দেশের সময় ওযেবডেস্কঃ দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান। অবশেষে সে এল…। লক্ষ্মীবারের মেঘলা দুপুরে শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে জন্ম নিল অভিনেত্রী-সাংসদ নুসরত জাহানের সন্তান৷ পুত্র সন্তানের জন্ম দিলেন অভিনেত্রী। হাসপাতাল সূত্রে খবর, নবজাতক এবং মা আপাতত ভাল আছেন। সন্তান জন্ম নেওয়ার সময় তাঁর ইচ্ছে অনুসারে যশ ছিলেন তাঁর সঙ্গে। তাঁর সবচেয়ে কাছের মানুষ হিসেবে নুসরতের মা হওয়ার পুরো পর্যায়েই যশ তাঁর সঙ্গী ছিলেন। খেয়াল রেখেছিলেন নুসরতের। কিন্তু নিজে এই বিষয়ে কোনও দিন মুখ খোলেননি।

বুধবার রাতে যশের হাত ধরেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন নুসরত, এদিনও সকাল থেকেই হাসপাতাল চত্বরে দেখা গেল যশ দাশগুপ্তকে। হাজির ছিলেন ইন্ডাস্ট্রির হাই প্রোফাইলরাও। নিরাপত্তা ছিল বেশ আঁটসাঁট।

গতকাল নুসরতের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার নেপথ্যে নিঃশব্দে ঘটে গিয়েছিল বেশ কিছু রিয়েল লাইফ চিত্রনাট্য। যুক্ত হয়েছিল সাসপেন্স, উত্তেজনা আরও কত কী…নুসরত যে বুধবার হাসপাতালে ভর্তি হবেন এ কথা আগে থেকেই জানা গিয়েছিল। কিন্তু কখন, সে প্রশ্নই উঠে আসছিল বার বার। সন্ধে নামতেই নুসরতের নীল বাতির গাড়িতে নুসরতকে নিয়েই তাঁর বাড়ি ছাড়তে দেখা যায় যশকে। যশই চালাচ্ছিলেন গাড়িটি।

বেশ কিছুক্ষণ নিজেরা সময় কাটিয়ে নুসরতকে নিয়ে যশ চলে যান তাঁর বাড়িতে। সেখানে যশের মা থাকেন। শুভকাজে যাওয়ার আগে একবার সাক্ষাৎ? রাত গভীর হতেই যশকে সঙ্গী করে নুসরতের গাড়ি ছুটল শহরের এক নামজাদা বেসরকারি হাসপাতালে। পেছনে আরও এক গাড়ি। হাসপাতালে পৌঁছতেই নুসরতের গাড়ি যখন ঘিরে ধরেন ফোটোশিকারিরা, অপেক্ষা করেন তাঁর একঝলক ফ্রেমবন্দী করার ঠিক তখনই অদ্ভুত এক কাণ্ড… ওই কালো কাচের গাড়ি থেকে নামলেন না নুসরত, নামলেন না যশও। তাহলে? অনুমান করা হয়েছিল পাপারাৎজির থেকে নিজেদের আড়াল করতেই হাসপাতালের ব্যাক ডোর দিয়ে অন্য এক গাড়ি করে হাজির হয়েছিলেন ওঁরা।

কেন এত লুকোছাপা? কেন এত আড়াল… বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে নুসরত ও তাঁর মাতৃত্ব নিয়ে যেন ঝড় বয়ে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। অভিনেত্রীকে জড়িয়ে কুৎসিত মন্তব্য থেকে শুরু করে, সন্তানের পিতৃপরিচয়… ট্রোলিং যেন থেমেও থামছিল না।

ট্রোলিংকে সঙ্গে করেই এ দিন পৃথিবীকে প্রথম বার চেনার সুযোগ পেল নুসরতের ওই একরত্তি। পিতৃ পরিচয়? নুসরতের সন্তান– এই পরিচয়েই শিরোনাম দখন করল সেই ক্ষুদে।
নুসরতের মা হওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসতেই নিখিল জৈন জানিয়েছিলেন সন্তানের বাবা তিনি নন। অন্য দিকে, নুসরত এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন নিখিলের সঙ্গে তুরস্কতে যে ‘বিয়ে’ হয়েছিল তাঁর তা ভারতে ‘বৈধ’ নয় কারণ আইনত তাঁদের বিয়ে হয়নি। তাঁরা লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন।

স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, জন-প্রতিনিধি হিসেবে লোকসভার বায়োপ্রোফাইলে তাহলে ‘বিবাহিত’ এবং স্বামীর নামের জায়গায় নিখিল জৈনের উল্লেখ করলেন কেন? সংসদ ভবনে ‘আমি নুসরত জাহান রুহি জৈন’ বলে সাংসদ হিসাবে নুসরত জাহানের শপথবাক্য পাঠের যে মুহূর্তের ভিডিয়ো টুইটে শেয়ার করেছেন বিজেপির অমিত মালব্য, তাতে আরও জোরদার হয়েছে এই প্রশ্ন: জন-প্রতিনিধি হিসেবে নুসরত তাঁর ম্যারিটাল স্টেটাস সম্পর্কে যে তথ্য পেশ করেছেন, তা আদৌ নীতিগত বলে বিবেচিত হতে পারে কি না।

অভিনেতা যশ দাশগুপ্তের সঙ্গে নুসরতের বিশেষ সম্পর্কের কারণেই নাকি নিখিলের সঙ্গে তাঁর দাম্পত্যে ভাঙন ধরে, এ জল্পনাও বিভিন্ন মহলে তৈরি হয়। গোটা সময়টা কার্যত চুপই ছিলেন ওঁরা। তবে বিগত বেশ কিছু দিন ধরে খুল্লামখুল্লা ডেটের ছবি যেন বুঝিয়ে দিচ্ছিল অনেক কিছু। আগামী দিনে নুসরতের সন্তান কোন পরিচয়ে বেড়ে উঠবে সে হিসেব আজ তোলা থাক। সবে এসেছে সে, দুনিয়া চেনার এখনও ঢের দেরী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here