- দেশের সময়: পঞ্চায়েত রাজ সম্মেলনের মঞ্চ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার থেকে কোলাঘাটে শুরু হয়েছে বিজেপির পঞ্চায়েতি রাজ সম্মেলন। দু’দিনের এই সম্মেলনের জন্য বাংলায় এসেছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা৷
কোলাঘাটের ওই সম্মেলনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেওয়া বক্তৃতায় বাংলায় গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ।
প্রধানমন্ত্রীর কথায়,“ভোটে জয়ের পরও তৃণমূল প্রাণঘাতী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। রক্ত নিয়ে হোলি খেলা শুরু করেছে।” তাঁর অভিযোগ, লুঠ করে পঞ্চায়েতের দখল নিয়েছে তৃণমূল। বিরোধীরা যাতে প্রার্থী দিতে না পারে তার জন্য একে তো তড়িঘড়ি ভোটের দিন ঘোষণা করেছে। তার পরেও যাঁরা মনোনয়ন পেশ করেছেন, তাঁদের ধমকি দিয়েছে, যাতে তা প্রত্যাহার করে নেন। ভোটের দিন ব্যালট লুঠ করেছে। গণনার দিন বিজেপির কর্মীদের কাউন্টিং সেন্টারে বসতে দেয়নি। সেখান থেকে টেনে বের করে দিয়েছে। এত অত্যাচারের পরেও বাংলায় মানুষের আশীর্বাদে বিজেপি বহু আসনে জিতেছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোঁচা দিতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যারা নিজেরা কথায় কথায় ভোট লুঠের অভিযোগ করত, যারা নিজেদের গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন বলে দাবি করত, সেই তৃণমূলের লোকেদেরই টিভির পর্দায় ব্যালট বাক্স নিয়ে পালাতে দেখা গিয়েছে”। তাঁর কথায়, যাঁরা ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁদের মুখোশ এই পঞ্চায়েত ভোটে খুলে দিয়েছে বিজেপি।
বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। পঞ্চায়েত ভোটে বাংলার বহু বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেখা মেলেনি। তবে লোকসভা নির্বাচনে যে তা হবে না, এদিন নিজের বক্তব্যে সেটাও স্পষ্ট করেছেন মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে। গুন্ডাদের বরাত দেওয়া হয়েছিল বাংলার পঞ্চায়েত ভোটে। লোকসভা নির্বাচনে সেটা হবে না।”
রাজ্যের নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় ইতিমধ্যে জেলবন্দি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্য সহ আরও অনেকে। সেই দুর্নীতির প্রসঙ্গেই কাটমানি ইস্যু টেনে মোদীর খোঁচা, “বিজেপি কিংবা সাধারণ মানুষের কথা ছেড়েই দিলাম, এরা নিজেদের দলের কর্মীদেরও ছাড়ে না, তাঁদের কাছ থেকেও কাটমানি খায়।”
প্রসঙ্গত, গত ৮ জুলাই বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়। ফলপ্রকাশ হয় গত ১২ জুলাই। পঞ্চায়েত ভোটের তিনটি স্তরেই একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রাখে তৃণমূল কংগ্রেস। সবক’টি জেলা পরিষদই দখলে রাখে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু, এই ভোটপর্ব রক্তাক্ত হয় বাংলা। প্রায় ৫০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় ভোটপর্বে। মনোনয়ন জমা দেওয়া থেকে শুরু করে মনোনয়ন প্রত্যাহার, ভোটের দিন এবং ফলাফলের দিন ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের একাধিক মানুষের লাশ পড়ে। শাসক এবং বিরোধীরা একে অপরকে নিশানা করেন এই ভোট হিংসা নিয়ে।