ছোট্ট ছোট্ট হাত। আদুরে আঙুল। সেই হাতেই মাটি নিয়ে খেলতে বসেছিল ওরা। আর খেলার ছলেই ওরা কেউ বানাল ফুলদানি। কেউবা বানাল কাপ-প্লেট, হাতি-ঘোড়া। ওদের হাতের কাজের মধ্যে দিয়েই ফুটে উঠল শিল্পীসত্ত্বা। স্বপ্ন দেখালেন বিশিষ্ট ভাস্কর্য শিল্পী সৌমেন কর(Soumer Kar 3S Studio)। দেখুন ভিডিও
উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙার দক্ষিণ পাড়ায় থ্রি এস স্টুডিওতে আয়োজন করা হয়েছে ওই কর্মশালার। ২৫ ডিসেম্বর শুরু হওয়া তিনদিনের ওই কর্মশালায় অংশ নিয়েছে ৪২ জনেরও বেশি শিশু, কিশোর কিশোরী। আট থেকে আঠারো বছরের ওই ছেলেমেয়েদের জন্য তিনটে দিন যেন বাঁধনছাড়া উল্লাসে মেতে ওঠার পালা।
সারাদিন মাটি মাখা, মাটি দিয়ে মন যা চায়, তা বানানো। বাবা-মায়ের শাসন নেই, পড়তে বসার জন্য চোখ রাঙানি নেই। মাটিকে সঙ্গী করেই শিশুরা মাতল তাদের নিজস্ব ভুবনে। আর তারই মাঝে একমুঠো স্বপ্ন ফেরি করলেন ভাস্কর্য শিল্পী সৌমেন। শেখালেন কীভাবে মাটি দিয়ে বানাতে হয় খেলনা, ঘর সাজানোর জিনিস। নিছকই খেলার ছলে কীভাবে শিল্প সৃষ্টি করা যায় তিনদিন ধরে তারই পাঠ দিলেন সৌমেন। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী খুদে শিল্পীদের মেডেল, শংসাপত্র দিয়ে উৎসাহিত করা হয়।
সৌমেন বাবুর কথায়, মানুষের শিল্পসৃষ্টির সঙ্গে মাটির সম্পর্ক সেই নব্য-প্রস্তর যুগ থেকে প্রবাহিত হয়ে এসেছে। মাটিই মানুষকে ধারণ করে, বাঁচিয়ে রাখে, ফসল ফলায়। মাটির স্পর্শে তাই জেগে ওঠে মানুষের শিল্পীসত্তা। মৃত্তিকা-ভিত্তিক শিল্পের নানা প্রকারভেদ আছে।
যেমন টেরাকোটা, পোর্সেলেন, আর্থেনওয়্যার, স্টোনওয়্যার, সেরামিকস প্রভৃতি। এবার এই কর্মশালার ১২বছর সম্পূর্ণ হলো৷
শিল্পীদের ভাবনা ও প্রকাশভঙ্গির অভিনবত্বে তা হয়ে ওঠে অনন্য। নিছক বর্ণনাত্মক ও সাধারণ অবয়বী রূপকল্প মাটির হাত ধরার উন্নীত হতে পারে শিল্পের পর্যায়ে। যে স্টুডিওতে ডানা মেলে সৌমেনের ভাবনারা, সেখানেই যেন এই কর্মশালার হাত ধরে রামধনু রং ছড়িয়ে গেল ভবিষ্যতের শিল্পীরা।