বাংলায় শ্রীচৈতন্যদেবের রাস উৎসব পালনের কথা শোনা যায়। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের এবং গিরিশচন্দ্রের সময়ের পরবর্তীকালে বাংলায় রাস উৎসবের বহুল প্রচলন ঘটে। বৃন্দাবন, মথুরা, ওড়িশা, অসম, মনিপুর এবং পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় আড়ম্বরের সঙ্গে রাস উৎসব পালন করা হয়। রাধাকৃষ্ণের আরাধনা মূল বিষয় হলেও অঞ্চল ভেদে ভিন্ন ভিন্ন রীতিতে রাস উৎসব পালিত হয়।
রাস উৎসবকে ঘিরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন তৈরি হয় উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগর থানার চালকি গ্রামে। চালকি মাতৃমন্দির রাস উৎসব কমিটির উদ্যোগে গত ৫১ বছর ধরে এখানে রাস উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। দেখুন ভিডিও
এ বছরও মহা ধুমধামের সঙ্গে এই উৎসব শুরু হয়েছে। উৎসব কমিটির সহ-সভাপতি সৌমেন দত্ত জানান, এখানে পুজো পরিচালনার জন্য যে কমিটি রয়েছে সেখানে হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষও কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন। ফলে এখানে এই উৎসবে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ সমান ভাবে অংশ নিয়ে তা পালন করেন।
এবারে ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় বনগাঁ থেকে শোভাযাত্রা সহকারে গ্রামের মন্দির পর্যন্ত পায়ে হেঁটে বিগ্রহ নিয়ে আসা হয়। শোভাযাত্রায় আদিবাসী নৃত্য, খোল করতাল, মহিলা ঢাকি, নানা সাজে মডেল রাখা হয়েছিল। ২৭ নভেম্বর থেকে উৎসবের মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। মন্দির প্রাঙ্গণে মঞ্চ বেঁধে সেখানে প্রতি সন্ধ্যায় প্রথমে ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
প্রতিদিনই লোক আঙ্গিকের নানা অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হচ্ছে। উৎসব উপলক্ষে রাস্তার দু’ধার দিয়ে মেলা বসেছে। বহু রাত পর্যন্ত মানুষ প্রতিমা দর্শন এবং মেলা পরিক্রমা করছেন।
অন্ন ভোগের আয়োজন করা হয়। চালকি সহ আশপাশের গ্রামের হাজার হাজার ভক্ত প্রসাদ গ্রহণ করেন।