দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রাত তখন ন’টা হবে। নন্দীগ্রাম বাস স্ট্যান্ডের আগে এক চার রাস্তার মোড়ে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন গাড়ির মাথায় উঠে মাইক ধরলেন তখনও চারদিকে কাতারে – কাতারে লোক। স্বতঃস্ফূর্ত স্লোগান উঠছে ঘন ঘন! আবহ পুরোদস্তুর নাটকীয়। বৃহস্পতিবার সেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিষেক বললেন, “এ তো ট্রেলার মাত্র। বাকি সিনেমা তিন মাস পর হবে। আমি এক কথার ছেলে..।”

তৃণমূলের যে নবজোয়ার যাত্রা শুরু করেছেন অভিষেক তা বুধবার খেজুরি হয়ে বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রামে ঢুকেছে। চন্ডীপুর থেকে নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত কুড়ি কিলোমিটার রাস্তা এদিন হেঁটেছেন অভিষেক। সঙ্গে কয়েক হাজার তৃণমূল কর্মী সমর্থক। তার পর রাতে সভা করেছেন নন্দীগ্রামে।

বৃহস্পতিবার অভিষেকের এই পদযাত্রার দিকে তাকিয়ে ছিলেন বাংলার রাজনীতির অনেকেই। তৃণমূল জমানার প্রথম দশ বছরে এই নন্দীগ্রাম শুভেন্দু অধিকারীর গড় বলে পরিচিত ছিল। একুশের ভোটে দল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়ে এই নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ২ হাজারেও কম ভোটে পরাস্ত করেছেন শুভেন্দু।

বৃহস্পতিবার সেই নন্দীগ্রামে ঢুকে যেন নতুন করে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন অভিষেক। দৃশ্যত উজ্জীবিত তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশে বলেছেন, সামনের ভোটে এই গদ্দারকে ৫০ হাজার ভোটে হারাতেই হবে। আপনারা যেভাবে আজ সাহস দেখিয়েছেন, ভোটে সেই সাহস দেখাতে হবে।

একুশের ভোটের পর থেকেই নন্দীগ্রামে সংঘাতের আবহ রয়েছে। বিজেপি-তৃণমূলের মধ্যে পারস্পরিক ঝগড়া অশান্তির ঘটনা আকছার ঘটছে। অভিষেক এদিন বলেন, রোজ সকালে উঠে ইডি-সিবিআই নিয়ে বড় বড় কথা বলছে। আরে বিজেপি তো দিল্লিতে আর এক বছর। তার পর কী হবে? তাঁর কথায়, “এখানে কারও গায়ে যদি হাত পড়ে, খবর দেবেন, আমি নিজে চলে আসব।”

তবে তিন মাস পর অভিষেক যে বাকি সিনেমার কথা বলেছেন, তা আদতে কী?

নন্দীগ্রাম বিধানসভা তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। বর্তমানে সেখানে তৃণমূলের সাংসদ হলেন শুভেন্দুর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী। বিধানসভা ভোটের ফলাফল অনুযায়ী তমলুকে খুব সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, অভিষেকের কথা থেকেই স্পষ্ট লোকসভা ভোটে তমলুক আসনে শুভেন্দুদের কঠিন লড়াইয়ে ফেলতে চাইছে তৃণমূল। সম্ভবত তারই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। তিন মাস পর সেই লড়াইয়ের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়ে যেতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here