দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ অক্সিজেন সাপোর্ট ছাড়াই বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট আরোহণ করলেন হুগলির চন্দননগরের মেয়ে পিয়ালি বসাক।

আট হাজারি যে কোনও পর্বতশৃঙ্গ চড়তেই সাপ্লিমেন্টারি অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। এমনকী প্রাণদায়ী বায়ুর সাহায্য নেন শেরপারাও। কিন্তু সে সব ছাড়াই কামাল করলেন পিয়ালি।

রবিবার সকাল সকাল তাঁর এভারেস্ট শিখরে চড়ার খবর আসতেই খুশির হাওয়া চন্দননগরের বসাক বাড়িতে।  গর্বের বিষয় এই যে ভারতীয় মহিলা হিসেবে পিয়ালিই প্রথম এই কৃতিত্ব অর্জন করলেন। এর আগে বাচেন্দ্রী পাল, ছন্দা গায়েনরা এভারেস্ট জয় করলেও সঙ্গে ছিল সাপ্লিমেন্টারি অক্সিজেন।

সাফল্যের রাস্তা আদৌ সহজ ছিল না। অর্থের অভাবে আগেও আটকে গেছিল পৃথিবীর শিখরে ওঠার স্বপ্ন। এবারও একই সমস্যা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু সব বাধা পেরিয়ে ২২ মে স্বপ্নের মাউন্ট এভারেস্টে উঠলেন পিয়ালি। 

শুধু পাহাড় চড়াই নয়, খুব ভাল আঁকতেও পারেন তিনি। মার্শাল আর্টসে ব্ল্যাকবেল্ট, দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্বও করেছেন। বরফে স্কি করারও দুরন্ত দক্ষতা, এ রাজ্যের প্রথম মহিলা স্কিয়ার তিনিই।

২০০০ সালের ১ আগস্ট অমরনাথ যাত্রায় গিয়ে খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন ভয়াবহ জঙ্গিহানা। কেদারনাথে গিয়ে মেঘভাঙা বৃষ্টি, তুষারধস থেকে জীবন হাতে করে বেঁচে ফিরেছিলেন। আরও বহু তীর্থযাত্রীকেও বাঁচিয়েছিলেন সেই সঙ্গে। এইভাবেই যেন পাহাড়ের সঙ্গে আরও নিবিড় এক সম্পর্ক তৈরি করেছেন তিনি।

এভারেস্ট অভিযানের খরচ প্রচুর। পিয়ালি হিসেব করে দেখেছিলেন, সবটা আয়োজন করতে তাঁর প্রয়োজন ৩৫ লক্ষ টাকা। কিন্তু নিজের সঞ্চয় এবং বাড়ি বন্ধক রেখেও খুব বেশি হলে ১৮ লক্ষ জোগাড় করতে পেরেছিলেন। কিন্তু পুরো টাকা না দিলে এভারেস্ট অভিযানের অনুমতি দিত না নেপাল সরকার। বাধ্য হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহায্যের আবেদন করেন পিয়ালি। ক্রাউড ফান্ডিং করে জোগাড় হয় পাঁচ লক্ষ টাকা।

সৌভাগ্যবশত আরও ১১ লক্ষ টাকা নিয়ে এগিয়ে আসে পিয়ালির এজেন্সিই। এরপরেই অনুমতি জোগাড় করে বেরিয়ে পড়েন বাংলার মেয়ে। বাকিটা ইতিহাস।    

এবার বাকি লোৎসে শৃঙ্গ। সব ঠিক থাকলে আজই সামিট ক্যাম্প থেকে সেই শৃঙ্গের পথে রওনা দেবেন পিয়ালী (), কৃত্রিম অক্সিজেনের সাপোর্ট ছাড়াই। সেক্ষেত্রে কাল সকালেই আসতে পারে আরও একটা সুখবর। আর তা যদি আসে, ভারতীয় পর্বতারোহণের আঙিনায় এক নয়া মাইলফলক যোগ হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here