দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ একেই হয়তো বলে শিরে সংক্রান্তি! আরও খারাপ হল পাক অর্থনীতির অবস্থা। মুদ্রার বিপুল মূল্যহ্রাস চমকে দেওয়ার মতোই। দেশের ঋণ গিয়ে পৌঁছেছে ৬০ লক্ষ কোটি পাকিস্তানি রুপিতে ৷ ঋণভারে জর্জরিত পাকিস্তান এখন শ্রীলঙ্কার মতোই দেউলিয়া হতে চলেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডারও তলানিতে।

বুধবার পাকিস্তানে ১ ডলারের মূল্য ছিল ২৩০ পাকিস্তানি রুপি। ২৪ ঘণ্টা পরেই সেই দাম নেমে হয় ২৫৫ টাকা। অর্থাৎ হাজার রুপিতে ৪ ডলারও পাওয়া যাবে না। আইএমএফ যে শর্ত দিয়েছে তা হল রুপির দামের উপরে পাকিস্তান কোনও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। তা ছেড়ে দিতে হবে বাজারের হাতে। ফলে দুরন্ত গতিতে কমতে শুরু করেছে পাকিস্তানি রুপির দাম।

সম্প্রতি পাকিস্তানের স্টেট ব্যাঙ্ক দেশের ঋণ সংক্রান্ত তথ্য সামনে এনেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, গত এক অর্থবর্ষে পাকিস্তানের সরকারি ঋণ ছিল ৯ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি পাকিস্তানি রুপি। কিন্তু ২০২২ সালের জুনের শেষে এই ঋণ রেকর্ড মাত্রা ছুঁয়ে হয় ৪৯ লক্ষ ২০ হাজার কোটি।
এসবের মধ্যেই একটানা বিদ্যুতের সংকটে আঁধারে ডুবে রয়েছে পাকিস্তান। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ারও প্রায় শেষের দিকে। ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মতো পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রা ভান্ডারের দেখভাল করে ওই দেশের প্রধান রাষ্ট্রীয় ব্যাঙ্ক স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তান (SBP)। জানা গেছে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তানের কাছে মাত্র ৪.৩৪৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এই অর্থে মাত্র ৩ সপ্তাহের খরচ চলবে পাকিস্তানের।

আচমকা এই আর্থিক সঙ্কটের জন্য মূলত দায়ী ব্যাঙ্কের বাণিজ্যিক ঋণ পরিশোধ। সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর দুটি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ার পরে প্রায় ১০০ কোটি ডলার শোধ করতে হয় পাকিস্তানকে। এছাড়া গত বছর জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত পাকিস্তানের রেমিট্যান্স অনেক কমেছে। রেমিট্যান্স দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চয়ের একটি প্রধান উৎস। তাই রেমিট্যান্স হ্রাসও পাকিস্তানের অর্থনীতির জন্য একটি বড় ধাক্কা বলা যেতে পারে। দেশের বেশিরভাগ রেমিট্যান্স এখন চোরা পথে আসছে বলে মনে করা পচ্ছে। সব মিলিয়ে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রা সম্পদ সারা বছর জুড়েই ক্রমাগত কমেছে বহিরাগত ঋণ শোধ করতে গিয়ে এবং আমদানির খরচের জন্য।

এর ফলে দেশে খাদ্যপণ্যের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। রফতানি প্রায় তলানিতে। আমদানির উপরেই নির্ভর করতে হচ্ছে শেহবাজ শরিফ সরকারকে। সেখানেই বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার। দেশের কোথাও কোথাও এক বস্তা আটার দাম ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here