সেসব জায়গায় ব‌্যবসা শুরু করেন বাকিবুর রহমান। বাকিবুরের স্ত্রী প্রথমে ইডি আধিকারিকদের জানান তাঁর বিদেশে ব্যবসার কথা। সেই সূত্র ধরে তদন্তকারীরা জানতে পারেন যে, দুবাইয়ে রীতিমতো গাড়ি ও বাইকের ব‌্যবসা করতেন বাকিবুর! রেশন বন্টন দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা বাকিবুরের গাড়ি সংস্থায় বিনিয়োগ করা হয় বলে অভিযোগ। ক্রমে ওই দুর্নীতির বিপুল টাকা দিয়ে বাকিবুর দুবাইয়ে পানশালার ব‌্যবসা খোলার পরিকল্পনা করেন বলে দাবি বাকিবুরের। তার আগেই ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়ে যান।

যদিও গোয়েন্দাদের মতে, বাকিবুর গ্রেপ্তার হলেও বিদেশে তাঁর হোটেল ও পানশালার ব‌্যবসা ঘুরপথে চালু রয়েছে। ইডি জানতে পেরেছে, বাকিবুর রহমানই বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম‌্যান শঙ্কর আঢ‌্যকে বিদেশের ব‌্যবসার রাস্তা দেখান। বাকিবুরের হাত ধরেই শংকর দুবাইয়ে একটি সংস্থা খোলেন। ট্রেডিংয়ের সঙ্গে যুক্ত ওই সংস্থাটি শংকর আঢ‌্যর ছেলে শুভর নামে।

ইডির দাবি, রেশন বন্টন দুর্নীতির টাকা বিদেশে পাচার হয়ে লগ্নি হয়েছে বাকিবুর ও শংকরের সংস্থায়। সেই সূত্র ধরে বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান নিজের সংস্থার মাধ‌্যমেও বাকিবুরের সংস্থায় টাকা লগ্নি করেছিল কি না, সেই ব‌্যাপারে ইডি তদন্ত চালাচ্ছে।

ফোরেক্স সংস্থার মাধ‌্যমে শংকর আঢ‌্য কোটি কোটি ভারতীয় টাকা, ডলার-সহ বৈদেশিক মুদ্রায় পরিণত করে বিদেশে পাচার করেছেন, এই অভিযোগ আগেই উঠেছে। সেসব সংস্থায় তল্লাশিও চালিয়েছে ইডি। বাকিবুরের ব‌্যবসায় প্রয়োজন হয় বিপুল পরিমাণ ডলার ও বৈদেশিক মুদ্রার। ইডির গোয়েন্দাদের মতে, শংকরকে দিয়ে সংস্থা খুলিয়ে বাকিবুরই বিদেশি মুদ্রা নিজের সংস্থায় লগ্নি করান। সেই ক্ষেত্রে রেশন বন্টন দুর্নীতির টাকা শংকরের সংস্থার মাধ‌্যমেই বাকিবুরের সংস্থায় পৌঁছে যেত বলেই ইডির কাছে খবর।

আবার বাকিবুরের গাড়ি সংস্থার লাভের অংশ শংকর আঢ‌্য পেতেন, এমন সম্ভাবনাও গোয়েন্দারা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। এবার বাকিবুর রহমানের পানশালার ব‌্যবসার উপরও নজর দিচ্ছে ইডি। বাকিবুর গ্রেপ্তার হওয়ার পরও শংকর আঢ‌্য ও তাঁর ছেলের মাধ‌্যমে ওই পানশালার ব‌্যবসায় টাকা লগ্নি হয়েছিল কি না, সেই তথ‌্যও জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইডি।

Previous articleRepublic Day 2024 Live Updates:কর্তব্যপথে এলেন প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতি,কলকাতায় রেড রোডে উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চলছে অনুষ্ঠান
Next articleRED ROAD:৭৫তম প্রজাতন্ত্র দিবসে রেড রোডের কুচকাওয়াজে সম্প্রীতির বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here