দেশের সময় , বাগদা: উত্তর ২৪ পরগনায় শাসক দলে ভাঙন ধরাল বামেরা। বাগদায় তৃণমূলে বিরাট ভাঙন। বাগদার রনঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান রমেন বাগ তার দলবল নিয়ে তৃণমূল ছেড়ে সিপিএমে ( CPIM) যোগদান করেন৷
বুধবার সন্ধ্যায় সিপিএমের তরফে একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দলত্যাগীদের হাতে লাল ঝান্ডা তুলে দেওয়া হয়। পতাকা তুলে নিয়ে রমেন বাগ বলেন, “আজ রনঘাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ৫০ টি পরিবারের শতাধিক মানুষ আজ তৃণমূল ছেড়ে সিপিএমে যোগদান করল। তৃণমূলের পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির কারণেই আমরা তৃণমূল ছাড়লাম৷”
দলত্যাগী পঞ্চায়েত সদস্যের কথায়, এত দুর্নীতি দেখা যায় না। শিক্ষা ব্যবস্থায় বিশাল দুর্নীতি হয়েছে। একাধিক বিধায়ক, সাংসদরা দুর্নীতিতে ধরা পড়ছে। একের পর এক দুর্নীতি দেখেই গ্রামের একাধিক পরিবার তৃণমূল ছেড়ে সিপিএমে যোগদানের কথা চিন্তাভাবনা করেছেন। আগামী দিনে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামেদের ভিত শক্ত করা এবং পরবর্তী কালে রাজ্যে সিপিএম শাসন ফিরিয়ে আনাই তাঁদের লক্ষ্য বলে জানান।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সব দলই নিজেদের ঘর গুছিয়ে নিতে ব্যস্ত। একাধিক দলবদলের ঘটনা ঘটে চলেছে প্রতি নিয়ত। উত্তর ২৪ পরগনা জুড়ে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং একাংশের বিজেপির আধিপত্য রয়েছে এই জেলা থেকে। তারমধ্যে গ্রামের একাধিক পরিবার লাল ঝান্ডা তুলে নেওয়ার আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে স্থানীয় বাম নেতৃত্ব।
সিপিএমের বাগদা এরিয়া কমিটির নেত্রী কবিতা হালদার জানান, বর্তমান রাজ্য সরকার দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে। তাঁর কথায়, ” তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক, সাংসদরা, নেতৃবৃন্দরা প্রতিযোগিতায় নেমেছেন কে কতো বাড়ি দেখাতে পারে, কত বড় গাড়ি, কতো সম্পত্তি দেখাতে পারে। গরীব খেতে খাওয়া মানুষের জন্য কেউ নেই।”
উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় এর আগেও একাধিক জায়গায় তৃণমূল থেকে সিপিএমে যোগদানের হিড়িক দেখা গিয়েছে। চলতি মাসেই বসিরহাটের হাসনাবাদ ব্লকের ভেবিয়ায় সিপিআইএমের কর্মীসভায় ঘাসফুল শিবির থেকে বাম শিবিরে যোগ দেন প্রায় ৬০ জন। লাল পতাকা হাতে তুলে নেন তৃণমূল পরিচালিত ভেবিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান আব্দুল হাকিম গাজি সহ প্রায় ৬০ জন তৃণমূল কর্মী।
এর আগেও বারাসাতে তৃণমূলের বুথ সভাপতি-সহ প্রায় চারশো জন নেতা, কর্মী সিপিএমে যোগদান করে। বারাসাত ২ নম্বর ব্লকের শাসনে পুলিশি প্রায় ১২ বছর পর চালু করা হয় সিপিএমের পার্টি অফিস। একের পর তৃণমূল ছেড়ে সিপিএমে যোগদান আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে যথেষ্ট প্রভাব ফেলবে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলে।